
বিশেষ প্রতিবেদন :
এই জোসনা তেমনি মায়াবী, লীলাবতী জোসনা। হিমু কল্পনায় ময়ূরাক্ষী নদে ঘুরে বেড়াত, জোসনা ঘুরতে গিয়েছিল তিস্তায়, ত্রিস্রোতা তিস্তায়!
কিছু কিছু মুহুর্ত আছে, মেয়েরা মুচকি হাসে। মুচকি হাসলেও সেই হাসিতে প্রচণ্ড উৎফুল্লতা কাজ করে। এই মুহুর্তটা সবচেয়ে ভালো ফুটে আসে, মেয়েরা যখন হাতে মেহেদী দেয়, তখন।
হাতে মেহেদী দেয়ার সময় উৎফুল্ল হবার কি আছে, আমি বুঝতাম না। তবে, আমার ধারণা, হাতে মেহেদী দেয়ার সময় মেয়েরা কল্পনায় ডুবে থাকে। হাতে মেহেদীর রেখা বাড়তে থাকে, বাড়তে থাকে তাদের কল্পনার গভীরতা! কল্পনায় চলে আসে স্বামী, প্রেমিকের মুখ। মেহেদী দেয়া সুন্দর হলে নিশ্চয়ই সে খুশি হবে। সেই খুশি আরো বাড়াতে কেউ কেউ লিখে নাম। অমুক+তমুক লিখেও কেউ কেউ স্বামীকে / প্রেমিককে বোঝাতে চায়,
❝ এই অঙ্গে,
এই পবিত্র মেহেদির রঙে আমি ঘোষণা দিচ্ছি,
এই হৃদয়ে শুধু তুমিই আছো সখা, আর কেউ নেই।❞
বাঙালি মেয়েরা মেহেদীকে পবিত্র হিসেবে মান্য করে। এতোটাই পবিত্র যে, পায়ে মেহেদী দিতে চায় না অনেকে। এই পবিত্র রঙকে পায়ে জায়গা দিবে কীভাবে? যে রঙ নারীকে সাজায়, সুন্দর করে, ভালোবাসা প্রকাশ করে, সেই রঙকে পায়ে দেয়া যায়?
জোসনার কথা বলি, কিছুদিন হলো বিয়ে হয়েছে। স্বামীর নাম জাহিদ। ভেকু গাড়ি চালায় সে। তো, নতুন বউয়ের নানান আবদার থাকে। জোসনাও আবদার করে বসলো, স্বামীর সঙ্গে থাকবে সে।
বউ তো বিয়ের পর স্বামীর সাথেই থাকতে চাইবে। এ আবার আবদার হয় কীভাবে? এ তো স্বাভাবিক ঘটনা, বিয়ের পর স্বামী স্ত্রী একসাথে সংসার করবে।
উঁহু, জোসনার স্বামীর সাথে থাকতে চাওয়া শুধু আবদার হয়নি, মস্তবড় অপরাধ হয়েছে। সেই অপরাধের মাশুল দিতে হয়েছে জোসনাকে জীবন দিয়ে!
জাহিদ জোসনাকে বলেছে ঘুরতে নিয়ে যাবে তিস্তা নদীর মহিপুর ব্রিজে। জোসনা স্বামীর সাথে ঘুরতে যাবার জন্য সেজেছে, হাতে মেহেদী দিয়েছে। পবিত্র রঙ মেহেদী দিয়ে লিখেছে, ❝ I Love you Jahid❞।
আমি কল্পনায় দেখি, ❝I Love you Jahid❞ লিখতে গিয়ে জোসনা মুচকি হাসছে। স্বামী জাহিদের কথা ভাবছে। পবিত্র রঙ অঙ্গে মেখে ঘোষণা করছে, ❝ জাহিদ, পৃথিবীতে কোটি পুরুষের মাঝে আমি শুধু তোমাকেই ভালোবাসি।❞
ওদিকে জাহিদ পরিকল্পনা করছে, ❝ প্রথমে হাতটা বাঁধতে হবে। হাঁত বাঁধতে কিছুটা কষ্ট হবে হয়তো। কিন্তু হাতটা বাঁধতে পারলেই কাজ শেষ। তারপর একটা ধাক্কা দিলেই নিচে পড়ে যাবে। ব্যস,