
সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজীকে এবার ঢাকার একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।
মঙ্গলবার সকালে গোলাম দস্তগীরকে নারায়ণগঞ্জ কারাগার থেকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। তাঁকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সড়ক পরিবহন শ্রমিক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ও সাংবাদিক হাসান মাহমুদকে হত্যার ঘটনায় রাজধানীর খিলগাঁও থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওই থানার এসআই আজিজুল হক ভুঁইয়া। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
তদন্ত কর্মকর্তা আবেদনে উল্লেখ করেছেন, গোলাম দস্তগীর হাসান মাহমুদ হত্যার ঘটনায় জড়িত বলে সাক্ষ্যপ্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। তাঁকে এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো প্রয়োজন। মামলার তদন্তের স্বার্থে ভবিষ্যতে তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার প্রয়োজন হবে।
গত ২৫ আগস্ট দিনগত রাতে ঢাকার শান্তিনগর বাসা থেকে গোলাম দস্তগীরকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ। পরে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে রূপগঞ্জে গুলিতে নিহত দশম শ্রেণির ছাত্র রোমান মিয়া হত্যা মামলায় তাঁকে ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন নারায়ণগঞ্জের আদালত। এরপর গত ১ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারের নিহত শফিকুল ইসলাম শফিক ও বাবুল হত্যার দুই মামলায় ৩ দিন করে ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদালত।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার পারভেজ হত্যা মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর তাঁকে ঢাকার খিলগাঁও থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়।
গত ২৯ আগস্ট ঢাকার আদালতে নিহতের স্ত্রী ফাতেমা মামলা দায়ের করলে আদালত খিলগাঁও থানা-পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৫ জনকে আসামি।
মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—ওবায়দুল কাদের, আসাদুজ্জামান খান কামাল, সালমান এফ রহমান, গোলাম দস্তগীর গাজী, শামীম ওসমান, সাবের হোসেন চৌধুরী, নজরুল ইসলাম বাবু, শাহজাহান খান, মশিউর রহমান রাঙ্গা, এনায়েত উল্লাহ, এরফান সেলিম, লোটাস কামাল, আতিকুল ইসলাম, হারুন-অর-রশীদ, বিপ্লব কুমার সরকার।
মামলায় অভিযোগ করা হয়—সাংবাদিক হাসান মাহমুদ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৩১ জুলাই রাত দেড়টার দিকে উত্তরা মুগদাপাড়ার বাসা থেকে বের হন। রাতে আর বাসায় ফেরেননি। অনেক খোঁজাখুঁজির পর জানতে পারেন সাদা পোশাকধারী অজ্ঞাতনামা লোক এবং আরও অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জন লোক হাসান মাহমুদকে তুলে নিয়ে গেছে। পরে জানতে পারেন গোড়ান ছাপড়া মসজিদের সামনে তাঁর স্বামী পড়ে আছেন। ভোর ৫টার সময় মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, এজাহারনামীয় আসামিরা এবং আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা সুপরিকল্পিতভাবে তাঁর স্বামীকে হত্যা করেছেন।