
স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে গৃহবধূর আত্মহত্যা-
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা।
স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন,শামীমা আক্তার সাথী (২৭), নামের একজন। যার বর্ণনা করেছে তার আপন ভাই মোঃ শামীম (২৩), শামীম তার বক্তব্যে বলেন,আজ আমি আমার সাথে ঘটে যাওয়া কিছু ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
প্রত্যেক বাবা-মা চায় তার মেয়ে কে ভালো ধনী বড়লোক ফ্যামিলির সাথে তার মেয়ে কে বিয়ে দিতে যেনো তার মেয়ে একটু সুখে শান্তিতে থাকে । আমার মা-ও তাই করে ছিলো আমার বোনকে একজন বড়লোক নেশা-খোর বেকার ছেলের কাছে বিয়ে দিয়েছিলো। আমার বোন দেখতে মোটামুটি ভালোই আর মন এর দিক দিয়ে সাদাসিধা মাটির মানুষ ছিলো। বিয়ের পর থেকেই আমার বোন এর ওপর অনেক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো তার নেশা-খোর জামাই। এর জন্য আম্মুর সাথে অনেক বার কথা কাটাকাটি হয় আম্মু বোনকে অনেক বার আমাদের বাসায় নিয়ে আসে এই জামাই এর সংসার করাবো না এই বলে। বোন আমার বাবা হারা মাটির মানুষ।
এতো কিছু হবার পর বোন বলতো আমি আমার স্বামীর সংসার করবো। এই নেশা-খোর বেকার ছেলের সংসার করতে করতে বোনের দুইটি ছেলে সন্তান হয়, একজন এর বয়স এখন ১১ আরেক জন এর ৪বছর । কিন্তু আমার বোন এর কপালে সুখ নেই জামাই প্রচুর শারীরিক নির্যাতন করে।
নির্যাতন আরো বেড়ে যায় যখন মা আমাদের সবাইকে এতিম বানিয়ে না ফেরার দে-শ এ চলে যায়।
মা,মারা যায়ার পর কিছু টাকা আমাদের দুই ভাই এর জন্য রেখে যায়। ওই টাকার ভাগের জন্য আমার বোনকে অনেক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে।
আমরা দুই ভাই আমার বোনকে অনেক ভালোবাসি এ জন্য বলি আম্মুর টাকা ভাগ করে যতো টাকা পাবে তা দিয়ে দিবো। কিন্তু সরকারি ব্যাংকের হিসাব একটু তো সময় লাগবেই। তার জন্য সেই হিংস্র পশুর ধৈর্য হচ্ছিল না। এই ঈদের আগের দিনও বোন ও তার দুই বাচ্চা সহ বাড়ি থেকে বের করে দেয়। বলে টাকা না নিয়ে আসলে তোরে বাড়িতে ঢুকতে দিবো না। আর খালি হাতে আাসলে জানে মেরে ফেলবে আরো অনেক কিছু। আমরা এসব শুনে বোনকে একেবারে গ্রামে নিয়ে আসার চিন্তা করি। কিন্তু বোন তার দুই সন্তানের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আমাদের সাথে গ্রামে আসার জন্য রাজি হয় না। তার পর আমি ভাগিনাদের ঈদের শপিং এর জন্য কিছু টাকা দিয়ে পাঠিয়ে দেই।
ঘটনার তারিখ : ৫ এপ্রিল ২০২৫।
স্বামীর নির্যাতন সইতে না পেরে ৫ এপ্রিল ২০২৫ আমার বোন ফজরের নামাজ পরে সকাল সকাল এক কাপড় এ বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। আমার বোন কখনো বোরকা ছাড়া বাসা থেকে বের হয়না। আর কাল বোরকাও পরে নাই সাথে ফোনও নেয়নি। তারা আমাকে দুপুর ১১ টার পর জানায় বোন কাউকে না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে গিয়েছে। আমার দুই ভাই তখন গ্রামে ছিলাম। বোনের এই কাহিনী শুনে আমার টঙ্গির উদ্দেশ্যে রওনা দেই দুপুর ৩টায় আমাদের নুরুল্লাপুর থানা থেকে কল আসে টঙ্গী রেলস্টেশন এর পাশে শামীমা আক্তার সাথী নামে একজন ট্রেন এক্সিডেন্ট করে মা-রা গেছে আমার বোন এর নাম সাথী। ঘটনা শুনে সাথে সাথে টঙ্গীর উদ্দেশ্য রওনা দেই। কাল রাত ১০টার পর টঙ্গী রেলস্টেশন থানায় গিয়ে কথা বলেছি। তাদের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম বোন নাকি আত্মহ-ত্যা করেছে। কিন্তু আমার বোন তো এমন কাজ কখনো করতে পারে না কারোন তার দুইটা ছেলে সন্তান আছে। সে অনেক ধার্মিক ও নামাজি। আর করেও থাকলে আমার বোন এর উপর কতটা শারীরিক মানসিক নির্যাতন করলে সে এই কাজটি করার সিদ্ধান্ত নিতে পারে!
