
কুমিল্লা প্রতিনিধি :
কুমিল্লা নগরীতে কোরবানির পর থেকেই জমে উঠেছে বাসাবাড়ি থেকে পাওয়া এবং কসাইদের সংগ্রহ করা মাংসের হাট। নগরীর কান্দিরপাড় পূবালী চত্বর এবং লিবার্টি মোড়ে এই মাংস কিনতে আসেন মূলত নিম্ন আয়ের মানুষ ও ছোটখাটো হোটেল ব্যবসায়ীরা।
ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গড়ে প্রতি কেজি মাংস ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এই বাজারে অন্তত তিন লাখ টাকার মত বেচাকেনা হয়।শনিবার বিকালে কান্দিরপাড়ে গিয়ে দেখা গেছে, শতাধিক মানুষ বাজারের ব্যাগভর্তি মাংস নিয়ে ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছেন মোড়ে মোড়ে। বিভিন্ন জায়গা থেকে ক্রেতারাও আসছেন মাংস কিনতে।আখাউড়া উপজেলার বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব মনির হোসেন বলেন, “আমি মানুষের কাছ থেকে সাহায্য- সহযোগিতা নিয়ে চলি। আজ কুমিল্লায় এসেছি বিভিন্ন বাসায় ঘুরে ঘুরে কোরবানির মাংস সংগ্রহ করতে। ব্যাগে দুই কেজির মত মাংস আছে, ১৬০০ টাকা দাম চাচ্ছি। ট্রেনের সময় চলে গেছে। তাই বাড়ি যাওয়া যাবে না, মাংস বিক্রি করে যাব।”
নেত্রকোণা জেলার বাসিন্দা মনি আক্তার বলেন, “বিভিন্ন বাসাবাড়ি ঘুরে আট কেজির মত মাংস হয়েছে। অর্ধেক বিক্রি করে ওই টাকা দিয়ে চাল, ডাল, মুরগি কিনব। বাকিটা বাড়িতে নিয়ে যাব। অর্ধেক মাংস আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি করতে চাই।”নগরীর ঝাউতলায় একটি বাসায় কসাইয়ের কাজ করেছেন শফিকুল। তার কাছে থাকা চার কেজি মাংসের দাম চাচ্ছেন ৩ হাজার ২০০ টাকা।শফিকুল বলেন, “কসাইরা যে মাংস বিক্রি করে সেটি পরিষ্কার থাকে এবং যে কারণে দামও বেশি থাকে। আর যারা খুঁজে খুঁজে মাংস আনে সেগুলোতে অনেক ধরনের মাংস মেশানো থাকে। তাই দাম কম হয়।”এই হাটের ক্রেতা মূলত যারা কোরবানি দিতে পারেননি সেরকম নিম্ন আয়ের মানুষ। তবে বিভিন্ন ছোটখাটো হোটেলের মালিকরাও এখান থেকে মাংস কিনে নিয়ে যান।”
সাধারণত দানে পাওয়া এই মাংসের হাটে বেশির ভাগ বিক্রেতাই দুস্থ কিংবা ভিক্ষুক। এসব মাংসে থাকে বিভিন্ন গরুর মিশ্রণ। তারপরও বেচাকেনা চলে ভালো দামেই।হাট থেকে মাংস কেনার পর অটোরিকশা চালক নজিবুল আলম বলছিলেন, এবার দানের মাংসের দাম বেশি। তারপরও তিন হাজার টাকা দিয়ে চার কেজির মত মাংস কিনেছেন। এর মধ্যে মাংস, হাড় মেশানো।
আরেকজন ক্রেতা জানান, অন্তত ১২ হাজার টাকার মাংস কেনা হয়েছে। আরও কেনার চেষ্টা করছেন। এসব মাংস আবার বিভিন্ন হোটেলে দেওয়া হয়।