
স্টাফ রিপোর্টার :
উত্তর কালামপুর নুরানী বালিকা দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা আলাউদ্দিন সিকদারের বিরুদ্ধে কবরস্থানের উপর ভবন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে ঘুষ বানিজ্য, মাদ্রাসায় অনিয়ম সহ নানা অভিযোগের নিউজ প্রকাশ হয়।
সরেজমিনে ঘুরে এ ব্যাপারে উক্ত এলাকাবাসীর মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। একটি পক্ষ মাদ্রাসার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করা এবং অপর পক্ষ কবরের উপর ভবন নির্মাণের অপচেষ্টাসহ সুপারের বিরুদ্ধে বেশ কিছু অভিযোগ আনেন। বরগুনা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে দাখিল করা একটি অভিযোগপত্রের সূত্র ধরে অনুসন্ধানে আরো কিছু তথ্য আমাদের হাতে এসেছে। তাতে দেখা যায়, মাদ্রাসার নামে সৃজিত নতুন খতিয়ানে মোট এক একর জমি রয়েছে। এই জমির চারজন দাতা সদস্য হচ্ছেন রফিকুল্লাহ, ফয়জর আলী, কেতাব আলী ও আঃ আজিজ।
এদের মধ্যে মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও জমিদাতা রফিকুল্লাহ ও অপর জমিদাতা আঃ আজিজ এখনো জীবিত রয়েছেন। প্রতিষ্ঠাতার ভাষ্যমতে, বিতর্কিত সুপার আমাদেরকে না জানিয়ে মাদ্রাসার মাঠে স্পর্শকাতর জায়গায় ভবন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এলাকার কিছু দুর্নীতিবাজ লোকদের যোগসাজসে মাদ্রাসার পড়াশুনার পরিবেশ নষ্ট করেছেন, নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন, রাজনীতি করেছেন। তাদের ছত্রছায়ায় অতীতের মতো এখনো তিনি খামখেয়ালী চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি প্রশ্ন করেন, প্রতিষ্ঠাতা মাদ্রাসার উন্নয়ন চাইবে না, এটা হয়?
মাদ্রাসার নামে অনেক জায়গা আছে। সুপার সাহেব আমাদেরকে বললে ব্যবস্থা করে দিতাম। সে মূলত আমাদেরকে বিতর্কিত করার জন্য এসব প্রপাগান্ডা চালাচ্ছে। মাদ্রাসার অবকাঠামো উন্নয়নে কেন বাধা দিচ্ছেন জানতে চাইলে অভিযোগদাতা আঃ আজিজের ভাতিজা ও ওয়ারিশ মোঃ জসিম প্রশ্ন করেন, এটি আমাদের পারিবারিক কবরস্থান যেখানে আমার বাবাসহ আরো কয়েকজন সদস্য শুয়ে আছেন।
মাদ্রাসার আরো জমি থাকতে স্পর্শকাতর জায়গায় কেনো ভবন নির্মাণ করতে হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার দুজন কর্মচারীর একজন বলেন, সুপার মাদ্রাসার পাশে খালের উপর ব্রিজটি করিয়েছেন এবং আবার একটা বিল্ডিং এনেছেন এটাতো মাদরাসার উন্নয়ন। পাল্টা জবাবে অপর কর্মচারী বলেন, সুপার ব্রিজ বিল্ডিং এনেছেন ভালো কথা।
কিন্তু এগুলো তার মূল দায়িত্ব ছিলনা। তার মূল দায়িত্ব ছিল মাদ্রাসার পড়াশুনার ভালো পরিবেশ তৈরি করা, এলাকার ছেলেমেয়েদেরকে মানুষ করা। এগুলোর দিকে মনোযোগ না দিয়ে তিনি শুধু কামাই বাণিজ্যের দিকে খেয়াল রেখেছেন। তিনি কাজীগিরি, ঠিকাদারী, রাজনীতি নিয়েই বেশি ব্যস্ত ছিলেন।
এলাকাবাসী একটি মাদ্রাসা মাঠের খাদা দেখিয়ে বলেন, মাঠ ভরাটের নামে টাকা বরাদ্দ এনে মাঠের এক পাশে খাদা কেটে আরেক পাশের খাদা ভরাট করেছেন। এই তো তার উন্নয়নের নমুনা। তিনি সুপারের বিরুদ্ধে এলাকায় দলাদলি সৃষ্টি, অনিয়ম দুর্নীতির একগাঁদা অভিযোগ আনেন।
এ বিষয়ে শিক্ষা প্রকৌশল অফিসে ভবন নির্মাণের জটিলতার ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, এ ব্যাপারে আমরা অবগত আছি, সুপারকে ডেকে বিষয়টা সুরাহা করার জন্য বলা হয়েছে।