সাইমন :
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাস বহাল রেখেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের আপিল বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল খারিজ করে দেন। ফলে হাইকোর্টের দেওয়া খালাসের রায়ই চূড়ান্তভাবে বহাল থাকে।
এর মধ্য দিয়ে প্রায় দুই দশক ধরে আলোচিত ও রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল এ মামলার বিচারিক অধ্যায়ের অবসান ঘটল।
হাইকোর্টের খালাস রায় ও পর্যবেক্ষণ
গত বছরের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট মামলার সব আসামিকে খালাস দেন। রায়ে বলা হয়, মামলার তদন্ত ছিল ত্রুটিপূর্ণ ও পক্ষপাতদুষ্ট, ফলে আসামিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়নি। আদালত আরও মন্তব্য করেন—এত ভয়াবহ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত না হওয়া দেশের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক।
রাষ্ট্রপক্ষ এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে দীর্ঘ শুনানির পর আজ আপিল বিভাগ সেটি খারিজ করে দেন।
ভয়াল সেই আগস্ট
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। আহত হন শতাধিক নেতা-কর্মী।
হামলার পরদিন মতিঝিল থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের হয়। শুরুতে তদন্তে গাফিলতি ও ‘জজ মিয়া নাটক’ তৈরির অভিযোগ উঠলেও ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নতুন করে তদন্ত শুরু হয়। পরবর্তীতে ৫২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গঠন করা হয়।
বিচারিক প্রক্রিয়া
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ রায় ঘোষণা করে। ওই রায়ে বাবরসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন এবং আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পরে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন এবং ডেথ রেফারেন্স শুনানি শুরু হয়। দীর্ঘ শুনানির পর ২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট সব আসামিকে খালাস দেন। আজ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সেই খালাস বহাল থাকে।
দুই দশকের আলোচনার ইতি
দীর্ঘ ২০ বছর ধরে চলা এ মামলাকে ঘিরে দেশের রাজনীতিতে তীব্র বিতর্ক ও উত্তেজনা বিরাজ করেছিল। আজকের রায়ের মাধ্যমে সেই আলোচিত মামলার বিচারিক অধ্যায় চূড়ান্তভাবে সমাপ্ত হলো।
।। প্রকাশক ও সম্পাদক : মো: শিহাব উদ্দিন ।। নির্বাহী সম্পাদক : জি.এস. জয় ।।
দৈনিক জন জাগরণ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত@২০২৫You cannot copy content of this page