
মোঃ মোহাইমেনুর রহমান সানা-নীলফামারী :
জলঢাকা উপজেলা সনাতনীদের সবচেয়ে বড় উৎসব দুর্গাপূজাকে সফল করতে বিভিন্ন ধর্ম বর্নের মাঝে এ আনন্দ জরিয়ে দিতে নির্বিঘ্নে পূজা সফল করতে প্রস্তুতি মুলক সভা অনুষ্ঠিত হয়।প্রস্তুতি মূলক এই সভা জলঢাকা উপজেলার বিভিন্ন বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ সমাজের সুশীল সচেতন নাগরিকদের নিয়ে উপজেলা হল রুমেএ সভা অনুষ্ঠিত হয়।এ সভায় সভাপতিত্ব করেন নির্বাহী অফিসার জনাব মোঃ জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন।
উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন বাংলাদেশের মানুষ অত্যন্ত শান্তিপ্রিয়।এখানে সাম্প্রদায়িকতার কোন স্থান নেই।যুগ যুগ ধরে আমরা দেখে আসতেছি শারদীয় দুর্গোৎসব সনাতনীদের উৎসব হলেও পূজা মন্ডপ গুলোতে হিন্দু মুসলমান সকল ধর্মবনের মানুষ সেখানে অংশগ্রহণের কারনে মন্ডপগুলো প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।বহু মুসলিম ভাইদের ও আমরা দেখেছি সনাতন এসব উৎসব সফল করতে অর্থনৈতিক আর্থিক বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করতে।ফলে বাংলাদেশে বিশ্বের মানচিত্রের কাছে সাম্প্রদায়িক হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।এই সম্প্রীতি ধরে রাখতে জলঢাকার বিভিন্ন পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সহযোগিতা সহ সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতা কামনা করেন।সফল ভাবে পূজা উদযাপন করতে গিয়ে জলঢাকা উপজেলা এই নির্বাহী অফিসার বলেন আপনারা আপনাদের পূজা মন্ডপের কার্যক্রম বিধি মোতাবেক পরিচালিত করবেন।অন্য ধর্মের উপরে আঘাত আসে এমন সব কার্যকলাপ যেমন নামাজ, আজান এরকম সময় যাতে পূজা মন্ডপের কার্যক্রম শিথিল থাকে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখবেন।বড় কোন দুর্ঘটনায় এড়াতে মিটিংয়ে উপস্থিত জলঢাকা উপজেলার বিভিন্ন পূজা কমিটির সদস্যের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন সমস্ত বিদ্যুৎ অফিসে নির্দেশনা দেওয়া আছে যতই পূজা পরিচালনা করতে গিয়ে বিদ্যুতের যকোন ধরনের সমস্যা না থাকে এমনকি ফায়ার সার্ভিস,সরকারি মেডিকেলের এম্বুলেন্স সহ পূজার সাথে সম্পৃক্ত সরকারের সবাইকে সচেতন থাকার নির্দেশনা দেওয়া আছে।আপনারা আপনাদের প্রয়োজনে বিদ্যুৎ অফিস, ফায়ার সার্ভিস অফিস, সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের নম্বর নিজেদের কাছে রাখবেন কোন সমস্যা হলে তাৎক্ষণিক তাদের সাথে যোগাযোগ করবেন।
এছাড়াও এই প্রস্তুতি মুলক সভায় আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন জলঢাকা থানার অফিসার ইনচার্জ আরজু মোঃ সাজ্জাদ হোসেন।অফিসার ইনচার্জ সাজ্জাদ হোসেন তার বক্তব্য বলেন স্বৈরাচার পতন পরবর্তী বাংলাদেশ পুলিশ জনগণের জন্য নিবেদিত প্রান হয়ে কাজ করার চেষ্টা করছে।সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা অত্যান্ত প্রানবন্ত এবং সফল ভাবে শেষ করতে জলঢাকা পুলিশ প্রশাসন সহ বিভিন্ন গোয়েন্দা,সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে।পূজা নির্বিঘ্নে করতে আমরা আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি।
