মুরছালিন হোসেন-বিরল (দিনাজপুর) :
রোপা আমন নির্বিঘ্নে উৎপাদনের লক্ষ্যে ক্ষতিকর বালাই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও দমনে দিনাজপুরের বিরল উপজেলার সকল ব্লকে একযোগে আলোর ফাঁদ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় উপজেলার ঢেলপীর ব্লকে এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইন্দ্রজীত সাহা এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর কৃষি বিভাগের অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) মোস্তাফিজুর রহমান। উপসহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা শাহজাহান আলী এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিরল উপজেলা কৃষি অফিসার রুম্মান আকতার, কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আফরোজা আকতার আঁখি, বরকত উল্লাহ। অনুষ্ঠনে সার্বিক সহযোগিতা করেন উপসহকারী কৃষি অফিসার এ এস এম হানিফ, ওবাইদুর রহমান, চন্দন অধিকারী, আফরিনা আকতার, রুথমিলা হাবিব ঋতু। আলোর ফাঁদ কার্যক্রম শেষে উপস্থিত কৃষকদের প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইন্দ্রজীত সাহা বলেন, সমন্বিত চেষ্টায় আমরা বিরল উপজেলাকে পরিপূর্ণ কৃষি সমৃদ্ধ উপজেলা হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমরা ইতিমধ্যে এখানকার লিচু ও আম রপ্তানী করেছি। সবজি বাজারজাত করে আসছি।
অতিরিক্ত উপপরিচালক (উদ্যান) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ মঙ্গলবার জেলার সকল ব্লকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে একযোগে আলোক ফাঁদ স্থাপন করে মাঠ পর্যায়ে পোকামাকড়ের উপস্থিতি যাচাই করা হয়। বিরল উপজেলায় এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে একযোগে ৩৭টি ব্লকে আলোক ফাঁদ স্থাপন করা হয়েছে। কৃষি কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এ কার্যক্রম সম্পন্ন হচ্ছে এবং মাঠের কৃষকেরাও সক্রিয়ভাবে এতে অংশগ্রহণ করেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসার রুম্মান আকতার জানান, বিরল উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে মোট ২৮ হাজার ৯২৭ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান রোপণ করা হয়েছে। মৌসুমের শুরু থেকেই কৃষকরা ধান চাষে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে বালাই দমন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। এর ফলে রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার কমে আসছে এবং টেকসই কৃষি ব্যবস্থার দিকে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার বরকত উল্লাহ জানান, কৃষকেরা মাঠ পর্যায়ে পার্চিং বা ডাল পোতা, জৈব বালাইনাশকের ব্যবহার, এবং ফেরোমন ফাঁদ (ওয়াইএসবি লিউর) প্রয়োগ করে ধানের ক্ষতিকর পোকার আক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করছেন। এসব প্রযুক্তি উপকারী পোকার সংরক্ষণে সহায়তা করছে এবং রাসায়নকি কীটনাশক ব্যবহার ছাড়াই বালাই ব্যবস্থাপনা কার্যকর হচ্ছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আফরোজা আকতার আঁখি বলেন, আধুনিক বালাই দমন প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার কৃষকের উৎপাদন খরচ কমিয়ে দেবে, পরিবেশ রক্ষা করবে এবং ধানের ফলন বাড়াতে সহায়ক হবে। একইসঙ্গে, কৃষকরা ধানের ন্যায্যমূল্য পেলে আমন মৌসুমে বিরল উপজেলা জুড়ে সমৃদ্ধি আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, পরিবেশবান্ধব এসব পদ্ধতি ব্যবহার করে ধানের ক্ষেত অনেকটা নিরাপদ রাখা সম্ভব হচ্ছে। তারা বিশ্বাস করেন, সময়মতো পরিচর্যা ও সঠিক প্রযুক্তির প্রয়োগ অব্যাহত থাকলে চলতি মৌসুমে আমনের ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
।। প্রকাশক ও সম্পাদক : মো: শিহাব উদ্দিন ।। নির্বাহী সম্পাদক : জি.এস. জয় ।।
দৈনিক জন জাগরণ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত@২০২৫You cannot copy content of this page