শাহাদৎ হোসেন ইমরান :
রাজধানীর তুরাগ থানা এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক কে এম মামুন। নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তার পরিবার, সহযোদ্ধারা এবং সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। মামুনের সন্ধানে তৎপরতা শুরু করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, তবে এখন পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। আজ (সোমবার) দুপুরে তুরাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন মামুনের স্ত্রী খাদিজা বেগম। জিডি নম্বর–১২৩১, ২২/০৯/২০২৫। খাদিজা বেগম জানান, “রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে একটি অপরিচিত মোবাইল নাম্বার থেকে কে এম মামুনের মোবাইলে ফোন আসে। ফোনে তাকে অপহরণের হুমকি দেওয়া হয়। এই ঘটনা নিয়ে আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। এরপর সোমবার ভোরে আনুমানিক সকাল ৬টার দিকে বাসা থেকে বের হন মামুন। এরপর থেকে তার সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। পরিবারের সবাই চরম উৎকণ্ঠায় রয়েছে বলেও জানান খাদিজা বেগম।
সংগঠনটির মুখ্য সংগঠক সরদার রিয়াদ বলেন, “কে এম মামুন একজন সংগ্রামী কর্মী। তিনি ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিলেন। বিভিন্ন সময়ে তাকে হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। তার নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি নিছক দুর্ঘটনা নয়—এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত অপহরণ বলে সবার সন্দেহ। আমরা এর দ্রুত তদন্ত ও মামুনকে অক্ষত অবস্থায় ফেরত চাই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক নুর মোহাম্মদ বলেন, “আমরা দুঃখের সঙ্গে বলছি যে, জিডি করার পরও এখন পর্যন্ত পুলিশ মামুনের অবস্থান শনাক্ত করতে পারেনি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এমন ধীরগতি আমাদের হতাশ করছে। আমরা মনে করি, মামুনের নিরাপত্তা এবং তাকে উদ্ধারে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।”
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কে এম মামুনের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে তার সন্ধানে বিভিন্ন ছাত্র ও মানবাধিকার সংগঠন প্রতিবাদ কর্মসূচির প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
পরিবার ও সহকর্মীরা বলছেন, যদি মামুনকে অপহরণ করা হয়ে থাকে, তাহলে এটি মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর সরাসরি আঘাত। তারা দ্রুত তাকে খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছেন এবং এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে তুরাগ থানার অফিসার ইনচার্জ মনিরুল ইসলামের বলেন“ঘটনার জিডি আমরা গ্রহণ করেছি। তদন্ত চলছে। আশেপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সহায়তাও নেওয়া হচ্ছে। দ্রুতই আমরা কোনো কূলকিনারা করতে পারব বলে আশা করছি।
উল্লেখ্য যে, কে এম মামুন দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় সংগঠক হিসেবে যুক্ত ছিলেন। অল্প দিনেই রাজনৈতিক ও সামাজিক নানা ইস্যুতে তার সাহসী ভূমিকার কারণে তিনি সংগঠনের ভেতরে ও বাইরে পরিচিত মুখ হয়ে ওঠেন।
।। প্রকাশক ও সম্পাদক : মো: শিহাব উদ্দিন ।। নির্বাহী সম্পাদক : জি.এস. জয় ।।
দৈনিক জন জাগরণ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত@২০২৫You cannot copy content of this page