স্টাফ রিপোর্টার :
যারা দরপত্রে অংশ নেয় না, তারা অনৈতিকভাবে কাজ পেয়ে যায়, এতে সৎ ও প্রকৃত ঠিকাদারদের কাজের সুযোগ কমে যায়।
বড় ঠিকাদাররা কমিশন বা প্রভাব খাটিয়ে কাজ নিয়ে নেয়, যার ফলে ছোট ও যোগ্য ঠিকাদাররা ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং ব্যবসা থেকে ছিটকে পড়ে।
তারা টেন্ডার প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আশা করেন যাতে সবাই সমান সুযোগ পায়।
তারা চান যে কাজের মান যেন ঠিক থাকে, যা দুর্নীতির মাধ্যমে সম্ভব নয়।
তারা প্রত্যাশা করেন যে কোনো যোগ্য ঠিকাদার যাতে কাজ পায়, কোনো অনিয়ম বা বিশেষ প্রভাব যেন কাজ না করে।
প্রকৃত ঠিকাদাররা টেন্ডারে কারচুপি বা 'টেন্ডার বাজি' মেনে নেবেন না কারণ এটি দুর্নীতি, অর্থনৈতিক ক্ষতি, এবং প্রকল্পের নিম্নমানের কারণ হয়। তারা মনে করেন, টেন্ডার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু হওয়া উচিত, যেখানে যোগ্য ও সৎ ঠিকাদাররা তাদের মেধা ও সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ পাবে, এতে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা হবে।
এই সমস্যাগুলোর কারণে প্রকৃত ঠিকাদাররা "টেন্ডার বাজি"র বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন এবং একটি সুশৃঙ্খল ও ন্যায্য টেন্ডার প্রক্রিয়া প্রত্যাশা করছেন।
২০২৫ এর নতুন টেন্ডার প্রক্রিয়া জনসাধারণের জন্য হুমকি স্বরূপ, সরকারি রাজস্ব রাড়লেও দিন শেষে ক্ষতির মুখে পড়বে জনসাধারণ এমনটাই দাবী ঠিকাদারদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কিছু ঠিকাদারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০০৮ এর দরপত্রে সর্বোচ্চ ১০% কম থাকলে ২০২৫ এ তা ঠেকেছে ২০% হারে। ফলে ম্যাট্রেস এর আওতাধীন বড় বড় প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদররা সহজেই কাজ বাগিয়ে নিলেও পরে তাদের লাভ-লোকসান এর হিসেব কষতে গিয়ে তার হিসেব গিয়ে বর্তায় জনসাধারণের উপর। তথা বছরের পর বছর ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে।
তাদের মতে, ২০% কমে এর আগেও বেশ কিছু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র নিয়ে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে সম্পূর্ণ কাজ শেষ না করেই বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য মোহাম্মদপুর বেঁড়িবাধ সিটি গার্ডেন বিল্ডিং। যেখানে দেখা যায় গত ১০ বছর আগে যে কাজটি শেষ হওয়ার কথা কিন্তু সেটি এখনো বসবাসের উপযোগী হয়ে উঠেনি।
এবিষয়ে সিটি কর্পোরেশনের বেশ কিছু কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, অভ্যন্তরীণ ক্রয়ের ক্ষেত্রে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি এর আগেও এরকম দরপত্র বাস্তবায়ন কালে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ২০% কমে দরপত্র দেয়া হয়। কিন্তু সেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমাদের বসবাসের জন্য নির্মাণাধীন বিল্ডিং এর কাজ অসমাপ্ত রেখেই পালিয়ে যায়। যা এখনো বসবাসের উপযোগী হয়ে উঠেনি। এতে আমরা আমাদের সুবিধা থেকে বঞ্চিত এক যুগেরও বেশি।
সাম্প্রতিক বাজার মূল্য ও অন্যান্য গ্রহণযোগ্য দরদাতাদের প্রদত্ত মূল্য সাপেক্ষে অনেক কম বাজেট হওয়ায় দরপত্র দাতাগন তাদের প্রদত্ত মূল্যে চুক্তি সম্পাদন করিতে ব্যর্থ হওয়া আশঙ্কা বেশি। এছাড়াও নিম্ন মূল্যের দরপত্র কে প্রাথমিকভাবে ক্রয়কারীর জন্য আর্থিকভাবে বেশ সুবিধাজনক মনে হলেও কাজ শেষ হতে হতে মালামালের ঊর্ধ্বমুখী বাজার মূল্য ও সব ধরনের ব্যয় বৃদ্ধি হওয়ায় কাজ সম্পাদন করতে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করবে কিংবা কাজ শেষ না করেই অপ্রত্যাশিতভাবে চুক্তি ভংগের কারনও হতে পারে।
সরকার জনসাধারণের সুবিধার কথা মাথায় রেখে প্রায়শই যদি পরিপত্র জারির মাধ্যমে সরকারি ক্রয়ের উদ্দেশ্য সাধনের লক্ষ্যে সংশোধন, পরিবর্তন, সংযোজন বা বিয়োজন করতে প্রজ্ঞাপন জারি করে। সেক্ষেত্রে অবশ্যই দেশের অর্থনীতি ও বাজার মূল্যের প্রতি গুরুত্বারোপ করা উচিৎ। অন্যথায় ম্যাট্রেস তথা বেশি পয়েন্ট ভিত্তিক কিছু অসাধু দরপত্র ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান নিজের আখের গোছাতে কিছু অসাধু কর্মকর্তার সাথে আতাত করে তুলনমূলক সবার চেয়ে কম বাজেটে দরপত্র প্রদান করে তা পেয়ে নিম্নমানের দ্রব্যসামগ্রী ব্যবহার করে কাজ সম্পাদন করে থাকে। এতে করে উন্নয়নের নামে জনসাধারণের সুবিধার থেকে অসুবিধার কারনই হয় বেশি। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ধ্বস, অপরিপক্ক সেতু ভেঙে পরা, ১০/২০ বছর মেয়াদের রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা বছর না ঘুরতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।টেন্ডার বাজি বা দুর্নীতির কারণে প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি পায় এবং যোগ্য ঠিকাদাররা কাজ পায় না, ফলে জাতীয় সম্পদের অপচয় হয়।
দুর্নীতিবাজ ঠিকাদাররা কমিশন দিয়ে কাজ পাওয়ার পর নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে এবং কাজের মান ধরে রাখে না।
।। প্রকাশক ও সম্পাদক : মো: শিহাব উদ্দিন ।। নির্বাহী সম্পাদক : জি.এস. জয় ।।
দৈনিক জন জাগরণ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত@২০২৫You cannot copy content of this page