
জহুরুল ইসলাম জপি-শেরপুর :
শেরপুর সদর উপজেলার ২ নং চরশেরপুর ইউনিয়নের নবগঠিত জেলা বিএনপির এক নেতার সংবর্ধনা সভার মঞ্চে আওয়ামী লীগ নেতার উপস্থিতি নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঞ্চল্য ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে নবগঠিত জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক কামরুল হাসান এর সংবর্ধনা সভায় এঘটনা ঘটে। চরশেরপুর নূর মোহাম্মদ গণ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত উক্ত সংবর্ধনা সভার মঞ্চে থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম রেজা কে মঞ্চের সামনে সারিতে উদ্বোধক হিসেবে বসে থাকতে দেখা যায়। এনিয়ে বিএনপি ও এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্যে ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল ২৭ জুন শুক্রবার চরশেরপুর ইউনিয়নের যুবদল ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের মধ্যে এক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ ও সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়।সেই সংবর্ধনা সভা ও ফুটবল ম্যাচের উদ্বোধন করেন শেরপুর সদর থানা আওয়ামী লীগের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক চেয়ারম্যান সেলিম রেজা। এতে সভাপতিত্ব করেন শেরপুর জেলা কৃষক দলের সাবেক সভাপতি আমিনুল ইসলাম আঙ্গুর। উপস্থিত ছিলেন শেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মোশারফ হোসেন ও শেরপুর সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি মো: আজহার আলী। সংবর্ধনা সভা উপলক্ষে এলাকায় পাঁচটি তোরন নির্মাণ করা হয়। আর এতে সার্বিক সহযোগিতা করেন চরশেরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম রেজা।
বিগত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে এই চরশেরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা ফ্যাসিস্ট সরকারের এমপি ছানুয়ার হোসেন ছানু ও জেলা পরিষদ এর সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির রুমানের সাথে ছাত্রদের বিরুদ্ধে মিছিলে অংশ নেন। এবং ছাত্র জনতার উপর হামলায় সরাসরি জড়িত ছিলেন। এবং সেই দিন শেরপুরে শহীদ মাহবুব সহ আরও চারজন শহীদ হন। কথিত আছে বড় অংকের টাকা ও বিশাল প্রতিপত্তির কারণে তাকে ছাত্র হত্যার ঘটনায় আসামি হতে হয়নি কতিপয় বিএনপির নেতাদের কারণে। এছাড়াও ওইদিন সেলিম চেয়ারম্যান এর পুত্র ছাত্রলীগ নেতা সজীব কে অস্ত্র হাতে মিছিলে হামলা করতে দেখা যায়।
৫ আগস্ট স্বৈরাচারী সরকার পতনের সাথে সাথেই ছাত্র জনতা ছাত্র হত্যার অভিযোগে সেলিম চেয়ারম্যান এর শহরের বাগরাকসা এলাকায় অবস্থিত বাসায় ব্যাপক ভাংচুর চালায়। তখন থেকেই তিনি আত্মগোপনে থেকে বিএনপির কিছু নেতাকে ম্যানেজ করে ইউনিয়ন পরিষদ এর কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এনিয়ে ইউনিয়ন যুবদল এর আহবায়ক শাকিল আহমেদ ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চালাতে বাধা দিলে তাকে পর্যন্ত হত্যার হুমকি দেয় সেলিম চেয়ারম্যান।এছাড়া ইউনিয়ন যুবদলের এক যুগ্মআহবায়ক রাজিব সরকার সাধন কে তার ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী দিয়ে তাকে বাড়িতে গিয়ে হুমকি দিয়ে আসে। তারা উভয়ে এ বিষয়ে শেরপুর সদর থানায় একটি করে জিডি করেছিলেন। পরবর্তীতে যুবদলের পক্ষ থেকে সেলিম চেয়ারম্যান কে গ্রেফতারের দাবিতে একটি মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছিল।
এব্যাপারে চরশেরপুর ইউনিয়ন যুবদল এর আহবায়ক মো: শাকিল বলেন , সেলিম চেয়ারম্যান এর সাথে আমাদের দলীয় কিছু নেতা আপোষ করে আর্থিক সুবিধা ভোগ করছে। আমি চাই ওইসব নেতার মুখোশ উন্মোচন করে দলীয় ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ এব্যাপারে ব্যবস্থা নিবে বলে আশা করি।
বিষয়টি নিয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রভাষক এবিএম মামুনুর রশিদ পলাশের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ফ্যাসিস্ট নেতাদের সাথে সম্পর্ক থাকলে সাংগঠনিক ভাবে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে সংর্বধনা সভার সভাপতি কৃষক দলের সাবেক সভাপতি আমিনুল ইসলাম আংগুরের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।