
মো: রিপন আহমেদ :
বিমানবন্দর থানার একজন ওসি, যিনি টানা সাত বছর এয়ারপোর্ট থানায় কর্মরত ছিলেন, নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানালেন, “গত সাত বছরে যেসব যাত্রী পূর্ব ঘোষণা ছাড়া আগ্নেয় অস্ত্র, গুলি, খালি ম্যাগাজিন বা এমনকি গুলির খোসাও সঙ্গে নিয়ে নিরাপত্তা চেকপোস্টে ধরা পড়েছেন, তাঁদের সবাইকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে এবং কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিমানবন্দর থানার রেকর্ড ঘাটলেই এইসব ঘটনার তথ্য মিলবে। তাহলে প্রশ্ন আসে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীবের ক্ষেত্রে এই নিয়ম কি প্রযোজ্য হয়নি কেন?
একজন ভিআইপি হলেই কি আইন বদলে যায়? অথচ তাঁর ব্যাগ থেকে উদ্ধার হয়েছে গু’ & লি’সহ ম্যাগাজিন।
তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন, এটি “অসাবধানতা”। এই ‘অসাবধানতা’র দায়ে যখন অন্যরা থানায়, আদালতে, জেলখানায় তখন তিনি কেন রয়ে গেলেন নিরাপদ, জিজ্ঞাসাবাদ-বিহীন, দায়মুক্ত?
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্ক্যানিংয়ের সময় ব্যাগে ম্যাগাজিন পাওয়ার ঘটনায় ব্যাখ্যা দিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। ব্যক্তিগত ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া ব্যাখ্যায় আসিফ মাহমুদ বলেছেন, প্যাকিং করার সময় অস্ত্রসহ একটি ম্যাগাজিন বাসায় রেখে এলেও ভুলবশত আরেকটি ম্যাগাজিন ব্যাগে থেকে যায়। পরে সেটি তিনি তাঁর ব্যক্তিগত প্রটোকল কর্মকর্তার কাছে রেখে আসেন।
রাতে আসিফ মাহমুদ ফেসবুকে এ বিষয়ে ওই ব্যাখ্যা দেন। ব্যাখ্যায় তিনি আরও বলেন, ‘নিরাপত্তার স্বার্থে আমার লাইসেন্স করা বৈধ অস্ত্র আছে। গণ-অভ্যুত্থানের নেতৃত্বের ওপরে যেভাবে হত্যাচেষ্টা চালানো হয়েছে কয়েক দফা তাতে রাখাটাই স্বাভাবিক। যখন সরকারি প্রটোকল বা সিকিউরিটি থাকে না, তখন নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিতের উদ্দেশ্যে লাইসেন্সড অস্ত্র রাখা।’
সংবাদমাধ্যমকে চাপ প্রয়োগ করে এ বিষয়ক সংবাদ সরানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আসিফ মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘চাপ দিয়ে নিউজ সরানোর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
এই ঘটনার পর আমি টিমসহ টানা ১০ ঘণ্টা ফ্লাইটে ছিলাম। ট্রানজিটে নেমেও দীর্ঘক্ষণ পর অনলাইনে এসে দেখতে পাচ্ছি যে এত কিছু ঘটেছে। নাগরিক হিসেবে আপনারও যদি নিরাপত্তাঝুঁকি থাকে, যথাযথ নিয়ম ফলো করে আপনিও অস্ত্রের লাইসেন্স করতে পারেন।’