
বদিউজ্জামান-জলঢাকা, নিলফামারী :
নীলফামারী, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫: বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, নীলফামারী জেলা শাখার উদ্যোগে সাধারণ দাওয়াতি পক্ষ উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য উপশাখা প্রতিনিধি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত শাখা ও উপশাখার প্রতিনিধি এবং দায়িত্বশীলদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই সমাবেশে ছিলো প্রাণবন্ত আলোচনা, দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য এবং সংগঠনের দাওয়াতি কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার আহ্বান।
সভাপতি ও প্রধান অতিথির দিকনির্দেশনা
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নীলফামারী জেলা শাখার সভাপতি তাজমুল হাসান সাগর। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় বিতর্ক সম্পাদক জনাব মোঃ আসাদুল ইসলাম।
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন,
“দাওয়াতি কাজ ইসলামী আন্দোলনের মূল ভিত্তি। আদর্শ সমাজ ও রাষ্ট্র গঠনে ছাত্রশিবিরের কর্মীদেরকে দায়িত্বশীল, সৎ ও আদর্শিক চরিত্রসম্পন্ন মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষা, শালীনতা ও সেবার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে তরুণ সমাজ নানা চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। এই সময়ে আদর্শিক ভিত্তিতে গড়ে ওঠা একটি সচেতন ছাত্রসমাজই পারে জাতিকে সুপথে পরিচালনা করতে।
বিশেষ অতিথিদের মূল্যবান বক্তব্য
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন:
প্রভাষক মনিরুজ্জামান জুয়েল, জেলা সভাপতি, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন, নীলফামারী
আলহাজ্ব কামরুজ্জামান, উপজেলা নায়েবে আমীর, জামায়াতে ইসলামী, জলঢাকা উপজেলা
প্রভাষক মনিরুজ্জামান জুয়েল বলেন,
“শিক্ষা ও শ্রমজীবী জনগণের ঐক্যই একটি সুস্থ, সুন্দর ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজের ভিত্তি। ছাত্রশিবিরের আদর্শিক আন্দোলনের সাথে শ্রমিক সমাজের যে সম্পর্ক, তা আরও সুদৃঢ় করতে হবে।”
অপর বিশেষ অতিথি আলহাজ্ব কামরুজ্জামান বলেন,
“ইসলামী আন্দোলনের মূল চালিকাশক্তি হলো দাওয়াতি কাজ। উপশাখা পর্যায়ের প্রতিটি দায়িত্বশীলকে দাওয়াতি ময়দানে সচেতন, দক্ষ ও দৃঢ় প্রত্যয়ী হয়ে কাজ করতে হবে। কেবল বক্তৃতা বা স্লোগানে নয়, বাস্তব জীবনে ইসলামী আদর্শের অনুশীলনই আন্দোলনের প্রকৃত শক্তি।”
দিনব্যাপী আয়োজিত এই প্রতিনিধি সমাবেশে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত শতাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা পর্ব ছাড়াও ছিলো অভিজ্ঞতা বিনিময়, সফল দাওয়াতি কার্যক্রমের উপস্থাপন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নির্ধারণ।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা ও উপজেলা শাখার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বশীলগণ। বক্তারা প্রত্যেকে দাওয়াতি পক্ষের গুরুত্ব এবং উপশাখা পর্যায়ে দায়িত্বশীলদের কার্যকর ভূমিকার ওপর আলোকপাত করেন।
সমাবেশের শেষ পর্বে সভাপতি তাজমুল হাসান সাগর বলেন,
“ছাত্রশিবির কোনো প্রচলিত ছাত্রসংগঠন নয়, এটি একটি আদর্শিক আন্দোলন। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব হলো নিজেকে আদর্শিকভাবে প্রস্তুত করে সমাজে নৈতিক নেতৃত্ব প্রদান করা।”
তিনি আরও বলেন, উপশাখা পর্যায়ে দাওয়াতি কাঠামোকে শক্তিশালী করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে ইসলামী আদর্শের বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। সেই লক্ষ্যে এই দাওয়াতি পক্ষের কাজ হতে হবে নিবেদিত, পরিকল্পিত এবং সৃজনশীল।