
ঢাকা স্টাফ রিপোর্টার:
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় এক প্রভাবশালী অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে একটি অসহায় পরিবার। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার বৃহস্পতিবার ভান্ডারিয়া প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছে। ভুক্তভোগী সোহেল সিকদার বলেন, উপজেলার লক্ষীপুরা গ্রামে বিবাদী প্রভাবশালী গাজী অহিদুজ্জামান লাভলু ও সেলিম মোল্লার সাথে আমাদের বাড়ীর মসজিদ এবং ঈদগা মাঠের জমি নিয়া বিরোধ চলিতেছে। উক্ত বিরোধ এর জের ধরিয়া বিবাদীরা ইতিপূর্বে আমাদের চলাচলের পথ আটকাইয়া পাকা ওয়াল করে এবং সম্প্রতি বিবাদী অনেক লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়ীর জামে মসজিদের নেইম প্লেট এবং ঈদগা মাঠের স্থাপনার ক্ষতি সাধন করে। বাধা দিতে গেলে আমাকে খুন জখমের হুমকি দিয়া মারপিট করার জন্য চড়াও হয়। আমি ডাক চিৎকার দিলে আশে পাশের লোকজন আসিয়া আমাকে উদ্ধার করে।
তিনি আরো জানান, বিবাদীদের অত্যাচারে ভয়ে জানমাল নিয়া চরম নিরাপত্তা হীনতায় ভুগিতেছি। এঘটনার বিচার চেয়ে বুধবার সেনাবাহিনী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ দেয়া হয়। পিরোজপুর ভান্ডারী একাধিক অনলাইন এবং স্থানীয় পত্রিকা নিউজ হওয়া সত্ত্বেও কোন ফলাফল পাননি, সোহেল শিকদার । সে দিশেহারা হয়ে এক পর্যায় , ২৪ শে আগস্ট ২০২৪ রোজ শনিবার দুইটার দিকে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিট নিচ তলায় নজরুল হামিম মিলতনে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন ভান্ডারিয়া পৌরসভা ১ নং ওয়ার্ডে সোহেল শিকদারের বসত বিটা পিরোজপুর জেলার বিএনপি সদস্য সচিব ও ভূমিদস্যু, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ গাজী ওয়াহিদুজ্জামান লাভলু, কর্তৃক অবৈধ ও জোড়পূর্বক দখল নেওয়ার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন, ভুক্ত পরিবার। এক পর্যায় মোহাম্মদ সোহেল শিকদার( ৩৪) পিতা মোঃ মৃত আশরাফ আলী সিকদার, সাং লক্ষ্মীপুরা এক নং ওয়ার্ড ভান্ডারিয়া পৌরসভা, থানার ভান্ডারিয়া জেলা পিরোজপুর। সন্ত্রাসী ভূমিদস্যু গাজী ওয়াহিদুজ্জামান লাভলু (৫২) পিতা মৃত মোফাক্কল উদ্দিন, পিরোজপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব। মোহাম্মদ সেলিম মোল্লা এখন (৫১) পিতা মোতাহার আলী মোল্লা, উভয় সাং লক্ষ্মী পুরা, ১ নং ওয়ার্ডের ভান্ডারিয়া পৌরসভা থানা ভান্ডারিয়া জেলা পিরোজপুর এর সাথে, আমার বাড়ির মসজিদ এবং ঈদগাহ মাঠের জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। উক্ত বিরোধ এর জে ড ধরিয়া সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যু গাজী ওয়াহাদুজ্জামান লাভলু ইতিপূর্বে আমাদের চলাচলের পথ আটকেয়া পাকা ওয়াল করে এবং ঘটনা দিন ৯/৮/২০২৪ তারই দুপুর অনুমানিক দুই ঘটিকার সময় 1 নং বিবাদী তাহার অঙ্গ সংগঠনের লোকজন সহ সেলিম মোল্লা নেতৃত্বে নিয়ে দাঙ্গা এবং হাঙ্গা এবং মারপিট আমাদের উপরে চালান শুধু তাই নয় সন্ত্রাসী কাদায় আমাদের বাড়ি মসজিদে নেম প্লেট এবং ঈদগা মাঠে নেম প্লেট বানিয়ে ফালিয়ে দেন। আমি বাধা দিতে গেলে আমাকে খুন রকমের হুমকি দিয়ে মারপিট করার জন্য চরম হন লাভলু গাজীর সন্ত্রাসী বাহিনীরা। এক পর্যায়ে আমি ডাক চিৎকার দিলে আশেপাশে লোকজন আসিয়া আমাকে উদ্ধার করেন তখন শাকিবের সামনে আমাকে বলে আমি উক্ত বিষয় নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করিলে আমাকে খুন করেবেন। আমার জীবন সংক্ষয় হয়ে আছে কিভাবে বাঁচবো তা বড় বড় মুশকিল। আমি সোহেল শিকদার এবং আমাকে বলেন এই বিষয়ে যদি কেউ কোন কিছু বলে তাহলে তোর খবর আছে শুধু তাই নয় এক পর্যায়ে বলেন লাভলু গাজীর এবং সেলিম মোল্লা সহ আর অনেকেই তোদের বাড়ি আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেব। আমার জমিতে জোরপূর্বক মাদ্রাসা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভয়ে জার্মাল নিয়ে চরম নিরাপত্তা হীনতায় ভুগতেছি। এক সংবাদ সম্মেলনে মনি আক্তার সে বলেন, সাংবাদিক ভাইয়েরা আপনাদের কাছে আমরা বিচার চাচ্ছি আমরা দুই হাত তুলে আমাদেরকে বাঁচান চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসী গাজী উহাদুজ্জামান লাভলুর অত্যাচারে আমরা দিশেহারা। আমরা পিরিজপুর ভান্ডারিয়াবাসী আজ আপনাদের কাছে হাত তুলছি সত্যর সাথে নিউজ করে তাদের বিচারের আওতায় আনুন। এক পর্যায়ে সংবাদ সম্মেলনে তারা আরো বলেন, ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ গাজী ওহাদুজ্জামান লাভলু বিগত স্বৈরাচার খুনি হাসিনা সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর নির্ভর নির্যাতন, জুলুম অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয় এলাকার লোকজন এমন কোন চরিত্রহীন কর্মকাণ্ড সে না করেছেন। