
মোহাম্মদ ওয়াহেদ আলী-লালমনিরহাট :
রংপুরের পীরগাছা রেলওয়ে স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত পদ্মরাগ কমিউটার ট্রেন উদ্ধারের পর রংপুর-লালমনিরহাট-সান্তাহার-ঢাকা রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। বুধবার রাত আড়াইটার দিকে লাইনচ্যুত ট্রেনের ছয়টি বগির উদ্ধারকাজ শেষ হয়।
পীরগাছা রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার জেনারুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, মঙ্গলবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে স্টেশন থেকে প্রায় ৪০০ মিটার দূরে পদ্মরাগ কমিউটার ট্রেনের ৬টি বগি লাইনচ্যুত হয়। লাইন বদলের সময় লাইনপ্লেট ভেঙে গেলে বগি লাইনচ্যুত হয়। স্টেশনের কাছে ট্রেনটির গতি কম হওয়ায় তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ট্রেনটি সান্তাহার থেকে লালমনিরহাট যাচ্ছিল।
তিনি আরও বলেন, ‘দুটি উদ্ধারকারী রিলিফ ট্রেন একসাথে উদ্ধারকাজে অংশ নেয়। বুধবার ভোর থেকে রংপুর-লালমনিরহাট-সান্তাহার-ঢাকা রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
লালমনিরহাট থেকে যাওয়া উদ্ধারকারী রিলিফ ট্রেনের পরিচালক রবিউল ইসলাম জানান, বৃষ্টির কারণে উদ্ধারকাজ দেরি হয়েছে। লাইনচ্যুত ট্রেনটি উদ্ধারের পর ক্ষতিগ্রস্ত রেল লাইন ও লাইনপ্লেট মেরামত করা হয়েছে।
পীরগাছায় ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ায় আন্তঃনগর ট্রেন ‘বুড়িমারী এক্সপ্রেস’ ‘রংপুর এক্সপ্রেস’ মেইল ট্রেন ‘দোলনচাঁপা’ ‘করতোয়া’ ও বেশ কয়েকটি লোকাল ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়। ট্রেনগুলো গাইবান্ধা ও বামনডাঙ্গা স্টেশনে এসে অপেক্ষা করে। পীরগাছায় লাইনচ্যুত ট্রেন উদ্ধার করার পর এসব ট্রেন ভোরবেলা গন্তব্যে পৌঁছায়।
বুড়িমারী এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী মিজানুর রহমান জানান, ‘মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত ট্রেনের সিটে বসেছিলাম। ট্রেনটি বামনডাঙ্গা স্টেশনে অপেক্ষা করছিল। এসময় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। কিন্তু নিরুপায় ছিলাম। ভোরে লালমনিরহাট স্টেশনে আসি।’
একই ট্রেনের যাত্রী আবু তালেব জানান, ‘আমার সাথে স্ত্রী ও দুই সন্তান ছিল। সবাইকে নিয়ে চরম ভোগান্তি ও দুশ্চিন্তায় কাটিয়েছি প্রায় ৯ ঘণ্টা। রাতে খাবারের কষ্ট হয়েছে।’
লালমনিরহাট রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ নুরনবী জানান, ‘লালমনিরহাট-রংপুর-সান্তাহার-ঢাকা রুটে প্রতিদিন ২৪ জোড়া আন্তঃনগর, মেইল ও লোকাল ট্রেন চলাচল করে। পীরগাছায় ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ায় সবগুলো ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। বুধবার ভোর থেকে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।’
লালমনিরহাট রেলওয়ে বিভাগীয় ম্যানেজার (ডিআরএম) আবু হেনা মোস্তফা আলম জানান, ট্রেন লাইনচ্যুতের ঘটনা একটি দুর্ঘটনা। এ কারণে শুধু ট্রেন যাত্রী নয় রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। ট্রেনের যে শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে তা ঠিক করতে একটু সময় লাগবে। তবে এখন ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক আছে।’