
ক্রাইম রিপোর্টার :
মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে যাত্রাবিরতি করা পিকনিকে’আসা এম,ভি ক্যাপটেন লঞ্চে নারীদের প্রকাশ্যে মারধরের ঘটনা ঘটেছে।যাত্রীবাহী লঞ্চের কেবিনে ‘পিকনিকে’ আসা নারীদের প্রকাশ্যে মারধর -লুটপাটের অভিযোগে ১ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পরবর্তীতে শনিবার (১০ মে) খ্রিষ্টাব্দ মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত নেহাল আহমেদ জিহাদ(২৫)কে গ্রেফতার করে। সে দক্ষিণ ইসলামপুরের মনির হোসেনের ছেলে।
ঘটনার সময় ওই যাত্রীদের কাছ থেকে টাকাপয়সা ও মোবাইল ফোন লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।এ ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।এর পরই পুলিশ তৎপর হয় এবং একজনকে গ্রেফতার করে।
শুক্রবার(৯ মে)রাত ৮ টার দিকে লঞ্চটি মুন্সীগঞ্জ ঘাটে নোঙর করে।রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ভাঙচুরের খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান থানা পুলিশ, নৌপুলিশ,সেনাবাহিনী ও বিআইডব্লিউটি এর লোকজন ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি শান্ত করে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন জানান,লঞ্চটি ঢাকা-লালমোহন রুটের প্রায় ৩০০ যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলো।লঞ্চটির দ্বিতীয় তলার বেশ কয়েকটি কেবিনে ২০-২৫ জন কিশোর-যুবক ও ২ জন অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী ছিলেন। তারা ঢাকা থেকে ওই লঞ্চের কেবিন ভাড়া করে সারাদিন পিকনিক করে রাতে বাড়ি ফিরছিলেন।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়,সাদা রঙের পোষাক পরিহিত আনুমানিক ১৫-১৭ বছর বয়সী এক নারীকে লঞ্চের একেবারে সামনের অংশে উঠিয়ে লাঠি দিয়ে বেপরোয়াভাবে পেটাচ্ছেন এক যুবক।এসময় ৫০-৬০ জন বিভিন্ন বয়সী পুরুষ সেই দৃশ্য তাদের মোবাইল ফোনে ধারণ করে উল্লাস করছেন ও বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া এ ঘটনার একাধিক ভিডিওতে আরও দেখা যায়, থেমে থাকা লঞ্চের দ্বিতীয় তলায় উঠে গণহারে অপ্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ যাত্রীদের পেটাচ্ছেন ১০-১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল। এসময় তারা লঞ্চের কেবিনগুলোতে তল্লাশি চালাচ্ছেন এবং দরজা ভাঙার চেষ্টা করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নৌভ্রমণে বের হয়ে আক্রমণের শিকার ‘এমভি ক্যাপ্টেন’ নামের লঞ্চটিতে পিকনিকের উদ্দেশ্যে আসা অন্তত ৬ জন যাত্রী মারধরে আহত হন।এর মধ্যে দুইজন অপ্রাপ্তবয়স্ক নারী।তবে, তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।ধারণা করা হচ্ছে,তারা সবাই ঢাকার কামরাঙিরচর এলাকার বাসিন্দা।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি)সাইফুল আলম জানান,সন্ধ্যার নাস্তা কেনার জন্য ৮ থেকে ১০ জন যাত্রী লঞ্চ থেকে পল্টুনে নামে।সেখানে থাকা স্থানীয়রা মাদকসেবী সন্দেহ করে তাদের পিছু নিয়ে লঞ্চে উঠার চেষ্টা করলে লঞ্চের ম্যানেজার মো:শফিক তাদের প্রবেশে বাঁধা দেয়।এতে উত্তেজিত লোকজন জড়ো হয়ে লঞ্চে ঢুকে ভাঙচুর,লুট ও যাত্রীদের মারপিট করে।
তিনি আরো জানান একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ভুক্তভোগীরা পরবর্তীতে মারধর ও লুটের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মুন্সীগঞ্জ থানায় এজাহার দায়ের এবং তৎপ্রেক্ষিতে নিয়মিত মামলা রুজুর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও পলাতক অভিযুক্তদের শনাক্ত ও গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ফিরোজ কবির বলেন,‘দ্রুত এ বিষয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।ইতিমধ্যে ঘটনার সাথে জড়িত একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।