আশা করি কেউ যদি পূজাকে ঘিরে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলে তাকে অতি দ্রুত আমরা তাকে আইনের আওতায় আনতে পারবো।এ ব্যাপারে তিনি পূজা কমিটি সদস্যবৃন্দের বলেন বিশৃঙ্খলাকারীরা আপনাদের সাথেই মিশে থাকবেন।সন্দেহভাজন কাউকে মনে হলে আপনারা তাৎক্ষণিক প্রশাসনকে জানবেন।আমরা তার ব্যাপারে অবশ্যই আইনগতভাবে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন।পূজা কমিটির পক্ষ থেকে যদি সিসিটিভি ব্যবহার করার সুযোগ থাকে সেবা পরবর্তী সিসিটিভি ব্যবহারের আহ্বান জানান।পরিশেষে অফিসার ইনচার্জ সাজ্জাদ হোসেন বলেন আপনাদের পূজাকে ঘিরে প্রশাসনের সমস্ত লোক এই তৎপর আছে আমরা বিশ্বাস করি যারা দেশে বিশৃঙ্খলা করতে চায় তারা আমাদের কাছে পরাজিত হবে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জলঢাকা উপজেলা জামায়াতের আমির জনাব মোঃ মোকলেসুর রহমান।
মোকলেসুর রহমান বলেন অতীতে পলাতক স্বৈরাচার সরকার বিভিন্নভাবে তাদের হয়রানি করেছে,বাড়ি ঘর লুটপাট করেছে,পূজা মন্ডপে আগুন লাগিয়েছে দায় দিয়েছে অন্যান্য রাজনৈতিক দলকে।এই স্বৈরাচার সরকার গত বছরগুলোতে যেভাবে আপনাদের ব্যবহার করেছে এই সুযোগ আর বাংলাদেশে দেওয়া হবে না। আমরা বাংলাদেশ জামাত ইসলামের পক্ষ থেকে বিশ্বাস করি এদের সবার এখানে স্বাধীনভাবে প্রত্যেকটি প্রত্যেকের ধর্ম পালনের সুযোগ পাবে।এ ব্যাপারে যদি কেউ বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করে বাংলাদেশ জামাত ইসলামী আপনাদের পাশে থেকে অবশ্যই সহযোগিতা করবে।জলঢাকা ক্লাবের সভাপতি মোঃ কামারুজ্জামান বলেন এটা সম্প্রীতের বাংলাদেশ। এখানে বিশৃঙ্খলা কারীদের কোন ঠাঁই নাই।
৫ আগস্ট পরবর্তী আমরা যেমন সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন বিশৃঙ্খলা রুখে দিয়েছি ঠিক একইভাবে পূজা মন্ডপ ফিরে কেউ যদি বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করে আমরা তাদেরকেও রুখে দেবো ইনশাআল্লাহ।জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে বক্তব্য দিতে গিয়ে মোঃ মোহাইমেনুর রহমান -সানা বলেন অতীতে আমরা দেখেছি কিভাবে তারা বিশ্বজিৎকে দিনে দুপুরে খুন করেছে,কিভাবে রাম মন্দির হামলা করেছে। কিন্তু দায় দিয়েছে তৎকালীন বিরোধী দলের উপর।সনাতনীদের শুধু মাত্র ক্ষমতার কারণেই আওয়ামীলীগ ব্যবহার করেছে।এটা আর এই বাংলাদেশে হতে দেওয়া হবে না।আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশের যাদের এনআইডি কার্ড আছে তারা প্রত্যেকেই বাংলাদেশের সম অধিকারের নাগরিক।সংখ্যালঘু বলে কোন শব্দ নেই।এটা আওয়ামী লীগের ভাষা।
এই ভাষা ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ আপনাদের যুগের পর যুগ ব্যবহার করে আসছে।আমরা আশা করি আপনারা আর আওয়ামী লীগের দ্বারা ব্যবহৃত না হয়ে বৈষম্য মুক্ত একটা বাংলাদেশ গড়তে হিন্দু মুসলিম সকলেই ঐক্যবদ্ধ থাকবেন।পরিশেষে মোঃ মোহাইমেনুর রহমান-সানা বলেন সনাতনী ভাইদের পুজাকে সফল এবং প্রাণবন্ত করতে জাতীয় নাগরিক পার্টির পক্ষ থেকে জলঢাকা উপজেলা প্রশাসনসহ পূজা কমিটির সদস্যবৃন্দের সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হবে।