
আবু সালেক ভূইয়া :
মে দিবস এখন আর মেহনতী শ্রমিকদের হাতে নেই, দালাল ও ট্রেড ইউনিয়ন ধংসকারীদের হাতে তুলে দিয়েছে সরকার-গাজীপুরে শ্রমিক সমাবেশে বক্তব্য দান কালে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয় কেন্দ্র গাজীপুর জেলা কমিটির উন্নতম সদস্য, কালিয়াকৈর আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি শ্রমিক নেতা মোঃ জিল্লুর রহমান শিপলু কোনিয়া বড়বাড়ি মির্জা ইব্রাহিম মেমোরিয়াল হাইস্কুল মাঠে ১৩৯ তম মহান মে দিবস পালন উপলক্ষে গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয় কেন্দ্র গাজীপুর জেলা কমিটির আয়োজনে এক বিশাল শ্রমিক সমাবেশে ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দান তিনি একথা বলেন। তিনি আরো বলেন কর্মস্থলে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং সকল বন্ধ কারখানার বকেয়া পাওনা পরিশোধ করতে হবে। সকল কারখানায় অবাদ ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার বাস্তবায়ন করতে হবে। জেনারেল ডিউটির নামে ফাও খাটানো বন্ধ করতে হবে এবং সর্ব নিম্ম বেতন ২৫হাজার টাকা নির্ধারন করতে হবে। আজকের এই মহান মে দিবস হটাৎ করে আসে নাই এবং কোন মালিক শ্রেণির লোকদের হাতে তৈরি কোন দিবস না। ১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তরাষ্টের শিকাগো শহরে একদল শ্রমিক দৈনিক ৮ ঘন্টা কাজ করার জন্য আন্দোলন শুরুর করেন। সেদিন তাদের দাবি কার্যকর করার জন্য সময় বেধে দেন ১৯৮৬ সালের ১লা মে। কিন্তু কারখানার মালিকগন এ দাবি মেনে নেয় নাই। ৪ঠা মে ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে সন্ধা বেলা হালকা বৃষ্টির মাঝে শিকাগো শহরে ‘হে মার্কেটের ম্যাসাকার’ বাণিজ্যিক এলকায় শমিকগণ মিছিলের উদ্দেশ্যে জড়ো হন। তাদেরকে ঘিরে থাকা পুলিশের প্রতি এক অজ্ঞাতনামার বোমা নিক্ষেপকরলে একজন পুলিশ মারাযান। পুলিশ হত্যা মামলায় ৮জন শ্রমিককে অভিযুক্ত করা হয়। এক প্রহসনমূলক বিচারের পর১৮৮৭ খ্রিষ্টাব্দের ১১ নভেম্বর উন্মুক্ত স্থানে ৬জন শ্রমিককে ফাঁসি কার্যকর করা হয়। এবং লুইসিং নামে একজন একদিন পূর্বে কারাগারে আত্মহত্যা করে। অন্য এক শ্রমিকের ১৫ বছর কারাদন্ড হয়। ফাঁসির মঞ্চে আরোহনের পূর্বে স্পীজ বলেছিলেন ‘আজ আমাদের এই নিস্তদ্ধতা তোমাদের আওয়াজ অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী হবে। ২৬ শে জুন ১৮৯৩ ইলিনয়ের গর্ভনর অভিযুক্ত আটজনকেই নিরাপদ বলে ঘোষনা দেন এবং রায়টের হুকুম প্রদানকারী পুলিশের কমান্ডারকে দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত করা হয়। আর অজ্ঞাত সেই বোমা বিস্ফোরনকারীর পরিচয় কখোনই প্রকাশ পায়নি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত শ্রমিকদের ‘দৈনিক ৮ঘন্টা ক্জ করা অফিসিয়াল স্বীকৃতি পায় এবং ১লা মে বা মে দিবস প্রতিষ্ঠা পায় শ্রমিকদের দাবি আদায়ের দিন হিসেবে। সেই দিন থেকে আজও সারা পৃথিবী পালিত এই ১লা মে বা মে দিবস। কিন্তু বর্তমানে বাংলাদেশের শ্রমিকদের হাতে আর এই ১লা মে বা মে দিবস আর নেই। এই ১লা মে বা মে দিবস এখন চলে গেছে শ্রম আইন অমান্য কারীদের হাতে। যুগে যুগে শ্রমিকরা রক্তদিয়ে অর্জন করেছে যে উচ্চ কন্ঠের বজ্রসূর-‘দুনিয়ার মজদুর এক হও’ লড়াই করো। পুঁজিবাদদের রুখে দাড়াও। সেই বজ্রকন্ঠস্বর পরিবর্তন করে দেশের শ্রমিকদের কন্ঠস্বরে যুক্ত করা হয়েছে মালিক-শ্রমিক ভাই ভাই, আমাদের কোন দন্দ নেই। সরকারের এই স্লোগান থেকে ষ্পষ্টভাবে শ্রমিকবৃন্দ বুঝতে পেরেছেন সরকার কোন মৌলাবাদ এবং পুঁজিবাদের কাছে বিক্রিত হয়েছে। বক্তব্য দান কালে শ্রমিক নেতা মোঃ জিল্লুর রহমান আরো বলেন যে, শ্রমিকদের আমার আহবান আপনারা কখোনই এই অন্যায়কে আশ্রয় দেবেন না। উক্ত শ্রমিক সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিতি বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ যুব উনিয়ন কেন্দীয় কমিটির সদস্য এ্যাডভোকেট আল আমিন হোসেন, সাইফুল ইসলাম নাবিদ, ইকরামুল হক জিহাদ, এসময় উপস্থিত ছিলেন গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র এর কেন্দ্রিয় কমিটির সাধারন সম্পাদক বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা মোঃ সাদেল ইসলাম শামিম, আকলিমা আক্তার ডলি, মোঃ আনোয়র হোসেন, মোঃ বাবলু হাসান,ইকবাল আহম্মেদ, মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, মোঃ শাহাব উদ্দীন, মোঃ বাববর,মঞ্জুরল ইসলাম, ইব্রাহিম ফকির, কলি আক্তার, আসলাম হোসেন,ময়না আক্তার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, গাজীপুর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আজিজুল ইসলাম, সভাপতিত্ব করেন গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র গাজীপুর জেলা কমিটির সভাপতি ও কেন্দ্রিয় কমিটির সহ সভাপতি এ্যাডভোকেট মোঃ জয়িাউল কবির খোকন।