
অনলাইন ডেস্ক :
জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষক সংস্থা আইএইএ—এর প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের হামলায় বেশ কয়েকটি পরমাণু স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ইরান সম্ভবত কয়েক মাসের মধ্যেই ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শুরু করতে পারবে।
গতকাল শনিবার মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস নিউজ এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি জানিয়েছেন, এসব হামলায় পরমাণু স্থাপনাগুলোর ‘গুরুতর’ ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতির বিস্তারিত জানা যায়নি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, এসব হামলায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচি ‘কয়েক দশক’ পিছিয়ে গেছে।
কিন্তু আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) মহাপরিচালক গ্রোসি বলেন, ‘সবকিছু ধ্বংস হয়নি। কিছু এখনো অক্ষত রয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘কয়েক মাস বা তারও কম সময়ের মধ্যে ইরান কয়েকটি সেন্ট্রিফিউজ পুনরায় চালু করে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করতে পারবে।’
আরেকটি বড় প্রশ্ন হলো, হামলার আগে ইরান তাদের আনুমানিক ৪০৮ দশমিক ৬ কেজি (প্রায় ৯০০ পাউন্ড) উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত সরিয়ে ফেলতে পেরেছে কি না। এই ইউরেনিয়াম ৬০ শতাংশ মাত্রায় সমৃদ্ধ। যা বেসামরিক ব্যবহারে প্রয়োজনীয় মাত্রার চেয়ে বেশি, তবে এটি এখনো অস্ত্র তৈরির মানের চেয়ে নিচে। তবে এই পদার্থ আরও পরিশোধনের মাধ্যমে অন্তত নয়টির বেশি পরমাণু বোমা তৈরির মতো যথেষ্ট হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সিবিএস-কে গ্রোসি আরও বলেন, ‘আমরা জানি না এই ইউরেনিয়াম কোথায় আছে।’ তিনি বলেন, ‘হতে পারে হামলায় কিছু ধ্বংস হয়েছে। আবার কিছু হয়তো সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এটা পরিষ্কার হওয়া দরকার।’
এদিকে, ইরানের আইনপ্রণেতারা আইএইএর সঙ্গে সহযোগিতা স্থগিতের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। একই সঙ্গে তেহরান ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলো, বিশেষ করে প্রধান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ফোরদো পরিদর্শনের গ্রোসির অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। গ্রোসি বলেন, ‘আমাদের জানতে হবে সেখানে এখন কী অবস্থা, কী আছে, কোথায় আছে এবং কী ঘটেছে।’
অন্যদিকে, ফক্স নিউজের ‘সানডে মর্নিং ফিউচারস’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, তিনি মনে করেন না ইরান এই ইউরেনিয়ামের মজুত সরিয়ে ফেলতে পেরেছে। তিনি বলেন, ‘এটা সহজ কাজ নয়। তা ছাড়া আমরা খুব বেশি সময়ও দিইনি। তারা কিছুই সরানোর সুযোগ পায়নি।’
এদিকে, শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আইএইএর ‘গুরুত্বপূর্ণ যাচাই ও নজরদারি’ কর্মকাণ্ডের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি গ্রোসি ও তাঁর সংস্থার ‘অঙ্গীকার ও পেশাদারিত্বের’ প্রশংসা করেন।