
সুমন খান :
রাজধানীর ইকুরিয়া বিআরটিএ, ঢাকা মেট্রো সার্কেল-২–এ কর্মরত মোটরযান পরিদর্শক মোঃ নাসিম হায়দারের বিরুদ্ধে ঘুষ বাণিজ্য, অনিয়ম ও পেশাগত দায়িত্বে গাফিলতির একের পর এক গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, অফিসের সাধারণ সেবাগুলোর পেছনে গোপনে চলে কোটি টাকার ঘুষ লেনদেনের কারবার।
:ঘুষ ছাড়া মিলছে না সেবা
বিআরটিএর নিয়মিত কার্যক্রম—যেমন ফিটনেস সনদ নবায়ন, মালিকানা হস্তান্তর, রেজিস্ট্রেশন বা ইঞ্জিন পরিবর্তনের অনুমোদনের মতো বিষয়েও সাধারণ জনগণ সেবা পেতে গিয়ে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, মোঃ নাসিম হায়দার ঘুষ ছাড়া কোনো ফাইল অগ্রসর করেন না। নির্ধারিত ফি’র বাইরেও আদায় করা হচ্ছে ৫,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত ঘুষ।
ভুক্তভোগীদের ভাষ্য
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গাড়ি মালিক বলেন, “আমার গাড়ির ফিটনেসের জন্য দরখাস্ত করেছিলাম। কিন্তু অফিসের ভেতরে গিয়ে দেখি, কাজ এগোবে না যদি অতিরিক্ত টাকা না দেই। দালালের মাধ্যমে ৮ হাজার টাকা দিতে বাধ্য হই। না হলে নাকি ফাইল আটকে থাকবে।”
অন্য একজন বলেন, “নাসিম হায়দারের টেবিল পর্যন্ত যাওয়ার আগে দালালদের পকেট গরম না করলে কোনো সেবা মেলে না। এটা যেন অফিস নয়, একেকটা ঘুষের বাজার!”
: দালাল সিন্ডিকেটের কারসাজি
অভিযোগ রয়েছে, অফিস সহকারী ও বাইরের দালালদের নিয়ে গড়ে উঠেছে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট। সোহাগ ও ছগির নামের দুই দালাল নাসিম হায়দারের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে ঘুষ লেনদেনে মধ্যস্থতা করেন। যেকোনো ব্যক্তি সরাসরি অফিসে গেলে হয়রানি করে দালালের মাধ্যমে যেতে বাধ্য করা হয়।
:প্রশাসনের নীরবতা প্রশ্নবিদ্ধ
বিআরটিএর উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “এমন অভিযোগ দীর্ঘদিন ধরেই আসছে। কিন্তু কোনো লিখিত অভিযোগ না থাকায় সরাসরি ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।”
এদিকে, সেবা প্রত্যাশীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। জনগণের প্রশ্ন—
:বিআরটিএ কি শুধুই দালাল ও ঘুষখোরদের অভয়ারণ্য হয়ে থাকবে?
” জনগণ কবে নাগরিক অধিকার অনুযায়ী ঘুষমুক্ত সেবা পাবে?
:তদন্ত ও ব্যবস্থার দাবি–
দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলোর দাবি, বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে মোঃ নাসিম হায়দারের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক। জনগণের স্বার্থে দুর্নীতি ও অনিয়মের শিকড় উপড়ে ফেলতে হবে।