
আকতারুজ্জামান-তানোর,রাজশাহী :
রাজশাহীর তানোরে গলাই দড়ি দিয়ে আত্নহত্যা করেছেন ২ সন্তানের জননী এক গৃহবধূ। এঘটনায় তার স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই গৃহবধূর নাম তুলসী রানী (৩৫)। তিনি বাগমারা উপজেলার বাসু পাড়া ইউপির বিরকয়া গ্রামের অনীল চন্দ্র প্রামানিকের কন্যা। বৃহস্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে তার স্বামীর বাড়ি তানোর পৌর এলাকার তালন্দ গ্রামে। তাদের মেয়ে ১০ম শ্রেনীতে ও ছেলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ছেন।
এঘটনায় গৃহবধুর পিতা বাদি হয়ে মৃতের স্বামী ও ২ ননদসহ ৩ জনকে আসামী করে আত্নহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে তানোর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেছেন। মামলার বিবরণ, পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, প্রায় ১৮ বছর আগে তানোর পৌর এলাকার তালন্দ গ্রামের রাধার পুত্র প্রদীর (৪৫)’র সাথে ওই গৃহবধূর বিয়ে হয়।
গত প্রায় ৪ বছর দরে তাদের সংসারের বিভিন্ন বিষয়ে দ্বন্দ লেগেই থাকতো। গৃহবধূর ২ ননদ লক্ষী ও ববি বিয়ে না করে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করছে এই নিয়ে তাদের সংসারে অশান্তি লেগেই থাকতো। গত ২ দিন আগে ননদ রাজশাহী থেকে বাড়ি আসলে শুরু হয় অশান্তি। বৃহস্পতিবার দুপুরে ও তাদের তাদের মধ্যে কথা কাটাকটির এক পর্যায়ে স্বামী তার স্ত্রীকে ধাক্কা দেয়। পরে অভিমান করে ওই গৃহবধূ ঘরে একা ঘুমাতে যায়। তার পুত্র ও কন্যা এবং স্বামী ঘরে ঘুমাতে চাইলে গৃহবধূ একাই ঘরে ঘুমাবেন বলে তাদেরকে জানান।
সকালে অনেক ডাকা ডাকি করলে ঘরের দরজা খুলে না ওই গৃহবধূ। পরে ঘরের দরজা ভেঙ্গে তার ঝুলন্ত লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে তানোর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে লাশ উদ্ধার করে থানায় নেন। এবিষয়ে নিহতের ১০ম শ্রেনীতে পড়ুয়া কন্যা বলেন, আমার পিসি (ফুফুরা) বিয়ে না করে উচ্চ শিক্ষা গ্রহন করা নিয়ে বাবার সাথে মা প্রায় ঝগড়া করতো। গত ২দিন আগে আমার পিসি (ফুফুরা) রাজশাহী থেকে বাড়ি আমার পর থেকেই বাবার সাথে মা খারাপ আচরন শুরু করেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাবার সাথে মা খারাপ আচরন করলে বাবা মাকে ধাক্কা দেয় এবং মাকে বাবা মারতে তেড়ে গেলে আমি ও পিসিরা দুইজনকেই সরিয়ে নেয়। এনিয়ে মা রাগ করে ছিলো। রাতে মায়ের সাথে ঘুমানোর জন্য ঘরে যেতে চেয়েছি কিন্তু মা একা থাকার কথা বলে কাউকেই ঘরে ঢুকতে দেয়নি। এব্যাপারে নিহতের পিতা ও মাতা বলেন, আমার মেয়েকে পিটিয়ে হত্যা করে গলাই দড়ি দেয়ার নাটক করছে জামাই ও নাতি নাতনিসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা।
তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি আফজাল হোসেন বলেন, এঘটনায় থানায় একটি আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। স্বামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যা নাকি আত্মহত্যা ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলেই বুঝা যাবে বলেও জানান তিনি।