
বাংলাদেশে নতুন করে অন্তত ৮০ হাজার রোহিঙ্গা প্রবেশ করেছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার ১৮ ডিসেম্বর মিশরের কায়রোতে মালয়েশিয়ার হায়ার এডুকেশন মন্ত্রী ড. জামব্রি আবদুল কাদিরের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা জানান।
কায়রোর রেজিস হোটেলে গতকাল বুধবার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে তাঁরা মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশিদের নিয়োগ, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সম্পর্ক সম্প্রসারণ, রোহিঙ্গা সংকট নিরসন এবং আসিয়ানে বাংলাদেশের যোগদানের সম্ভাবনাসহ দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, তিনি রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের প্রস্তাব করেছেন এবং তিনি আশা করেন, মালয়েশিয়া এ পদক্ষেপে সমর্থন দেবে। তিনি বলেন, রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর দীর্ঘ কয়েক শতাব্দীর বাসভূমি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতার পর সাম্প্রতিক মাসগুলোয় নতুন করে ৮০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তিনি আরও বলেন, তিনি এ সহিংসতা-জর্জরিত অঞ্চলকে সহায়তার প্রয়াসে রাখাইন রাজ্যের বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের জন্য জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে একটি নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠার বিষয়েও তাঁর সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
বৈঠকে মালয়েশিয়ার মন্ত্রী রোহিঙ্গা সংকট নিরসন এবং আসিয়ানের সেক্টরাল ডায়ালগ পার্টনার হিসেবে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিসহ বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর দেশ বাংলাদেশকে সহায়তা অব্যাহত রাখবে বলে জানান। তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপনের অপেক্ষায় রয়েছি।’
প্রধান উপদেষ্টা ডি৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গতকাল স্থানীয় সময় বেলা ১১টায় মিসরের রাজধানী কায়রোয় পৌঁছান। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, মিসরের পাবলিক বিজনেস সেক্টরের মন্ত্রী মোহাম্মদ শিমি কায়রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান। পরে ড. ইউনূস মন্ত্রীর সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন। এর আগে আমিরাত এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টা ২০ মিনিটে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
প্রধান উপদেষ্টা ১৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় ডি৮ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কায়রোর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন। ‘তরুণদের বিনিয়োগ ও এসএমইকে সহায়তা করা: আগামীর অর্থনীতিকে রূপদান’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে এই শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এ বৈঠকে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি কর্মীদের নিয়োগ, উচ্চশিক্ষায় সহযোগিতা, রোহিঙ্গা সংকট এবং আসিয়ানে বাংলাদেশের সম্ভাব্য যোগদান বিষয়ক আলোচনা।
এ সময় ড. জামব্রি আবদুল কাদির বলেন, রোহিঙ্গা সংকটসহ অন্যান্য বিষয়ে কুয়ালালামপুর বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে। তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের দিকে তাকিয়ে আছি।