সৌভিক পোদ্দার-ঝিনাইদহ :
অ্যাভোকাডো, পৃথিবীতে পুষ্টিকর ফলগুলোর মধ্যে একটি। অ্যাভোকাডো মাখনফল বা কুমির নাশপাতি নামেও পরিচিত। এটি মেক্সিকো এবং মধ্য আমেরিকার স্থানীয় একটি উদ্ভিদ। ফলটি একটি বড় মাংসল বেরি যার মধ্যে একটি বড় বীজ থাকে। অ্যাভোকাডো স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ একটি সুপারফুড বলছেন পুষ্টিবিদরা।
বিদেশী পুষ্টিকর এ ফলটি ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভাধীন কাশিপুর গ্রামে অবস্থিত আবিদ নার্সারির গাছে গাছে ধরতে দেখা গেছে। নার্সারির ৯ প্রজাতির ১৩টি গাছের প্রায় সবগুলোতে ফল ধরছে। সাধারণত পাঁচ-ছয় বছরের একটি গাছে ফল ধরে। ফল পাকে আগস্ট মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে।
নার্সারির স্বতাধিকারী হাফিজুর রহমান মাসুদ জানান, ২০২০-২১ সালে বিভিন্ন জায়গা থেকে চারা সংগ্রহ করে রোপন করি। গত বছর কয়েকটি গাছে ফল এসেছিল। এবছর আশানুরুপ ফল এসেছে। এসব ফল ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি দরে ঢাকার অভিজাত ডিপার্টমেন্টাল স্টোর বা কারওয়ান বাজারে বিক্রি করা যাবে। এর আগেও আমি দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এ ফল সংগ্রহ করে বিক্রি করেছি। দেশের বাজারে এর ব্যপক চাহিদা রয়েছে। দেখতে বড় আকারের লম্বাটে কাঁচা পেয়ারার মতো। গাঢ় সবুজ রঙের। পাকলে রঙের সামান্য পরিবর্তন হয়। কাঁচা ফল সবজি হিসেবে খাওয়া যায়। এগুলোর চারা কলম তৈরি করা হচ্ছে। এছাড়া দেশের বাইরে থেকে বীজ এনে সম্প্রসারণে কাজ করছি বলে যুক্ত করেন।
হাফিজুর রহমান আরো জানান, অ্যাভোকাডো দিয়ে তৈরি ভর্তা বা চাটনি খুবই জনপ্রিয়! ফলটি সিদ্ধ করে লবণ, ধনে পাতার কুঁচি, পেঁয়াজ কুঁচি, লেবুর রস মিশিয়ে নিলেই সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ভর্তা হয়ে যায়। এছাড়া এ ফলটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের খাবার তৈরি করা যায়।
যতটুকু জানা যায়, মেক্সিকো থেকে শুরু করে মধ্য আমেরিকার প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা পর্যন্ত ফলটি দেশীয় ফল হিসেবে চাষ হয়ে থাকে। ফলটি চর্বি সমৃদ্ধ খাবার হলেও তা আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয়। শরীরের জন্য ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমায়। পটাশিয়ামের মাত্রাধিক্য থাকায় ফলটি হৃৎপিন্ড সবল ও সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে। ত্বকের পরিচর্যার জন্য এ ফলের পেস্ট এর প্রলেপ দেয়ার রেওয়াজ আছে। অ্যাভোকাডোর খনিজদ্রব্য ও ভিটামিনসমূহ ত্বকের ভেতর গিয়ে ত্বককে সতেজ ও মসৃন রাখে। সালাদে মাখনফল যোগ করলে পরিপাকনালীতে সালাদ থেকে নির্গত ক্যারোটিন জাতীয় এন্টিওক্সিডেন্টের শোষণ দ্বিগুন থেকে চারগুন বৃদ্ধি পায়। এই ক্যারোটিন প্রদাহবিরোধী হিসেবে কাজ করে। এটি শিশুদের জন্য একটি উৎকৃষ্ট মানের খাবার। যকৃৎকে সুরক্ষা দেয়। জন্ডিস প্রতিরোধে সহায়তা করে।
।। প্রকাশক ও সম্পাদক : মো: শিহাব উদ্দিন ।। নির্বাহী সম্পাদক : জি.এস. জয় ।।
দৈনিক জন জাগরণ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত@২০২৫You cannot copy content of this page