
- চার বছর পর অত্যাশ্চর্য রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন বলে মনে করছেন ট্রাম্প
- এখনও ২০২০ সালের নির্বাচনী ফলাফল অস্বীকার করেন তিনি
মার্কিন নির্বাচনে এ পর্যন্ত পাওয়া ফলাফলে হোয়াইট হাউস, সিনেট এবং প্রতিনিধি পরিষদ–সব জায়গাতেই এগিয়ে আছে রিপাবলিকানরা। এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাত দোদুল্যমান রাজ্যের মধ্যে পেনসিলভানিয়াসহ তিনটিতে জয় পেয়েছেন রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বিবিসির তথ্যমতে, ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে এমন অঙ্গরাজ্যগুলোয় ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের ক্ষেত্রে ২৬৬টি ভোট পেয়েছেন সাবেক এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট, এবং কমলা ২১৯টি ভোট পেয়েছেন। আর মাত্র ৪টি ভোট পেলেই আগামী চার বছরের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সিংহাসনে আসীন হবেন তিনি।
তবে ফলাফল ঘোষণার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিজেকে বিজয়ী ঘোষণা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউস ছেড়ে যাওয়ার চার বছর পর এটি তার অত্যাশ্চর্য রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন বলে মনে করছেন তিনি।
জনমত জরিপ অনুযায়ী, দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার পর থেকেই কোনরকম প্রতিযোগিতা ছাড়াই বড় ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন ট্রাম্প।
রাজনীতিতে পা রাখার আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প ছিলেন এক ব্যবসায়ী। তবে এরই সঙ্গে টিভির পর্দাতেও তাঁকে দেখা যেত নানান অনুষ্ঠানে। এছাড়াও নানান বিতর্কও তাঁর সঙ্গী হয়েছে বিগত দিনে।
২০১৬ সালে প্রথমবারের মত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে সময় প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হন হিলারি ক্লিনটন। সাবেক ফার্স্ট লেডি ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দক্ষতার পরিচয় দেওয়ায় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হন তিনি। তবে ৩০ লাখের বেশি পপুলার ভোট পেয়েও ইলেক্টোরাল কলেজের নিয়মে পরাজিত হন ট্রাম্পের কাছে।
তবে ২০২০ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন ট্রাম্প। সে সময় নির্বাচনি ফলাফল আসতে লেগে গিয়েছিল কয়েকদিন। যদিও এখনও ২০২০ সালের নির্বাচনী ফলাফল অস্বীকার করেন তিনি। নির্বাচনে কারচুপি হয়েছিল বলেই অভিযোগ তার।
যার ফলস্বরূপ পরের বছরের জানুয়ারিতে ক্যাপিটল হিলে ট্রাম্পপন্থীদের তাণ্ডবের ছবি দেখেছিল গোটা বিশ্ব। ট্রাম্পের উস্কানিতেই সেখানে হামলা চালায় তার সমর্থকরা। সেই হামলার উস্কানি দিয়ে লজ্জার এক ইতিহাস গড়েছিলেন ট্রাম্প।
প্রথম মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে কোনও ফৌজদারি মামলার বিচারে হাজির হয়েও লজ্জার ইতিহাস গড়েছিলেন ট্রাম্প। আর সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েও ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছিলেন এই রিপাবলিকান। চার বছর আগে আমেরিকার জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত ট্রাম্প এবার আবার নির্বাচনে ফের ঘুরে দাঁড়িয়ে ১৩২ বছর পুরনো ইতিহাস ছুঁলেন।
ট্রাম্পের অতীত কর্মকাণ্ড প্রমাণ করে, নির্বাচনে প্রতারণার চেষ্টা করা তাঁর জন্য অসম্ভব কিছু নয়। একজন পর্নো তারকার মুখ বন্ধ করার জন্য তিনি গোপনে অর্থ দিয়েছিলেন। এ ঘটনায় ৩৪টি অপরাধমূলক ধারায় তিনি দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এবং তাঁর মিত্ররা অনিয়ম এবং জালিয়াতির মিথ্যা দাবিতে মাঠ সরগরম করেছিলেন।
ট্রাম্প হোয়াইট হাউস পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে ফিফটি ফিফটি চান্স নিয়ে নির্বাচনে গিয়েছিলেন। তার নির্বাচনে আসা নিয়ে অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ হওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। তবে সবকিছুকে ছাপিয়ে তিনি ২০২৪ সালের মার্কিন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দেন এবং ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হতে যাচ্ছেন।