
বিএনপির ‘তিস্তা আন্দোলন’ ঘিরে উত্তরের ৫ জেলায় নতুন আশা
👇
উত্তরাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন নিয়ে আন্দোলনের মাঠে বিএনপি। পটপরিবর্তনের পর এ দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’ নামের একটি সংগঠন। প্রধান সমন্বয়কারী হিসেবে সংগঠনটির হাল ধরেছেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু। এবার তিস্তা বাঁচাতে নদীপাড়ের ১১ পয়েন্টে দুদিনের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ঘিরে আশা দেখছেন এ অঞ্চলের মানুষ।
আজ সোমবার, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৫, তিস্তার লালমনিরহাট প্রান্তে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’-স্লোগানে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এতে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এ ছাড়া কর্মসূচিতে অংশ নেবেন দলের মহাসচিবসহ শীর্ষ ১৪ নেতা। তিস্তাবেষ্টিত বিভাগের পাঁচ জেলা রংপুর, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধার ১১টি পয়েন্টে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়কারী ও কাউনিয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হক ভরসা বলেন, ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তার দুইপাড়ের কর্মসূচির সার্বিক প্রস্তুতি শেষ। আশা করছি, দুদিনে রংপুরের কাউনিয়া তিস্তা পয়েন্ট ও লালমনিরহাট দুই পয়েন্টেই লাখ লাখ লোকের জনসমাগম হবে। এ আন্দোলন কর্মসূচিতে যোগ দিতে তিস্তাপাড়ে আসছেন বিএনপির শীর্ষ ১৪ নেতা। লালমনিরহাটের দুই পয়েন্টে থাকবেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। উলিপুরের থেতরাই পয়েন্টে থাকবেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, রাজারহাটের সরিষাবাড়ি পয়েন্টে সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, গঙ্গাচড়ার মহিপুর ব্রিজ পয়েন্টে জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের হরিপুর তিস্তা ব্রিজ পয়েন্টে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেবেন ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। এ ছাড়া দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বাকিপয়েন্টগুলোয় উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দেবেন।
এদিকে কর্মসূচি ঘিরে এ অঞ্চলের মানুষের মনে আশার সঞ্চার হয়েছে। তারা বলছেন, তিস্তার পানির দাবি ও মহাপরিকল্পনা ছাড়া তারা পরিত্রাণ পাবে না। এ কর্মসূচি সফল করে সরকারের কাছে তাদের দাবির গুরুত্ব তুলে ধরাই এখন মূল লক্ষ্য।
গঙ্গাচড়ার চর ইচলীর বাসিন্দা শাহিনুর রহমান বলেন, যেভাবেই হোক আমরা তিস্তার পানির দাবি ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন চাই। আগের সরকার তো লোভ দেখিয়ে ভোট নিয়েছে। আমাদের দাবি পূরণ করেনি। আমরা এ সরকারের কাছে দাবি জানাতে আন্দোলনে যাব, যাতে দ্রুত তিস্তার কাজ শুরু হয়।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু কালবেলাকে বলেন, ‘তিস্তা আন্দোলন’ বিএনপির নয়, এটা গণমানুষের আন্দোলন। দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে এ আন্দোলন কোনো ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দলের নয়। সহায়-সম্বল হারানো তিস্তাপাড়ের সাধারণ মানুষরাই এ আন্দোলনের প্রাণশক্তি। এটি একটি সামাজিক আন্দোলন। এ আন্দোলনের সঙ্গে যেসব সামাজিক সংগঠন দীর্ঘদিন থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি, তারাও কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়েছেন। এ ছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক দলও এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করবেন।