
নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকায় বিধ্বস্ত হওয়া প্রশিক্ষণ বিমানের নিহত পাইলট তৌকির ইসলাম সাগরের রাজশাহীর বাড়ির সামনে ভিড় করছেন প্রতিবেশী ও স্বজনেরা। স্বজনদের অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। আর তৌকিরের পরিবারের সদস্যদের বিকেলে রাজশাহী থেকে বিমানবাহিনীর উড়োহাজাজে করে ঢাকায় নেওয়া হয়েছে।
তৌকিরের পরিবার প্রায় ২৫ বছর ধরে রাজশাহী নগরের উপশহরে ভাড়া থাকেন। এখন যে বাসায় থাকেন, সেটির নাম ‘আশ্রয়’। এটি উপশহরের ৩ নম্বর সেক্টরের ২২৩ নম্বর বাসা। এ বাসায় তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম, মা সালেহা খাতুন ও বোন বৃষ্টি খাতুন থাকেন।
বাসার সামনে ছিলেন নিহত পাইলটের মামা রফিকুল ইসলাম। তিনি জানান, বিকেলে র্যাবের একটি গাড়ি এসে নিহত পাইলট তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম, মা সালেহা খাতুন, বোন বৃষ্টি খাতুন, বৃষ্টির স্বামী তুহিন ইসলাম ও মামা মোহাম্মদ আলীকে নিয়ে গেছে। বিকেলে রাজশাহীর হযরত শাহমখদুম (র.) বিমানবন্দর থেকে বিমানবাহিনীর একটি বিমানে তাঁদের ঢাকায় নেওয়া হয়েছে। তৌকিরের স্ত্রী ঢাকায় সরকারি কোয়ার্টারেই থাকেন।
রফিকুল বলেন, ‘এ রকম ভালো ছেলে আমি আর দেখিনি। সেই ছেলেকে এভাবে হারিয়ে ফেলব বুঝিনি।’

স্বজনেরা জানান, তৌকিরের বাবা তহুরুল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা। তিনি আমদানি-রপ্তানির ব্যবসা করেন। প্রায় ২৫ বছর আগে থেকেই তিনি রাজশাহীতে বসবাস করেন।
তৌকির রাজশাহীর নিউ গভ. ল্যাবরেটরি স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনার পর পাবনা ক্যাডেট কলেজে ৩৪তম ব্যাচে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন। ২০১৬ সালে তিনি ক্যাডেট কলেজে উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর বিমানবাহিনীতে যোগ দেন। বছরখানেক আগে তিনি বিয়ে করেন। স্ত্রী ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার। তৌকিরেরা দুই ভাই-বোন। ছোট বোন বৃষ্টি খাতুন রাজশাহীর বেসরকারি ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

তৌকিরের মৃত্যুর খবর শুনে বাড়ির সামনে এসেছেন পাবনা ক্যাডেট কলেজের তাঁর প্রশিক্ষক মোস্তাক আহমেদ। তিনি বলেন, ‘সে খুব মেধাবী ছিল। ভীষণ মিশুক ও শান্ত ছেলে ছিল। তার কথা এখন খুব মনে পড়ছে। সে ছোটদের স্নেহ ও বড়দের সম্মান করতে জানত।’
তৌকির ইসলাম রাজশাহীর সপুরায় গেল বছর থেকে তিনতলা একটি বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেছিলেন। বাড়িটির কাজ এখনও চলমান। সেই বাড়িতে আর ওঠা হলো না তাঁর।