
সিদ্দিকুর রহমান ইমন-নরসিংদী :
নরসিংদীর ভূমি অফিসগুলো দুর্নীতি ও অনিয়মের আতুর ঘরে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে সদর উপজেলার কাঠালিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস যেন ঘুষ–দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। নামজারি থেকে শুরু করে প্রতিটি কাজেই সেবা গ্রহীতাদের গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত টাকা। অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের খুশি করতে পারলেই পাওয়া যায় সেবা, অন্যথায় বছরের পর বছর ঘুরতে হয় সাধারণ মানুষকে।
সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন ভূমি কর্মকর্তা মনিরা বেগম ও তার সহযোগীরা। এশিয়ান টেলিভিশনের সাংবাদিক মনিরা বেগমের সাথে এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি জানান, কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া তিনি ক্যামেরার সামনে কথা বলতে পারবেন না এবং যা কিছু করেন তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই করেন।
অভিযোগ রয়েছে, নাম খারিজ, হোল্ডিংসহ জমি সংক্রান্ত প্রায় সব কাজেই সেবা গ্রহীতাদেরকে টেবিল টেবিল ঘুরে ঘুষ দিতে হয়। সরকারি নিয়মকে উপেক্ষা করে অনিয়মকেই নিয়ম বানিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলছে এই ভূমি অফিসের কার্যক্রম।
সরকারি নীতিমালায় নামজারির ফি নির্ধারিত রয়েছে সর্বসাকূল্যে ১১৭০ টাকা। অথচ কাঠালিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে আদায় করা হচ্ছে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে কেস ফাইলিং বাবদ ৫০০ টাকা, ডিসিআর বাবদ ১২০০ টাকা অতিরিক্ত নেওয়া হয়। ফলে মোট খরচ দাঁড়াচ্ছে প্রায় ৩ হাজার টাকা, আবার অনেক ক্ষেত্রেই তা ৫ হাজার পর্যন্ত গড়ায় বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
ভোক্তভোগী ইফতে আছান উল্লাহ জানান, ভূমি কর্মকর্তা মনিরা বেগমের দুর্নীতি ও হয়রানির প্রতিবাদে তিনি ইতোমধ্যেই নরসিংদী জেলা প্রশাসক, ইউএনও অফিস এবং নরসিংদী রিপোর্টার্স ক্লাবের বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
এখানেই শেষ নয়—ভূমি অফিসগুলোকে ঘিরে গড়ে উঠেছে শক্তিশালী দালালচক্র। তাদের ছাড়া কোন কাজই হয় না। ফলে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
অন্যদিকে নরসিংদী সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিনথিয়া হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।