
নিজস্ব প্রতিনিধি :
সাংবাদিক নির্যাতন মামলার প্রধান আসামি হিসেবে অভিযুক্ত কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি)-এর ভিডিও ধারণ করতে গিয়ে পেশাগত দায়িত্ব পালনরত সাংবাদিকদের কাজে সরাসরি বাধা দিয়েছেন কুড়িগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট ফখরুল ইসলাম উকিল। একদিকে একজন সরকারি কর্মকর্তা আসামির কাঠগড়ায়, অন্যদিকে একজন আইনজীবী হয়ে তিনি সাংবাদিকদের কাজ থেকে বিরত রাখার মতো বেআইনি ও নিন্দনীয় কাজ করেছেন—যা স্পষ্টভাবে আইনের চরম অপব্যবহার এবং পেশাদার সাংবাদিকতার প্রতি চরম অবমাননা।
এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে সাংবাদিক মহলে ক্ষোভের ঝড় উঠেছে।
পেশাদার সাংবাদিকেরা প্রশ্ন তুলেছেন—কোনো মন্ত্রী-এমপি, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, এমনকি কয়েকদিন আগেও শিল্পী মমতাজের ছবি নিতে গেলে কোনো আইনজীবী বা কেউ বাধা দেননি। অথচ একজন অভিযুক্ত ডিসির ভিডিও নেওয়ার সময় সাংবাদিকদের বাধা দেওয়া হলো—কেন? কীসের ভয়? কী লুকানোর চেষ্টা চলছে?
সংবিধানের ৩৯(১) ধারা অনুযায়ী, “প্রত্যেক নাগরিকের মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রয়েছে।” সাংবাদিকদের কাজ থামিয়ে দেওয়া মানে গণতান্ত্রিক অধিকারকে পায়ের নিচে দলিত করা।
একজন আইনজীবী হয়ে অ্যাডভোকেট ফখরুল ইসলাম উকিল যেভাবে সাংবাদিকদের বাধা দিয়েছেন, তা শুধু অনৈতিকই নয়—এটি “Obstruction of Duty” বা দায়িত্ব পালনে বাধা প্রদান হিসেবে বিচারযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে। সাংবাদিকদের কাজকে বেআইনিভাবে ঠেকানো দণ্ডবিধির ৩৫৩ ধারার আওতায় পড়তে পারে, যেখানে সরকারি দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিকে কাজ করতে বাধা দেওয়াও অপরাধ।
সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন এবং প্রয়োজন হলে এই বেআইনি হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থাও গ্রহণ করবেন। একাধিক পত্রিকার সাংবাদিক বলেন—
একজন আইনজীবী হয়ে যিনি আইনের অপব্যাখ্যা দিয়ে সত্যকে আড়াল করতে চান, তিনি জনগণের নয়, অন্যায়ের পক্ষেই দাঁড়িয়েছেন।”
আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই:
সাংবাদিকদের কাজ থামানো যাবে না।
সত্যকে রোধ করা যাবে না।
আইনের অপব্যবহার করে সাংবাদিকতার কণ্ঠ রোধের যেকোনো অপচেষ্টা আমরা রুখে দেব।
আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে পেশাগত ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।