
নীলফামারী প্রতিনিধি.
যদি অন্তরে আলো থাকে, সততার আলো থাকে, তবে তার বিরুদ্ধে হাজার অভিযোগ করেও তার সেফ এক্সিটের দরকার পড়বে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির বিএনপির সিনিয়ন যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) দুপুরে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের বাহাগিলি ইউনিয়নের দুরাকুঠি পাগলাপাড়া গ্রামে গরু ছাড়াই দীর্ঘ ত্রিশ বছর ধরে ঘানি টানা প্রবীন দম্পতি মোস্তাকিন-সকিনাকে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’ এর পক্ষ থেকে দুইটি রিক্সাভ্যান ও গরু কেনার জন্য নগদ অর্থ বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আজকে সেফ এক্সিটের কথা যিনি বলছেন তিনিও সরকারের একজন উপদেষ্টা ছিলেন। চিন্তা করে বলতে হবে, কার কথা বলছে। যদি কোন ব্যক্তি অন্যায় করে থাকে। সে যদি দুর্নীতি নয় মহা দুর্নীতি করে থাকে, টাকা পাচার করে থাকে অথবা হত্যাকান্ডের সাথে যুক্ত থাকে। তার সেফ এক্সিট দরকার। আপনি সরকারের উপদেষ্টা ছিলেন আপনি বলেন, কারা কারা এই ধরনের অন্যায় অপরাধ করেছে? তাদের সেফ এক্সিটের কথা তখন তারাই চিন্তা করবে, জাতি চিন্তা করবে।”
রুহুল কবির রিজভী বলেন,“বেগম খালেদা জিয়ার সেভ এক্সিট এর দরকার পড়ে নি। কারণ তিনি অন্তরের আলোতে চলেছেন, তার বিরুদ্ধে অনেক মিথ্যা মামলা অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু এই দেশের মৃত্তিকা, মাটি, আলো, জল, বাতাস, পানি, বায়ুর মধ্যেই তিনি থাকতে চেয়েছেন। তার সেভ এক্সিটের দরকার পড়েনি।”
তিনি আরও বলেন,“আজকে কেন সেভ এক্সিটের কথা বলা হচ্ছে । কোথায় কি হয়েছে। অনেক সমালোচনা আছে। আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির তেমন উন্নতি হচ্ছে না। তবে উপদেষ্টারা চেষ্টা করছেন। আমি এটাও বলব না যে তারা চেষ্টা করছেন না। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ। সেই জিডিপি ক্রমাগত ভাবে কমছে, কর্মসংস্থান হচ্ছে না। আপনার নতুন নতুন শিল্প কলকারখানা বন্ধ হচ্ছে এটা ঠিক। কিন্তু আবার অর্থনৈতিক শৃঙ্খলাও অনেকটা নিয়ে এসেছেন। শেখ হাসিনার আমলের মতো শুধু টাকা পাচার আর বড় বড় প্রজেক্ট দেখিয়ে মেট্রোরেল, তারপর ফ্লাইওভার, উড়ালসেতু, পদ্মা সেতু ইত্যাদি দেখিয়ে প্রায় ১৮০০ লক্ষ কোটি টাকা যে পাচার হয়েছে, সে রকম কথা তো এখন তেমন শুনছি না।”
অন্তবর্তীকালিন সরকারকে নিয়ে রিজভী বলেন,“ অন্তর্র্বতীকালীন সরকারকে আমরা সমস্ত গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল সমর্থন করেছি। ড. ইউনুস একজন গুণী ব্যক্তি। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব। তার নেতৃত্বাধীন সরকার। তারা ভালো কাজ করবে এটাই আমাদের সবারই কাম্য সেটাই হয়েছে। আমরা এই সরকারের প্রতি আস্থা রাখতে চাই। এই নিরপেক্ষ সরকার একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করবে এবং তার আগে প্রয়োজনীয় যত সংস্কার আছে তার জন্য তিনি কাজ করে যাবেন, সেটার নেতৃত্ব দিবেন এবং এই সংস্কার নিয়ে বিশদ আলোচনা হচ্ছে।”
রিজভী বলেন,“আমাদের এই অনুষ্ঠানটি মূলত রাজনৈতিক না। আমরা একটি মানবিক উদ্যোগে আমাদের পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের নির্দেশে এবং তারই প্রতিষ্ঠিত আমরা বিএনপি পরিবার এখানে একটি মানবিক কর্মকান্ডের জন্য ছুটে এসেছি। কোনভাবে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানতে পেরেছেন যে, কিশোরগঞ্জের এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে একজন মানুষ যিনি পশুর বদলে নিজেরাই ঘানি টানছে। আমরা রাজনীতিতে অনেক বড় বড় কথা বলি। কিন্তু আসল কাজ আমাদের চোখের আড়ালেই থেকে যায়। মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য। এসব মানুষের পাশে দাড়ানো আমাদের সামাজিক দায়িত্ব।”
মানবিক এই কর্মসূচিতে আমরা বিএনপি পরিবারের সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুনের নেতৃত্বে সংগঠনের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আবুল কাশেম, ইঞ্জিনিয়ার মোস্তফা-ই-জামান সেলিম, জাতীয় প্রেসক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য জাহিদুল ইসলাম রনি ও সংগঠনটির সদস্য মাসুদ রানা লিটন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সঙ্গীত শিল্পী বেবী নাজনীন, কেন্দ্রীয় বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বিলকিস ইসলাম, সৈয়দপুর (সাংগঠনিক) জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকার, সাধারণ সম্পাদক শাহীন আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত সৈয়দপুর (সাংগঠনিক জেলা) বিএনপি নেতা শহীদ সাজ্জাদ হোসেন ও শহীদ নাঈম বাবুর পরিবারের সাওে সাক্ষাৎ করে আর্কি অনুদান প্রদান করে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’।
#
নূর আলম সিদ্দিকী।
নীলফামারী।
০১৭১৩৯৩৭০৬৬