বিশ্বজুড়ে সাম্প্রতিককালের যুদ্ধগুলোতে ৬০ কোটির বেশি নারী ও মেয়েশিশু ক্ষয়ক্ষতির শিকার বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। গত এক দশকে এই সংখ্যা ৫০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। সংস্থাটির শীর্ষ কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, বিশ্বব্যাপী লিঙ্গ-সমতা ও নারী অধিকার নিয়ে বাদানুবাদে এই নারীরা বিস্মৃত হয়ে গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের একটি বার্তাসংস্থা এ খবর জানিয়েছে।
সদ্য প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গত কয়েক দশকে নারীদের বৈশ্বিক অগ্রগতি ক্রমবর্ধমান সশস্ত্র সংঘাতে অনেকটাই বিলীন হয়ে যাচ্ছে।
২০০০ সালের ৩১ অক্টোবর গৃহীত নিরাপত্তা পরিষদের একটি প্রস্তাব মূল্যায়ন করছিলেন গুতেরেস। ওই প্রস্তাবের অন্যতম লক্ষ্য ছিল শান্তি আলোচনায় নারীদের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা। যদিও লিঙ্গ-সমতা অর্জনের মতো এই উদ্দেশ্যও অধরাই রয়ে গেছে।
গুতেরেস বলেছেন, শান্তি অর্জনে নারীর নেতৃত্ব এবং অন্তর্ভুক্তির সম্ভাবনা হ্রাস করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। শান্তি ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত বিষয়ে ক্ষমতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের অধিকার এখনো পুরুষদের কাছেই রয়ে গেছে বলে অভিমত দিয়েছেন তিনি।
তিনি সতর্ক করে বলেছেন, নিপীড়নমূলক পুরুষতান্ত্রিক কাঠামো ও লিঙ্গবৈষম্য যতদিন অর্ধেক সমাজকে পিছিয়ে রাখবে, ততদিন শান্তি ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাবে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক বছর আগের তুলনায় ২০২৩ সালে সশস্ত্র সংঘাতে দ্বিগুণ নারী প্রাণ হারিয়েছেন। সংঘাত সম্পর্কিত যৌন সহিংসতা ঘটনা ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জাতিসংঘ নিশ্চিত করতে পেরেছে।
জাতিসংঘের সংস্থা ‘ইউএন উইমেন’-এর প্রধান সিমা বাহোউস বলেছেন, যুদ্ধের দ্বারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আক্রান্ত প্রায় ৬১ কোটি নারী ও মেয়ে শিশু শঙ্কিত এই নিয়ে যে, ইতোমধ্যে বিশ্ব তাদের ভুলে গেছে।
তিনি বলেছেন, তাদের ভীতি দূর করতে আশার বাণী প্রচার করা বিশ্বনেতাদের দায়িত্ব। কিন্তু বাস্তবতা অনেক ভয়াবহ। সংঘাতপ্রবণ দেশগুলোতে প্রতি দুইজন নারী ও মেয়েশিশুর মধ্যে একজন খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। আর বিশ্বব্যাপী মাতৃমৃত্যুর ৬১ শতাংশই সংঘাতপ্রবণ ৩৫টি দেশে সীমাবদ্ধ। এই দেশগুলোতে নীতিপ্রণয়ন ও রাজনীতিতে নারীদের অংশগ্রহণ প্রায় মুখ থুবড়ে পড়েছে।
সিমা বাহোউস আরও বলেছেন, গত এক দশকে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নারীদের অংশগ্রহণ খুব একটা বৃদ্ধি পায়নি। এক জরিপে দেখা গেছে, জাতিসংঘের নেতৃত্ব বা সমর্থনে নারীদের অংশগ্রহণ ২০ শতাংশের নিচে। আর সামগ্রিকভাবে এই হার গড়ে ১০ শতাংশের কম।
।। প্রকাশক ও সম্পাদক : মো: শিহাব উদ্দিন ।। নির্বাহী সম্পাদক : জি.এস. জয় ।।
দৈনিক জন জাগরণ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত@২০২৫You cannot copy content of this page