মা,মা-রা গেছে ১০মাস হয়নি এখন আমার বোন টাও আমাদের ছেড়ে চলে গেল এখন আমার কি করার? বাবা ছাড়া অনেক কষ্টে বড় করছেন মা আমাদের। মা চলে যাওয়ার পর এতো অল্প বয়সি বোনকে হারাবো কখনো চিন্তা করিনি। আমরা আমার বোনের পুরো ঘটনা তদন্ত করে এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
এটি আমার বোনের দেহ রেললাইনে পড়ে আছে, অসংখ্য জায়গায় নির্যাতনের চিহ্ন,
মার্ক করা যে চিহ্নগুলো দেখা যাচ্ছে এটি দেখে আপনারাই বলেন এগুলো কিসের দাগ?
এমন দাগ আমরা বোনের পুরো শরীরে আছে। মা থাকতে, তখন জামাই এর সাথে রাগ করে আমাদের বাসায় আসতো তখন বোন কা-ন্না করে মা কে বলতো দেখো মা তোমাদের জামাই আমাকে কতো নির্যাতন করে ভালোবাসা দিসে। মা চোখের পানি ছেড়ে বোনকে বলতো সরি মা আমাকে ক্ষমা করে দে আমি জেনে শুনে তোর জীবনটা নষ্ট করে দিসি। এমন করে মা মাফ চাইছে বোনের কাছে অনেক বার। এখানে মূল কোথায় আসি, গ্রাম থেকে সরাসরি কাল টঙ্গী রেলওয়ে স্টেশন থানায় যাই ১০:৩০ মিনিট এ তখন দুলাভাই ফ্যামিলির লোকজন ছিল ওখানে উপস্থিত। আমারো খালাতো ভাই বোনেরা ছিলো। ভিতরে অনেক কথা হয় এর মধ্যে মেন কিছু কথা বলি থানার অফিসার আমাদেরকে রাতে বলে মা-মলা ছাড়া আপনারা লা-শ নিতে পারবেন না। আর একটি কথা বলে আমার বোনকে নাকি তারা বেওয়ারিশ লা-শ হিসাবে ফাইল করে ফেলছে। আমি আজকে আইনগতভাবে যা জানতে পারলাম এসব লা-শ এর পরিবার-পরিজন যদি ৩দিনের মধ্যে না পায় তাহলে তারা বেওয়ারিশ হিসাবে গণ্য করে। কিন্তু আমাদের বোনের ঘটনার ৫/৬ ঘন্টার পরেই তো আমাদের ও তার হাজবেন্ডের খবর পেয়ে যায় পুলিশ। তাহলে কেন বেওয়ারিশের খাতায় নাম দিলো? আজকে ৫ এপ্রিল ১১টায় রেলওয়ে থানায় গেলাম পরে পুলিশ আমাদের লা-শ দেবার জন্য পাগল হয়ে গেছে বলতেছে লা-স আমরা পোস্ট-মর্টেম করে ফেলছি তাড়াতাড়ি এসে নিয়ে যান। কিন্তু কাল রাতে তো এমন কথা ছিল না! আর আমার যানা মতে আমাদের অনুমতি ছাড়া পোস্ট-মটমো করতে পারবে না। আমার কেন জানি মনে হচ্ছে এখানে টাকার বিনিময় কোন কাজ হয়েছে । আমরা সত্যের অনুসন্ধান করে বিচার চাই। আরো একটি কথা ট্রেন এক্সি-ডেন্ট সবাই কম-বেশি দেখেছেন। এসব হলে শরীরের অংশ খন্ডবীখন্ড হয়ে যায়। কিন্তু আমার বোনের কোনো অংশের তেমন কিছুই হয়নি। মাথায় আঘাতের দাগ আর এক পায়ের ৫টি আঙ্গুল পড়ে গেছে। এখন আপনারাই বলেন আমার বোনের সাথে কি হয়েছে। আর এর সঠিক বিচার চাই। আমাদের কি করলে সঠিক বিচার পাবো আপনারা বলুন। আপনাদের ছোট ভাই হিসেবে আমাকে একটু সঠিক সিদ্ধান্ত দিন। যেন আমার বোনের আত্মা শান্তি পায়। এভাবেই ঘটনা গুলো তুলে ধরে ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন। বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।