
জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ– “অন্তর্বর্তী সরকারকে বিদেশীদের কাছে দেশ বিক্রির অধিকার দেয়া হয়নি”
বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস খোলার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে মুসলিম নাগরিক সমাজ। আজ ৩০ অক্টোবর, ২০২৪ ইং রোজ- বুধবার, রাজধানীর মালিবাগ মোড় ফালইয়াফরাহু চত্বরে এক প্রতিবাদ সভায় তারা এই বক্তব্য জানান। বক্তারা বলেন, জাতিসংঘের কথিত মানবাধিকার কমিশন সাম্রাজ্যবাদীদের একটি কালো হাত। এরা মানবাধিকারের নামে বিভিন্ন দেশে সমকামীতা, নাস্তিকতার মত কুফরী মতবাদ জারি করে এবং ঐ দেশের সাম্রাজ্যবাদীদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করে। আলোচকগণ বলেন, সাধারণ জনগণের জীবনের বিনিময়ে কষ্টে অর্জিত এই নতুন স্বাধীনতা। অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হয়েছে দ্রুত নির্বাচন দেয়ার জন্য। কিন্তু বিদেশী সাম্রাজ্যবাদীদের কাছে দেশ বিক্রির অধিকার দেয়া হয়নি। মুসলিম নাগরিক সমাজ সরকারকে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের অফিস স্থাপনের সিদ্ধান্ত বাতিল করে দেশ ও জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে বলেন।

সমাবেশে মুসলিম সচেতন নাগরিক সমাজ দেশ ও জাতির কল্যাণে মোট ১৩টি দাবী উত্থাপন করেন। দাবীগুলো হলো-
১ম দফা – নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুবারক শানে কোন কুলাঙ্গার মানহানী করলে তার শরঈ শাস্তি বাস্তবায়ন করতে হবে।
২য় দফা – পাঠ্যক্রমে নূরে মুসজাসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মহাসম্মানিত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের পবিত্র জীবনী মুবারক অন্তর্ভূক্তকরণ এবং পবিত্র দ্বীন ইসলাম নির্ভর শিক্ষানীতি প্রণয়ন করতে হবে।
৩য় দফা – পবিত্র কুরআন-সুন্নাহর ভিত্তিতে সংবিধান সংস্কার করতে হবে। শরীয়তবিরোধী কোন প্রকার আইন ও কুফরী মতাবাদ প্রবেশ করানো যাবে না।
৪র্থ দফা– বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কোন অফিস স্থাপন করা যাবে না।
৫ম দফা– দ্রব্যমূল্য ও চিকিৎসা সেবার উর্ধ্বগতি হ্রাস করতে হবে। মূল্য বা খরচ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে।
৬ষ্ঠ দফা– পাহাড়ে উপজাতিদের আদিবাসী বলা যাবে না। উপজাতিদের পৃথক রাষ্ট্র গঠনের ষড়যন্ত্র দমন করতে হবে। পাহাড়ে কথিত রাজার শাসনের অবসান ঘটাতে হবে। সারা দেশে একই আইনে শাসন চলবে, পার্বত্য এলাকায় ভিন্ন আইন চলবে না।
৭ম দফা– নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপ ভ্রমণে সর্বপ্রকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। সারা দেশে যেভাবে মানুষ প্রয়োজন মাফিক ভ্রমণ করতে পারে, নারিকেল জিঞ্জিরা দ্বীপেও একইভাবে সারাবছর ভ্রমণ করতে পারবে।
৮ম দফা– হিন্দুত্ববাদ ও ভারতসহ বিদেশী রাষ্ট্র তোষণ বন্ধ করতে হবে। ফিলিস্তিন, ভারতসহ পৃথিবীর যে প্রান্তেই মুসলিম নির্যাতন হবে সরকারকে রাষ্ট্রীয়ভাবে তার প্রতিবাদ করতে হবে। নির্যাতিত মুসলমানদের সহযোগীতার জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
৯ম দফা– জরায়ু ক্যানসার প্রতিরোধের টিকার নামে মেয়েদের বন্ধাত্ব তৈরী করা করা যাবে না। এইচপিভি টিকা কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। গত কয়েকদিন টিকা দিয়ে শেরপুর, চট্টগ্রাম, ভোলা, ঝিনাইদহ, পটুয়াখালীতে হাজার হাজার ছাত্রী অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে এবং অনেক ছাত্রী মারাও গেছে। এই সকল ছাত্রীদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
১০ম দফা– বাসাবাড়িতে নতুন গ্যাস সংযোগ দিতে হবে। অবৈধ সংযোগগুলোকে বৈধ ভাবে সংযুক্ত করলে রাষ্ট্রীয় আয়ও বাড়বে।
১১তম দফা– পলিথিন নিষিদ্ধ নয় রিসাইক্লিং পদ্ধতি চালু করতে হবে। পলিথিন ব্যবসার সাথে জড়িত কোটি কোটি মানুষের আর্থিক ক্ষতি করা চলবে না।
১২তম দফা– নদী ও সাগরে মাছধরার উপর কোন রূপ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে জেলেদের রুটি-রুজির উপর আঘাত দেয়া চলবে না। সারা বছর মাছ ধরতে দিতে হবে।
১৩তম দফা- ভারত থেকে পাথর আমদানি বন্ধ করতে হবে। বাংলাদেশ থেকেই পাথর ও বালি উত্তোলন করতে হবে। এজন্য বাংলাদেশের পাথর ও বালি উত্তোলনে উপর কোন নিষেধাজ্ঞা দেয়া যাবে না। সর্ব প্রকার নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে। এই কাজের জড়িত লক্ষ লক্ষ বেকার লোককে কর্মে ফিরিয়ে আনতে হবে।
প্রতিবাদ সমাবেশে সচেতন নাগরিক সমাজের শতাধিক কর্মী এবং দুই শতাধিক আম জনতা উপস্থিত ছিলেন।