
ধামইরহাট প্রতিনিধি :
নওগাঁর ধামইরহাট থানায় রক্ষিত ট্রাঙ্কের তালা খুলে এইচএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বের করে ফেলার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে পৃথকভাবে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
জানা গেছে, আসন্ন এইচএসসি পরীক্ষার জন্য গত মঙ্গলবার একটি ট্রাঙ্কে করে প্রশ্নপত্র থানায় আসে। নিয়ম অনুযায়ী সেটি থানার একটি হাজতখানায় সংরক্ষিত ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা পরীক্ষা কমিটির সদস্যরা ট্রাঙ্ক পরিদর্শনে গেলে সেটির তালা খোলা অবস্থায় দেখতে পান। তখনই প্রশ্নপত্র বের করে ছড়িয়ে ফেলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
ঘটনার পর পুলিশ সুপার মো. সাফিউল সারোয়ার জানান, সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ওই রাতে একটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া তিন আসামিকে থানায় রাখা হয়। রুম সংকটের কারণে তাদের একজনকে প্রশ্নপত্র সংরক্ষিত হাজতখানায় রাখা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, সেই আসামিই সিলগালা ভেঙে তালার চাবি ব্যবহার করে ট্রাঙ্ক খুলে প্রশ্নপত্র বের করেন এবং তা ছিঁড়ে ছড়িয়ে রাখেন।
তবে পুলিশ সুপার আশ্বস্ত করেন, প্রশ্নপত্র বাইরে ছড়িয়ে পড়েনি। তিনি বলেন, “সিসিটিভি ফুটেজে নিশ্চিত হওয়া গেছে, প্রশ্নপত্র থানার বাইরে যায়নি। তবুও বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।” অভিযুক্ত আসামির বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করা হয়েছে এবং তাকে জিজ্ঞাসাবাদ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ ঘটনায় ধামইরহাট থানার একজন উপপরিদর্শক (এসআই) ও একজন কনস্টেবলকে দায়িত্বে অবহেলার জন্য তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
একইসঙ্গে পুলিশ বিভাগ থেকে গঠিত তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) সাদিয়া আফরিনকে প্রধান করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও আরেকটি তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উভয় কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের কোনো আশঙ্কা রয়েছে কিনা—তা নিয়েও সচেতনমহলে আলোচনা চলছে। তবে প্রশাসন থেকে বারবার আশ্বস্ত করা হচ্ছে যে, প্রশ্নপত্র বাইরে ছড়ায়নি এবং পরীক্ষার স্বাভাবিকতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।