
কবির হোসেন রাকিব-কমলনগর (লক্ষ্মীপুর) :
লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের চর ফলকন ইউনিয়ন ভূমি অফিসে জমির খারিজ, নামজারি, খাজনা প্রদান বা রেকর্ড সংশোধন সহ যে কাজই হোক না কেন, টাকা ছাড়া অফিসে কোনো ফাইল অগ্রসর হয় না। অনেকটা প্রকাশ্যেই চলছে ঘুষ বাণিজ্য। এমন অভিযোগ তুলেছেন এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগীরা জানান, অফিস সহায়ক মো. মুসলিম হোসেন প্রতিটি কাজে ঘুষ দাবি করেন, আর ঘুষ না দিলে দিনের পর দিন ফাইল আটকে রাখেন। জমির কাগজপত্রে বিভিন্ন সমস্যার অজুহাতে হয়রানি করে ঘুষ নিতে বাধ্য করেন সেবাপ্রার্থীদের। এসব কর্মকাণ্ডে মুসলিমকে ভূমি কর্মকর্তা সম্ভুলাল মজুমদার সরাসরি সহযোগিতা করছেন বলে অফিস সূত্রে জানা গেছে।
চর ফলকন ইউনিয়নের মো: নোমানসহ কয়েকজন ভুক্তভোগী এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আরাফাত হোসাইন বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, পূর্ব চর ফলকন মৌজার ১২৭৮ খতিয়ানের ৯৪,৩৩৯, ৫২২ ও ১৩১৭ দাগের ৬৪ শতাংশ জমির খাজনা পরিশোধের জন্য তিনি চর ফলকন ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যান। কর্তব্যরত অফিস সহায়ক মো: মোসলেম কম্পিউটার টিপে প্রথমে ১৭ হাজার টাকা দাবি করেন। পরে ৬ হাজার ৫০০ টাকা নিয়ে ১ হাজার ৮ শ সাতাশি টাকার রশিদ ধরিয়ে দেন।
একই ইউনিয়নের মো: ফিরোজ আলম বলেন,ফলকন তহশিল অফিসে খাজনা দিতে গেলে মোসলেম আমার কাগজপত্র দেখে ৩০ হাজার টাকা খাজনা আসছে বলে জানান। পরে ৪০ শতক জমিনের জন্য ১০ হাজার টাকা খাজনা নিয়ে আমাকে ২ হাজার টাকার রশিদ দেয় সে।
ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চর ফলকন ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক মো. মুসলিম হোসেন সরকারি বিধি অনুযায়ী ভূমি অফিসের আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করার এখতিয়ার রাখেন না। অথচ ভূমি কর্তার নির্দেশে তিনি অবৈধভাবে এসব ব্যবহার করে কৃষক ও সাধারণ ভূমি মালিকদের নানাভাবে হয়রানি করছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত অফিস সহায়ক মো: মোসলেম হোসেন বলেন, সার্ভারজনিত কারণে হোল্ডিং ভূল হয়েছে যার কারণে এ সমস্যা হয়েছে।
চর ফলকন ইউনিয়নের ভূমি সহকারী কর্মকর্তা (তহশিলদার) শম্ভু লাল মজুমদার বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। ভূক্তভোগীকে আসতে বলেন এবং আপনারা যেভাবে বলবেন সেভাবে সমাধন করে দিবো। তবে নিউজ করিয়েন না।
কমলনগর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আরাফাত হোসাইন জানান, খাজনার রশিদে উল্লেখিত টাকার বাহিরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।