
মোঃ রাজিউর রহমান-ভোলা :
পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে ভোলা জেলায় জমে উঠেছে কোরবানির পশু প্রস্তুতির ধুম। জেলার বিভিন্ন খামারে গরু পালন ও মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন খামারিরা। তবে পর্যাপ্ত গরু প্রস্তুত হলেও, বাজার পরিস্থিতি নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা—বিশেষত ভারতীয় গরুর আগমন নিয়ে রয়েছে বড় ধরনের শঙ্কা।
জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ভোলায় কোরবানির জন্য প্রস্তুত প্রায় ৭২ হাজার গরু, যেখানে জেলার অভ্যন্তরীণ চাহিদা ৬০ হাজার। ফলে প্রায় ১২ হাজার গরু উদ্বত্ত থাকবে। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে বাকি গরুগুলো দেশের অন্যান্য জেলায় সরবরাহের পরিকল্পনা করছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
ভোলা সদর, দৌলতখান, লালমোহন, চরফ্যাশনসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় খামারিরা বছরের পর বছর ধরে গরু পালন করে আসছেন। কেউ ব্যাংক ঋণ নিয়ে, কেউবা ধারদেনায় খামার গড়ে তুলেছেন। তবে এবারও একটি বিষয় ঘিরে তাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উৎকণ্ঠা—অবৈধভাবে ভারতীয় গরুর প্রবেশ।
ভোলা সদরের এক খামারি বলেন, “আমি ২০টি গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছি। আশা করছি ভালো দাম পাবো। কিন্তু যদি ভারতীয় গরু বাজারে ঢুকে পড়ে, তাহলে আমাদের গরু বিক্রি করা কঠিন হয়ে যাবে—আর হলেও অনেক কম দামে।”
খামারিরা বলছেন, প্রতিবছর সীমান্ত দিয়ে কিছুসংখ্যক ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশ করে, যা স্থানীয় বাজারে প্রভাব ফেলে। এতে দেশীয় খামারিরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হন, তেমনি পশু বিক্রি নিয়ে পড়েন বিপাকে। তাদের দাবি—সীমান্তে নজরদারি আরও জোরদার করা হোক এবং অবৈধ গরু প্রবেশ রোধে প্রশাসন সক্রিয় ভূমিকা পালন করুক।
এ বিষয়ে ভোলা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা জানান, “জেলায় গরুর কোনো ঘাটতি নেই। উদ্বৃত্ত গরু দেশের অন্যান্য জেলায় সরবরাহের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় গরু প্রবেশ ঠেকাতে আমরা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করছি।”
সব মিলিয়ে, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে ভোলার খামারিদের মধ্যে যেমন আশা ও প্রস্তুতির চিত্র স্পষ্ট, তেমনি দাম পাওয়া ও বাজারের স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগও প্রবল। সরকারি নজরদারি ও সঠিক বাজার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা গেলে খামারিরা ন্যায্য দামে গরু বিক্রি করতে পারবেন এবং পরিশ্রমের ফল ঘরে তুলতে পারবেন—এটাই এখন তাদের প্রধান প্রত্যাশা।