
মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে নারীকে হত্যা করে গুম করার চেষ্টা: আসামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
ক্রাইম রিপোর্টারঃ
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলায় এক অবিবাহিত নারীকে হত্যা করে আসামী তার শয়ন কক্ষে রেখে গুম করার চেষ্টার অভিযোগে হাবিবুর রহমান মিজি (৩৫) নামের এক আসামীকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায় ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে আদালত।আজ বুধবার(৫ মার্চ) দুপুর বারোটার দিকে মুন্সীগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক ড. মোঃ আলমগীর এর রায় ঘোষণা করেন।আসামী হাবিবুর রহমান মিজি টংঙ্গীবাড়ী উপজেলার উত্তর কুরমিরা গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মিজির ছেলে।রায় ঘোষণার সময় আসামী আদালতের উপস্থিত ছিল।পরে তাকে সাজা পরোয়ানা মূলে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।
মামলা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে,টংঙ্গীবাড়ী উপজেলার লাখারন গ্রামের মৃত শফি উদ্দিনের মেয়ে মামলার ভিকটিম সালেহা উদ্দিন ওরফে ডলি(৩০) একজন অবিবাহিতা নারী।তার মানসিক সমস্যা রয়েছে।২০১৮ সালের ২ মার্চ দুপুরে কাউকে না বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। পরে তাকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।পরে সংবাদপত্রের মাধ্যমে জানা গেছে আসামী হাবিবুর রহমান মিজি লৌহজং উপজেলার নওপাড়া গ্রামের হাজী কালাম মোল্লার বাড়িতে ভাড়া থাকে। সেখানে একটি মহিলার লাশ গোপন কক্ষে রাখা হয়েছে। সংবাদ পেয়ে ভিকটিম ডলির ভাই সেখানে গিয়ে তার বোনের ছবির সাথে লাশের ছবির মিল পাওয়া বলে জানতে পারে।আসামী হাবিবুর রহমানকে স্থানীয় লোকজন মেয়েটির কথা জিজ্ঞাসা করলে ওই সময় তিনি বলেন পদ্মা নদীতে ভেসে আসা লাশটি ঘরের ভিতর রেখে দিয়েছে।লাশের সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি নানাভাবে আশেপাশের লোকজনদের ভুল বুঝাতে শুরু করেন।এক পর্যায়ে গত ২০১৮ সালের ৭ মার্চ পুলিশ এসে আসামী হাবিবুর রহমানের স্বয়ং কক্ষ থেকে মহিলার লাশ উদ্ধার করে এবং হাবিবুর রহমান মিজিকে আটক করে।এ সময় লাশের সুরা তাহাল প্রস্তুত করে লাশটিকে হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।এ ঘটনায় মৃত নারীর ভাই টংঙ্গীবাড়ী উপজেলার লাখারন গ্রামের মৃত শফি উদ্দিন ছেলে নূর মোহাম্মদ দপ্তরি (৬০) বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ২২ মার্চ টংঙ্গীবাড়ী থানায় বোনকে হত্যার দায়ে আসামী হাবিবুর রহমান মিজিকে আসামী শ্রেণীভুক্ত করে মামলা করে।এ ঘটনায় ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামি হাবিবুর রহমান মিজিকে দোষী সাব্যস্ত করে বিচারক ওই রায় ঘোষণা করেন।বিষয়টি নিশ্চিত করেন ওই আদালতের বেঞ্চ সহকারী হাছান সারওয়াদী।এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আরিফ হোসেন জানান,একজন অবিবাহিত নারী যার মানসিক সমস্যা রয়েছে। একজন মানসিক নারীকে গোপনে হত্যা করে তার নিজ স্বয়ং কক্ষে রেখে লাশ গোপন করার চেষ্টা করে।স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে এবং আসামিকে পুলিশ হেফাজতে নেয়।এ ঘটনায় আসামী হাবিবুর রহমান মিজি নামের আসামীকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন আদালত।ঘটনার পেতে আদালত সঠিক রায় ঘোষণা করেছেন।এ রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট পোষণ করছি।