
নাজমুল আলম মুন্না-সাতক্ষীরা :
চাকরির আগের বিয়ে গোপন করে পুলিশের চাকরি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে সাতক্ষীরা পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের মধ্য কাটিয়া (মাঠপাড়া) এলাকার মুক্তিযোদ্ধা মৃত আবু ছালেকের ছেলে কনস্টেবল মোঃ সোহেল (বাবু) এর বিরুদ্ধে। তিনি বর্তমানে যশোর জেলা পুলিশে নিয়োজিত রয়েছেন। গোপন সূত্রে যানাযায় সোহেল নিজের বিয়ে এবং প্রকৃত বয়স গোপন করে কনস্টেবল পদে চাকরির আবেদন করলে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি হয়ে যায়।
কারন সোহেল যখন চাকরির আবেদন করে তখন ওর বয়স প্রায় ২২/২৩ হবে বলে জানান এলাকার কয়েকজন বাসিন্দারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তারা অভিযোগ করে বলেন চাকরির আগে বৌ বাচ্চা থাকার পরেও পুলিশের চাকরি পাওয়া কি আইন সম্মত? নাকি টাকার বিনিময়ে এই চাকরি পেল সোহেল?
পুলিশের চাকরির জন্য কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতা প্রয়োজন, যার মধ্যে বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা, শারীরিক যোগ্যতা এবং বৈবাহিক অবস্থা অন্তর্ভুক্ত। সাধারণত, পুলিশের কনস্টেবলসহ সকল পদের জন্য “অবিবাহিত” প্রার্থীর প্রয়োজন হয়, তবে অন্যান্য পদে এই শর্ত নাও থাকতে পারে। পুলিশের কনস্টেবল পদের জন্য ১৮ থেকে ২০ বছর বয়স পর্যন্ত আবেদন করা যায়। তবে, অন্যান্য পদের জন্য বয়সসীমা ভিন্ন হতে পারে। শিক্ষাগত যোগ্যতা (এসএসসি) বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।
এছাড়া উচ্চতা, বুকের মাপ, এবং শারীরিক গঠন ইত্যাদি বিষয়ে নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকাসহ প্রার্থীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। যদি কেউ পুলিশের চাকরির জন্য আবেদন করতে চান, তবে তাকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট পদের জন্য নির্ধারিত যোগ্যতায় উত্তীর্ণ হয়ে সকল যোগ্যতা পূরণ করতে হবে এটা যেমন ঠিক তেমনি পুলিশ কনস্টেবলের চাকরির ক্ষেত্রে যদি কোন প্রার্থী অবিবাহিতের পরিবর্তে বিবাহিত হবার পরে চাকরি পান তাহলে যদি কখনো সেই কনস্টেবলের পূর্বে বিবাহের খবর প্রকাশ হয় তাহলে কি তা চাকরি টিকে থাকবে নাকি চাকরিচ্যুত হবেন?
এমনি এক পুলিশ কনস্টেবল এর সন্ধান পাওয়া গেছে যিনি বিবাহিত হবার পরে পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি পেয়েছেন? তবে জানার বিষয় এমন কি কোটা আছে যে, পিতা মুক্তিযোদ্ধা এবং ভাই উপসচিব বা সচিব হলে তাদের জন্য বিবাহিত হবার পরেও পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি পায়? এই সোহেল শুধু বিবাহিত ছিলেন তা কিন্তু নয় রীতিমতো একটি কন্যা সন্তান জন্ম হওয়ার পরেও পেয়েছেন পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি! তার স্ত্রীর নাম ঝরনা। একাধিক এলাকাবাসী বলেন তার সন্তানের জন্ম সনদ এবং সোহেলের প্রাইমারি স্কুলের ভর্তি রেজিস্ট্রার খতিয়ে দেখলে বা বিভাগীয় তদন্তে আসল তথ্য বেরিয়ে আসবে বলে জানান।
পুলিশের চাকরির জন্য কিছু সাধারণ সমস্যা যা অযোগ্যতা তৈরি করতে পারে তার মধ্যে রয়েছে শারীরিক সমস্যা (যেমন, উচ্চতা, বুকের মাপ, দৃষ্টিশক্তি), বয়সসীমা অতিক্রম করা এবং চারিত্রিক ত্রুটি, এছাড়াও কোনো গুরুতর ফৌজদারি অপরাধের রেকর্ড থাকলে বা মাদকাসক্তির ইতিহাস থাকলে পুলিশে চাকরি পাওয়া কঠিন হতে পারে। এবিষয়ে সোহেলের মামাতো ভগ্নিপতি ফারুক রহমান বলেন ঘটনা সত্যি তবে কারোর পেটে লাথি পারতে নেই।
সোহেল চাকরির আবেদন করার আগে বিয়ের কাবিন চেঞ্জকরে বা নতুনভাবে তৈরি করে চাকরিতে জয়েন্ট করিছে। এটা কাউকে বলার দরকার নেই। তখন আওয়ামীলীগ আমলে ওর বাপ মুক্তিযোদ্ধা ছিল সহজে চাকরি হয়ে গেছে। এছাড়া সংশ্লিষ্টদের দুর্বল ভেরিফিকেশনই এজন্য দায়ী বলে সচেতনমহল মনে করেন। জানাগেছে চাকরি পাওয়ার আগে ঘটনাটি জানাজানির খবর ধামাচাপা দিতে এবিষয়ে নামিদামি পত্রিকার এক সাংবাদিককে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ম্যানেজ করা হয়েছিল।
সাংবাদিক পরিচয়ে শুধুমাত্র চাকরির বিষয়ে কথা বলতেই তিনি এবিষয়টি এড়িয়ে যান এবং একাধিক সাংবাদিক দিয়ে এই প্রতিবেদককে থামানোর চেস্টা করেন। বিষয়টি সন্দেহজনক বলে মনে হয়েছে।
এরকম প্রতারণামূলক চাকরির বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন চাকরি পাওয়ার আগে বিয়ে থাকলে চাকরি কেউ পাবেনা এছাড়া বিয়ের কথা গোপন করলে চাকরি থাকবেনা এবং বিধি মোতাবেক শাস্তি হবে।