
সাইমন :
ঢাকার উত্তরা দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান দুর্ঘটনার পর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের তীব্র ক্ষোভে দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা। এ বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বুধবার (২৩ জুলাই) নিজের ভেরিফায়েড সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে শফিকুল আলম লেখেন,
“গতকাল আমরা ৯ ঘণ্টা ধরে মাইলস্টোন স্কুলে ছিলাম। চাইলে তার আগেও চলে আসতে পারতাম, কিন্তু উপদেষ্টারা সংকট সমাধানে শান্তিপূর্ণ পন্থা অবলম্বন করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলেন। তারা বলেছিলেন, যতক্ষণ প্রয়োজন, ততক্ষণ আমরা থাকব। আমরা কেবল তখনই স্কুল ত্যাগ করেছি, যখন তা প্রাসঙ্গিক ও যুক্তিযুক্ত ছিল।”
🔎 দুর্ঘটনার তথ্য স্বচ্ছতার জন্য কন্ট্রোল রুম
তিনি জানান, দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই উপদেষ্টার নির্দেশনায় মাইলস্টোন কলেজে একটি ‘কন্ট্রোল রুম’ স্থাপন করা হয়েছে। এখান থেকে প্রতিদিন নিহত ও আহতদের হালনাগাদ তথ্য রেজিস্ট্রার বইয়ের সঙ্গে মিলিয়ে প্রকাশ করা হবে।
এই প্রক্রিয়ায় কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থী ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদেরও অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কন্ট্রোল রুমটি আজ বুধবার থেকেই কার্যক্রম শুরু করছে।
🕯️ শোকাহত পরিবেশ ও শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ
প্রেস সচিব লেখেন,
“আমরা শোকাহত পরিবারগুলোর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি এবং সেইসব শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি, যারা এখনো এই ভয়াবহ ঘটনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। অনেক শিক্ষার্থী তাদের চোখের সামনে দেখা ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন এবং মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।”
তিনি বলেন, ২০০২ সাল থেকে দেশের বহু দুর্ঘটনা সংবাদ কভার করার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি জানেন,
“বাংলাদেশে প্রাণহানির প্রকৃত সংখ্যা গোপন রাখা প্রায় অসম্ভব। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল ও প্রশাসনিক সূত্র থেকে তথ্য উঠে আসে। মাইলস্টোন কলেজ কর্তৃপক্ষ চাইলে প্রতিদিনের উপস্থিতি তালিকা বিশ্লেষণ করে নিখোঁজদের শনাক্ত করতে পারে।”
🏥 তথ্য আদান-প্রদান ও সরকারি অবস্থান
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও সামরিক বাহিনী আহতদের তথ্য নিয়মিত হালনাগাদ করছে বলেও তিনি জানান।
সরকারের পক্ষ থেকে কোনো তথ্য গোপন করার চেষ্টা নেই বলেও স্পষ্ট উল্লেখ করেন শফিকুল আলম।
“সরকারের পক্ষ থেকে মৃত্যুর সংখ্যা গোপন বা কম দেখানোর কোনো কারণ নেই,” — বলেন তিনি।
🕊️ শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা
দুর্ঘটনায় নিহতদের স্মরণ করে তিনি লেখেন,
“যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তারা শহীদ। এটি একটি জাতীয় ট্র্যাজেডি। আসুন, আমরা যেন ভবিষ্যতে এমন ঘটনা প্রতিরোধ করতে পারি, সে লক্ষ্যে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করি।”
🔢 মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে
আইএসপিআর মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ৩১ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী নিহত ২৭ জনের মধ্যে ২৩ জনই শিশু। রাতে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩২ জনে।