
চচট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও আইনজীবী হত্যার ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চায় চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে গঠন করা তদন্ত কমিটি। কমিটির প্রধান সাবেক মহানগর কৌঁসুলি ও আইনজীবী আবদুস সাত্তার গতকাল বৃহস্পতিবার জেলা আইনজীবী সমিতির নেতাদের কাছে এই সুপারিশ করে কমিটি থেকে অব্যাহতি চান। এর আগে কমিটির সদস্যসচিবসহ চার সদস্য অব্যাহতি চেয়েছেন।
কমিটির প্রধান সাবেক মহানগর পিপি ও আইনজীবী আবদুস সাত্তার জেলা আইনজীবী সমিতির নেতাদের কাছে এই সুপারিশ করেন এবং তিনি তদন্ত কমিটি থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছেন। এর আগে, কমিটির সদস্যসচিবসহ চার সদস্য অব্যাহতি চেয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে তদন্ত কমিটির প্রধান আবদুস সাত্তার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও আইনজীবী হত্যার ঘটনার পর সমিতির পক্ষ থেকে ১০ নভেম্বর তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। ১৫ নভেম্বর রিপোর্ট দিতে বলা হয়। এর মধ্যে সদস্যসচিবসহ চার জন পদত্যাগ করেছেন। এটি একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনা। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ৭টি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারী জড়িত থাকতে পারে। পুলিশের মাইক দিয়ে প্রিজনভ্যানে থাকা অবস্থায় চিন্ময় বক্তব্য দিয়েছিলেন। ১ ঘণ্টার মধ্যে মামলার নকল নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এমন অবস্থায় এ ঘটনা সাধারণ কেউ তদন্ত করলে হবে বলে মনে করছি না। একজন জেলা ও দায়রা জজ পদমর্যাদার বিচারক দিয়ে আলোচিত এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। এ কারণে সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার আমি নিজেই এ তদন্ত কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেছি।’
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর হওয়া নিয়ে গত ২৬ নভেম্বর আদালত প্রাঙ্গণে সংঘর্ষ হয়। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় সাইফুলের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন।
এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধাদান এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয়টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৪০ জন। তাঁদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ১০ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, ১০ আসামির মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য সম্প্রতি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়, আইনজীবীর ঘাড়ে বঁটি দিয়ে দুটি কোপ দেন রিপন দাস। আর কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন দাস। পরে রাস্তায় পড়ে থাকা সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা এই আইনজীবীকে লাঠি, বাটাম, ইট, কিরিচ ও বঁটি দিয়ে তাঁরা ১৫ থেকে ২০ জন মারধর করেন।