
৫ই আগস্টের গণঅভ্যুত্থান, একজন সামান্তা রহমান -কিছু ঘটনা বহুল কলাম –
মোঃ শিহাব উদ্দিন, সম্পাদকীয় কলাম, দৈনিক জনজাগরণ।
গণঅভ্যুত্থান, একটি স্বাভাবিক ঘটনা ছিল না, ছিল অস্বাভাবিক অসম্ভব, যার বিশ্লেষণ না করলেই না। বাংলাদেশের প্রতিটা জনগণকে বিষয়গুলো বোঝা বা অবজারভেশন করা উচিত।
সূত্রপাত কোটা আন্দোলনকে নিয়ে, দরকার কোটা, কোটা আন্দোলনকারীরা বৈষম্য বিরোধী ব্যানারে আন্দোলনে নেমে পড়ে, বয়স বেড়ে যাচ্ছে, এত স্বল্পকোটাই কিভাবে চাকরি হবে নিডি ফ্যামিলি থেকে উঠে আসা এই সকল মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের যদি মূল্যায়ন না করা যায় একদিন মেধাহীন হয়ে পড়বে এটা সমস্ত রাজনীতিবিদরা এমনকি অভিভাবকরা বুঝতে পারে। জুলাই মাসে আন্দোলনটা এমন একটা পর্যায়ে আছে যেখানে ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে অভিভাবক রাও যুক্ত হয়ে যায়। কলেজ পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরাও আন্দোলনে আসলে তার পিছনে তার বাবা মা বড় ভাই এরাও আন্দোলনের সংযুক্ত হয়ে যায়।
সরকার সমঝোতার পথ সত্ত্বেও বিকল্প উপায় দমনের সিদ্ধান্ত নেয় এবং এই আন্দোলনটা পুরোপুরি সাধারণ মানুষদের পক্ষে চলে যাই, বোকা সরকার আরো কঠোর হয়, সরকারের অহমিকা আর অহংকার বেড়ে যায়, ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক বাধা হয়ে দাঁড়ায় কিছু রাঘববোয়াল এবং চাটুকার কিছু প্রশাসন।
এবার আসি আসল কথায়, ছাত্র আন্দোলনের রাজনীতিবিদরা কোথায় ছিলেন কি করছিলেন। আপনার কি মনে হয় আমরা দেখেছি ঢাকা ইউনিভার্সিটিতে হলে হলে ঢুকে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে প্রশাসন এবং সরকার দলীয় লোকজন বেধড়ক নির্যাতন করে হল থেকে বের করে দিতে বাধ্য করেছে।
আর এগুলো নিয়ে মিনিটে মিনিটে সংবাদ সম্মেলন করেছে রাজনীতিবিদরা। ছাত্ররা যখন বিপদে সেই মুহূর্তে প্রথম সারীর রাজনীতিবিদরা অ্যারেস্ট হতে থাকেন,তাদের রিমান্ড টানতে থাকেন। হাই কমান্ডকে বলতে দেখা গেছে দফা এক দাবি ১ শেখ হাসিনার পদত্যাগ। বিএনপি মহাসচিব সংবাদ সম্মেলন করে প্রতিনিয়ত ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। দীর্ঘ ১৭ বছর উদ্দেশ্য একটাই ছিল শেখ হাসিনার একটা নির্মম বিদায় হবে। ঠিক নির্মম বিদায়ী হয়েছে।যারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছে বা পিছন থেকে সারা বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিয়েছে তাদেরকে অবশ্যই সম্মান করতে হবে। যে দেশের সরকার ছিল একটা পিওন থেকে হাই কমান্ড পর্যন্ত সরকারের তাবেদারি করতো, সেই সরকারকে হঠানো খুব সোজা ছিল না যারা এই অসম্ভবকে নেতৃত্ব দিয়েছেন আসুন আগামী দিনে আমরা তাদের জন্য এমন কিছু করি যেন আগামী প্রজন্ম এগুলো মনে রাখেন।
আমি দু একটা কথা বলব আমি জাতীয়তাবাদী আদর্শ ধারণ করি , আমরা পুরো সময়টা আন্দোলন করেছি এবং করিয়েছি কোন কিছু পাওয়ার জন্য না একটি স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব রাষ্ট্র যেখানে থাকবে না কোন হানাহানি, রক্তপাত সুন্দর আগামীর ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ করতে সবার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ওনার ৩১ দফায় বাঙালির জাতির মুক্তির কথা বলেছেন। একটি জাতীয় ঐক্যমতের সরকারের কথা বলেছেন। একটি জাতীয় ঐক্যমতে সরকার হলে দ্রুত দেশ উন্নতি হবে বলে মনে করি।
