
স্টাফ রিপোর্টার :
রাজধানীর উত্তরা দিয়াবাড়ি এলাকায় অবস্থিত (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ) বিআরটিএ অফিসে তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে সাংবাদিক সুমন খানের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, অফিসের ভেতরের কিছু দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা ও প্রভাবশালী দালালচক্রের নেতৃত্বে এ হামলা সংঘটিত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মোটরযান পরিদর্শক কাউসার আলম, উচ্চমান সহকারী আশিকুর রহমান ও সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) বশির উদ্দিন আহমেদের নাম এই ঘটনায় বারবার উঠে এসেছে। অভিযোগ রয়েছে, এদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদেই দালালরা বহুদিন ধরে অফিসে ঘুষবাণিজ্য ও অবৈধ কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।
গতকাল বিকেলে সাংবাদিক সুমন খান অফিস প্রাঙ্গণে ঘুষ ও অনিয়মের প্রমাণ সংগ্রহ করছিলেন। এ সময় স্থানীয় দালাল জাকির, রনি, বাপ্পি, রতন, জীবন ,শাহিনসহ আরও অন্তত ১০ জন দুর্বৃত্ত তার ওপর চড়াও হয়। তারা প্রথমে অশালীন ভাষায় গালাগাল করে, পরে শারীরিকভাবে আক্রমণের চেষ্টা চালায় পরে প্রাণভয়ে সাংবাদিক সুমন খান সেখান থেকে সরে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দালালচক্রের সদস্যরা ভয় দেখাতে চেয়েছিল যাতে কেউ তাদের দুর্নীতি বা অর্থ বাণিজ্যের ভিডিও বা তথ্য সংগ্রহ করতে না পারে।
দালালচক্রের রাজত্ব: “বিআরটিএ এখন টাকার বাজার”
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উত্তরা বিআরটিএ অফিস ঘিরে একটি প্রভাবশালী চক্র সক্রিয় রয়েছে, যারা লাইসেন্স নবায়ন, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ও ফিটনেস সনদসহ নানা কাজের নামে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করছে।
অভিযোগ রয়েছে, অফিসের ভেতরের কিছু কর্মকর্তা তাদের “অর্থলাভের অংশীদার” হিসেবে কাজ করছে দালাল দিয়ে। এতে করে সরকারি সেবা ব্যবস্থায় জনআস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সাংবাদিক সমাজের ক্ষোভ ও দাবি: বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছে, “তথ্য সংগ্রহ সাংবাদিকের সাংবিধানিক অধিকার। দালালচক্র ও দুর্নীতিবাজদের ভয় দেখিয়ে সত্য গোপন করা যাবে না।”তারা দ্রুত হামলাকারীদের গ্রেফতার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন।
প্রশ্ন উঠছে: প্রশাসন নীরব কেন?
ঘটনার পরও স্থানীয় প্রশাসনের কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না থাকায় প্রশ্ন উঠেছে দালালচক্র কি প্রশাসনের ছত্রছায়ায় এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে যে, সাংবাদিকরাও এখন নিরাপদ নন?
উত্তরা বিআরটিএ অফিসে সাংবাদিক সুমন খানের ওপর হামলা শুধু একজন সাংবাদিকের ওপর নয়, সত্য প্রকাশের অধিকার ও স্বাধীন সাংবাদিকতার উপর আঘাত। এ ঘটনায় গোটা মিডিয়া অঙ্গন এবং সাধারণ জনগণ ক্ষোভে ফুঁসছে। এখন সময় এসেছে দালালচক্র ও দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের। সাংবাদিক লাঞ্ছিতোর বিষয়ে উত্তরা বিআরটিএ এর (এডি) মোরসালিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের কে বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নেই অবগত হলাম এবং অভিযোগ পেলে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।