মোঃ জাহিদ হোসেন জিমু-গাইবান্ধা :
গাইবান্ধার সাঘাটা থানায় সদরের বাসিন্দা সিজু মিয়ার রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম উদ্বেগ, শঙ্কা ও অসংখ্য প্রশ্ন।
গাইবান্ধা সদরের দুলাল হোসেনের পুত্র সিজু মিয়া কী কারণে সাঘাটা থানায় গিয়েছিলেন, কার সাথে এবং কী উদ্দেশ্যে গিয়েছিলেন—তা এখনো স্পষ্ট নয়। ফলে জনমনে তৈরি হয়েছে নানা গুঞ্জন ও সন্দেহ।
স্থানীয়দের কেউ বলছেন, মোবাইল ফোন কেনা নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল সিজুর। কেউ বলছেন, মোবাইল ফোন চুরির ঘটনায় তিনি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে থানায় এসেছিলেন, কিন্তু তা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়ে এমন কাণ্ড ঘটিয়েছেন। আবার কারও মতে, চাকরির দালালি বা আর্থিক লেনদেনকে কেন্দ্র করে কোনো সমস্যার জেরেই এমন ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উঠে এসেছে—"ফুলছড়ি-সাঘাটায় আমার কিছু হলে দায়ী সিজু"—এমন একটি পোস্ট বা বক্তব্য কার? কেন লেখা হয়েছিল? এতে কোনো পূর্বশত্রুতার ইঙ্গিত রয়েছে কি না, তা তদন্তের দাবি রাখে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, সিজু থানায় ছুরি হাতে প্রবেশ করেন এবং একপর্যায়ে পুলিশের রাইফেল ছিনিয়ে নিয়ে ডিউটি অফিসারের কক্ষে ঢুকে পড়েন। সেখানে তিনি কাকে আক্রমণ করতে গিয়েছিলেন, সে প্রশ্নও এখন আলোচনার কেন্দ্রে।
এতটা সাহস দেখানো ব্যক্তি কেন হঠাৎ দৌড়ে পুকুরে গিয়ে লাফ দিলেন? পুকুরের কিনারায় অল্প পানিতে তিনি কীভাবে “আত্মগোপন” করলেন—তাও রহস্যে ঘেরা।
ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিস বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় না হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রায় দশ ঘণ্টা পর ডুবুরি দল এসে পুকুর থেকে সিজুর মরদেহ উদ্ধার করে।
সিজুর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সিজু একজন সুস্থ ও স্বাভাবিক মানুষ ছিলেন। তিনি মানসিক রোগী নন।
অন্যদিকে, থানা কর্তৃপক্ষ জানায়, সিজু মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মোবাইল ফোন হারানো সংক্রান্ত জিডি করতেই তিনি থানায় এসেছিলেন। এএসপি সাহেব জানান, তথ্য দিতে না পারায় এক কনস্টেবল তাকে অটোরিকশায় তুলে দিয়ে আসেন। পরে সিজু আবার ফিরে এসে ঘটনাটি ঘটান।
সিজুর মা জানান, চুরি হওয়া একটি মোবাইল ফোন তিনি কিনেছিলেন। সেটিকে কেন্দ্র করেই তার ছেলের সমস্যার সূত্রপাত। তিনি জুনাইদ টেলিকম নামক এক দোকানের লোককে দায়ী করেন এবং ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেন।
বর্তমানে সিজুর মৃত্যু ঘিরে সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক সমাজ, ও এলাকাবাসী সবাই একটি প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে—এই মৃত্যু কি দুর্ঘটনা, আত্মহত্যা, নাকি অন্য কোনো গভীর ষড়যন্ত্রের ফল?
সংশ্লিষ্ট সকলের দাবি, ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
।। প্রকাশক ও সম্পাদক : মো: শিহাব উদ্দিন ।। নির্বাহী সম্পাদক : জি.এস. জয় ।।
দৈনিক জন জাগরণ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত@২০২৫You cannot copy content of this page