ছোট দুই একটা ঘটনা বলি, মাদারীপুরের সামান্তা রহমান ৩ আগস্ট যখন গ্রাফিতি আকানো হলো দেওয়ালে দেওয়ালে তখন তার বন্ধুবান্ধব নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়লেন এই আওয়ামী ঘরোনার একজন মানুষ যার নেতৃত্বে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ ছাত্র-ছাত্রী এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে বিজয় সিরিয়ে এনেছে। আপনি কিভাবে মূল্যায়ন করেছেন আজ তাকে, আপনি কি দিয়েছেন তাকে, আপনার কাছ থেকে কিছু চাই নাই, সে চেয়েছে তার দেশটা ভালো থাকুক।
আমার দৈনিক জনজাগরণ পত্রিকা ৮ থেকে ১০ জন সাংবাদিক, সাংবাদিক সুমন খানের নেতৃত্বে মিরপুর ১০ নাম্বার ৫ তারিখ পর্যন্ত অবস্থান করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে এবং প্রতিনিয়ত নেট বন্ধ থাকলেও বিদেশি নেট অ্যাড করে সারা বাংলাদেশের নিউজগুলো প্রকাশ করেছে, তার পায়ে ইনজুরি হয়েছে কেউ কি খবর নিয়েছেন সে কেমন আছে।
সার্জেন্ট আব্দুল বাতেন,সার্জেন্ট রোশন, সার্জেন্ট জাহাঙ্গীর, সাবেক ছাত্রনেতা সারোয়ার আলম, সাবেক ছাত্রনেতা রিপন আহমেদ, মনজুরুল আলম, সার্জেন্ট ইমামুল হক, সার্জেন্ট রশিদি মাহবুব, সার্জেন্ট খলিলুর রহমান, ওয়ারেন্ট অফিসার আখতারুজ্জামান, সিনিয়র ওয়ান্ট অফিসার রফিকুল ইসলাম, ডাক্তার কায়সার সহ কয়েক হাজার অবসরপ্রাপ্ত ও বেসরকারি ছাত্রনেতা যুব নেতা, সাথে ছিলেন শহীদ রমিজ উদ্দীন স্কুল এন্ড কলেজ এর ছাত্র-ছাত্রীরা, নির্ঝর স্কুল এন্ড কলেজ এর ছাত্রছাত্রীরা, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা। বিএফ শাহীন কলেজের ছাত্রছাত্রীরা, একটি ছোট কথা বলি একজন বাবা তার ক্লাস নাইনে পড়ুয়া মেয়েকে হাতে একটা লাঠি দিয়ে বলছেন জা মা দেশটা স্বাধীন করে তবেই ঘরে ফিরবি। প্রতিনিয়ত অত্যন্ত প্রহরীর মত ভ্যানগার্ড সিকিউরিটি গার্ড হিসাবে ছাত্র-ছাত্রী আমজনতার পাশে অবস্থান ছিলে দৈনিক জনজাগরণ । আওয়ামী লীগের লোকজন জানতো আমার অফিস থেকে খাবার সাপ্লাই হচ্ছে প্রতি নিয়ত আমরা পুলিশ বেষ্টনীর ভিতরে ছিলাম। আমাদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশে এগিয়ে যাক, কোন বাধা কোন ভয় আমরা কর্ণপাত করি না। একটা স্বাধীন ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য সর্বদা প্রস্তুত থাকবো এবং আগামী দিনে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে দ্রুত একটি গণতান্ত্রিক সরকার দেখব এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।
দৈনিক জনজাগরণ পত্রিকার যারা আহত হয়েছেন আমি অনুরোধ করব অন্তত একবার তাদেরকে দেখুন তারা কিছু চায় না তারা চাই শুধু এই দেশটা ভালো থাকুক। আমরা জাতীয়তাবাদী আদর্শের সৈনিক আমরা চাই আমার দল অতিতেও মাথা নত করে নাই সামনেও করবেনা একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করে দেশে একটি সব দলকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে দেশকে এই প্রত্যাশা কামনা করি।
লেখক :
মোহাম্মদ শিহাব উদ্দিন
প্রকাশক ও সম্পাদক, দৈনিক জনজাগরণ।
সাধারণ সম্পাদক, মিরপুর প্রেসক্লাব, ঢাকা।