
মোঃ আবু সালেক ভূইয়া :
গাজীপুরে ফিড কোম্পানির সিনিয়র ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পিবিআই) একই সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ বিষয়ে পিবিআই জানিয়েছেন শারীরিক সম্পর্কের পর টাকা না দেয়ায় চাকু দিয়ে রফিকুল ইসলামকে গলা ও উরুতে আঘাত করে তাকে হত্যা করা হয়।
বুধবার (২৩ জুলাই) পিবিআইয়ের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।পিবিআই জানাই গত মঙ্গলবার (২১ জুলাই) রাত ১.৩০ ঘটিকায় সময় আসামিদের গাজীপুর মহানগরের গাছা থানাধীন কুনিয়া মোতালেব মার্কেট থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের।গ্রেফতারকৃতরা হলেন বগুড়া জেলা সদর থানার মৃত খলিল শেখের ছেলে নয়ন (২১) ও একই জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার মানিকদারচর (টেংরাকুরা) গ্রামের এরশাদ আলীর ছেলে আল আমিন (১৯)। আসামিরা গাছা থানা এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয় ফিড কোম্পানির সিনিয়র ম্যানেজার মোহাম্মাদ রফিকুল ইসলাম (৪ প্রায় ৬/৭ বছর যাবত স্বপরিবারে গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ীর আমবাগে আতাউর মার্কেট এলাকার মাসুদের বাসা ভাড়া নিয়ে চার তলায় বসবাস করতেন। গত ২৭ মে রফিকুলকে বাসায় রেখে তার স্ত্রী ও ছেলে রাতুল আহাম্মেদ ঘর-বাড়ি নির্মাণের জন্য গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইল জেলার ধনবাড়ীর ফুলবাড়ী গ্রামে যান। গত ২০ জুলাই সকালে রফিকুলের ছেলে তার বাবাকে মোবাইলে ফোন দিয়ে না পেয়ে তার দুই বন্ধু ও সহকর্মীদের ফোন করে তাদের বাসায় যেতে বলেন। পরে তারা ওই দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রফিকুলের বাসায় গিয়ে রুমের বাহির থেকে দরজায় তালা দেখেন। তারা বাড়ির মালিকের উপস্থিতিতে বাসার দরজার তালা ভেঙে রুমের ভেতর রফিকুলকে রক্তাক্ত ও মৃত অবস্থায় খাটের উপর পড়ে থাকতে দেখেন এবং রুমের ভেতরে আলমারির ড্রয়ার খোলা ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এলোমেলো পড়ে থাকাবস্থায় দেখেন। এ ঘটনায় রফিকুলের ছেলে রাতুল আহাম্মেদ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে কোনাবাড়ি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
কোনাবাড়ী থানা পুলিশ ২ দিন মামলাটি তদন্ত করেন। পরে সিডিউলভুক্ত মামলা হওয়ায় পিবিআই গাজীপুর জেলা মামলাটি অধিগ্রহন করে এবং এসআই (নিঃ) সনজিৎ বিশ্বাস মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম শুরু করেন।
বিজ্ঞপ্তিতে পিবিআই জানায়, তথ্য-প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২১ জুলাই রাতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত নয়ন ও আল আমিনকে গ্রেপ্তারকরা হয়। পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, ঘটনার দিন রফিকুল তাদের দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য ৫ হাজার টাকায় ভাড়া করে তার বাসায় ডেকে আনে। পরে তারা কথামত টাকা চাইলে রফিকুল টাকা না দিয়ে তাদেরকে কৌশলে মোবাইলে ধারণকৃত শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও দেখায় এবং ভাইরাল করার হুমকি দেয়। তখন তারা ক্ষুব্ধ হয়ে সঙ্গে আনা চাকু দিয়ে রফিকুলের গলা ও উরুতে আঘাত করে হত্যার পর ঘরে থাকা মাটির ব্যাংকের ৭৭০ টাকা, মানি ব্যাগে থাকা ১০০০ টাকা ও ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়ে যায়।
এ বিষয়ে পিবিআই পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘এটি একটি নৃশংস হত্যাকানণ্ড। আমরা তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে আসামিদের গ্রেপ্তারে করতে সক্ষম হই। তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। মামলাটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান আছে।