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকেই নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছেন। মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন তার অত্যাচারে। বর্তমানে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানের পর সুদে ৪ হাসিনা সরকারের পতনের পর সে মুখোশ পাল্টে গেছে। তাই আওয়ামী লীগ থেকে এখন বিএনপিতে যোগ দিচ্ছেন! গুঞ্জন আছে যে প্রচুর টাকা বিনিময় সে পিরোজপুর জেলার বিএনপি সদস্য সচিবের পদ বাগিয়ে নিচ্ছেন। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন , আপনারা জাতির বিবেক আপনারা একটি আয়না আমরা চাচ্ছি আপনাদের এ ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে আমরা মাননীয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সহ সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি এবং ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছি আমরা যেন সুস্থভাবে চলাফেরা ছেলেমেয়েদেরকে নিয়ে বাঁচতে পারি। নয়তোবা তাদের অত্যাচার যদি বেশি হয় ছেলেমেয়ে নিয়ে আমরা বাছার জন্য খুবই কষ্টকর হবে। গাজী ওবায়দুজ্জন লাভলু, বিএনপির নাম বানিয়ে চলছে লুটপাট ও চাঁদাবাজি দখল বাজি শুধু তাই নয়। তার সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে পিরোজপুর ভান্ডারিয়া প্রতিটি ওয়ার্ডে চলছে তার অপকর্ম।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার পতনের পর হানাহানি ঠেকাতে পারলেও দলীয় নেতাকর্মীদের ‘চাঁদাবাজি ও দখলবাজি’ রোধে হিমশিম খাচ্ছে বিএনপি। আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতাচ্যুতিতে দলটির লাখ লাখ নেতাকর্মী হামলার শিকার হবেন- এমন আশঙ্কা করেছিলেন অনেকেই। এ আশঙ্কা থেকে ৫ আগস্ট বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দলীয় নেতাকর্মীদের আইন নিজ হাতে তুলে না নিতে কঠোর বার্তা দেন। এতে হামলা-হানাহানি নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও চাঁদাবাজি ও দখলবাজি সেভাবে রোধ করা যাচ্ছে না। এ অভিযোগে এরই মধ্যে পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবুও প্রতিদিনই চাঁদাবাজি-দখলবাজির অভিযোগ আসছে। কেন্দ্র থেকে বলা হচ্ছে, চাঁদাবাজিতে জড়িতদের বড় অংশই ‘নব্য বিএনপি’।বিএনপির একাধিক নেতা বলেন, শেখ হাসিনার পতনের পর দেশ অশান্ত করতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকারীরা বড় ধরনের একটা হত্যাযজ্ঞ করতে চেয়েছিল। এর মধ্যদিয়ে দেশে গৃহযুদ্ধাবস্থা তৈরি করতে চেয়েছিল তারা। নানা প্রচেষ্টায় দলীয় নেতাকর্মীদের কাজে লাগিয়ে এই পরিকল্পনা ঠেকিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর সারাদেশে যে চাঁদাবাজি-দখলদারিত্ব ঠেকাতে পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এতে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে এখানো পুরোপুরি ঠেকানো সম্ভব হয়নি। নেতাদের অভিযোগ, চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িতদের বড় অংশ হঠাৎ করে বিএনপি সাজা মানুষ-নব্যবিএনপি। কারণ, চাঁদাবাজির কয়েকটি ঘটনায় পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের নেতাকর্মীদের নামও এসেছে।
এ বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আসলে বিএনপির বিরুদ্ধে অপপ্রচার হচ্ছে বেশি। সাধারণত দেশের মিডিয়া খুব ভালো রোল প্লে করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে কিছু মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উদ্দেশ্যমূলকভাবে অপপ্রচারও চালানো হচ্ছে। আমি মনে করি, বিপ্লবের পর একটু সমস্যা থাকে। এটা কাটিয়ে ওঠা সক্ষম হবে।বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আমাদের বলেন, স্বৈরাচার হাসিনার পতনের পর বিএনপি নেতাকর্মীরা পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশে যাতে কোনো বেআইনি কাজে জড়িয়ে না পড়েন, সেজন্য যা যা প্রয়োজন সবই করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এ ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর চাঁদাবাজি, দখল, দলের নীতিপরিপন্থি বক্তব্যসহ নানা অভিযোগে বিএনপি ও অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যেখানেই অভিযোগ সেখানেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।