
মনিরুজ্জামান মনির :
ঘটনাবলি: বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট, ২০২৫) সকালে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার একাটুনা ইউনিয়নের তালতলা (রায়শ্রী) এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) একটি বিশেষ চেকপোস্ট পরিচালনা করে। এ সময় সিলেট থেকে ফেঞ্চুগঞ্জ-রাজনগর হয়ে মৌলভীবাজারে প্রবেশকারী একটি ট্রাক থেকে ৭৩ লক্ষ ৪৮ হাজার ৮২০ টাকা মূল্যের ভারতীয় চোরাই প্রসাধনী পণ্য উদ্ধার করা হয় । ট্রাকচালক মোঃ লালন মিয়া (২৮) কে গ্রেফতার করা হয়, যার বাড়ি রাজনগর উপজেলার মুটুকপুর গ্রামে।
অভিযানের নেতৃত্ব ও উদ্ধারকৃত পণ্য:
জেলা গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্য্যের নেতৃত্বে বিশেষ টিম অভিযান চালায়। ট্রাক তল্লাশিতে নিম্নোক্ত পণ্যগুলো পাওয়া যায়:
* Skinbrite Cream- ৫,১৮৪ পিস
* Skinshine Cream- ৬০০ পিস
* Elosone-HT Cream- ৪,৮০০ পিস
* Derobin Ointment- ৪,৫০০ পিস
* Melnor Cream- ৫,৭৬০ পিস
* Clop-G Cream- ২৩,৬৬০ পিস
* Patanjali Aloe Vera Ge- ২৮৮ পিস *মোট* **৪০,৭৯২ পিস |
এছাড়াও উদ্ধার করা হয় ৩০০ কেজি খালি কার্টুন ও একটি নীল রঙের তেরপাল , যা দিয়ে পণ্য ঢেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছিল ।
চোরাচালানের পদ্ধতি ও সংশ্লিষ্ট নেটওয়ার্ক: প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লালন মিয়া স্বীকার করে যে, সে পলাতক আসামী রুবেল মিয়ার সাথে যুক্ত। এই চক্র সিলেটের চালিবন্দর এলাকা থেকে ভারতীয় পণ্য সংগ্রহ করে খালি কার্টুন ও তেরপাল দিয়ে কভার করে বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করত। লালনের ভাষ্যমতে, এটি রুবেল মিয়ার ভাঙারি আড়ালের ব্যবসার অংশ। ট্রাকচালকের কাছে পণ্য পরিবহনের কোনো বৈধ কাগজপত্র ছিল না ।
আইনি পদক্ষেপ: গ্রেফতারকৃত লালন মিয়া, পলাতক রুবেল মিয়া ও অজ্ঞাতনামা ২-৩ জনের বিরুদ্ধে The Special Powers Act, 1974-এর 25-B ও 25-D ধারায় মৌলভীবাজার মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গোয়েন্দা শাখা সূত্রে জানানো হয়, চোরাচালান নেটওয়ার্কটি ভেঙে দেওয়ার জন্য তদন্ত চলছে ।
প্রাতিষ্ঠানিক বক্তব্য: জেলা গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্য্য নিশ্চিত করেন, “এটি একটি সংগঠিত চোরাচালান চক্র। আমরা পলাতক আসামীদের গ্রেফতার ও চোরাই পণ্যের উৎস শনাক্তে তদন্ত জোরদার করেছি।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, সীমান্ত এলাকায় গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হবে ।
প্রাসঙ্গিকতা: গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) সাধারণত গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এই ধরনের অভিযান পরিচালনা করে থাকে । এ ঘটনাটি সাম্প্রতিক সময়ে মাদক ও চোরাচালানবিরোধী অভিযানের ধারাবাহিকতায় উল্লেখযোগ্য, যা অন্যান্য জেলার অভিযানের মতোই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা বাহিনীর সক্ষমতা প্রদর্শন করে ।
চোরাই পণ্যের পরিমাণ ও মূল্যই প্রমাণ করে,সীমান্তে চোরাচালান প্রতিরোধে কঠোর নজরদারি জরুরি।