মোঃ জাহিদ হোসেন জিমু-গাইবান্ধা :
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালি ইউনিয়নের উত্তর ফলিয়া এলাকার অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও হঠাৎ আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
তিনি কি কোনো আলাউদ্দিনের চেরাগ পেয়েছেন? নাকি রাষ্ট্রবিরোধী কোন অন্যায় কর্মের সাথে জড়িয়ে এমন অসংগতিপূর্ণ সম্পদের পাহাড় গড়েছে কিনা, এ নিয়ে জনমনে নানান মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে ১৯৯৯ সালে দেলোয়ার হোসেন অবসর গ্রহণের সময় প্রায় ২৭ লক্ষাধিক টাকা হাতে পেয়েছিলেন। সেই টাকার পুরোটাই তিনি সদর উপজেলার ফলিয়ার পাথার নামক এলাকায় আবাদী জমি ক্রয় করেন। এর কিছুদিন পর তিনি তার বড় মেয়ের বিয়ের সময় কিছু জমি আবারও বিক্রি করে দেন ও বাড়ি করার সময়েও কিছু জমি বিক্রি করেন।
তারপর থেকে কোন মতভাবে চলে আসছিল দেলোয়ার হোসেনের পরিবার। কিন্তু ২০১৯ সালের দিকে হঠাৎ করেই আবারো আলোচনায় উঠে আসেন এই দেলোয়ার হোসেন। গায়ে দামি স্যুট বুট, হাতে দামি ব্রান্ডের ঘড়ি সহ অস্বাভাবিক পরিবর্তন চলে আসে তার চলাফেরায়।
কদিন আগেও চোখে পড়ার মতো যার কিছুই ছিল না খোঁজ নিয়ে জানা যায় ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের ৩ তারিখে রংপুর সিটি কর্পোরেশনে ০৬.৩১ শতাংশ জমি ক্রয় করেছেন এই দেলোয়ার হোসেন। যার বর্তমান বাজার মূল্য এক কোটি টাকা। ওই জমির দলিল নম্বর ১৯৯১৩।
পর্যায়ক্রমে ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর গাইবান্ধা পৌর এলাকার চকমামরোজপুর মৌজায় প্রায় অর্ধকোটি টাকা দিয়ে ৪ শতাংশ জমি ক্রয় করেন, যার দলিল নম্বর ৯৭৫৫। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসের ১০ তারিখে আবারো রংপুর লালকুঠি এলাকায় ০.৫২ শতাংশ জমি সহ ফ্ল্যাট ক্রয় করেন যার বর্তমান মূল্য প্রায় ৯০ লক্ষ্য টাকা, দলিল নম্বর -২০২৪৬।
একজন অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক এত অল্প সময়ে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ ক্রয় করেন কিভাবে?
খোঁজ নিয়ে আরো জানা যায়, এই দেলোয়ার হোসেনের বাড়ি ছিল রায়দাশবাড়িতে। যা ব্রহ্মপুত্র নদের গর্ভে বিলীন হয়েছে অনেক আগেই। পরে গাইবান্ধা সদর উপজেলার উত্তর ফলিয়ায় কিছু জমি ক্রয় করে বসবাস শুরু করেন। প্রথম দিকে সেখানে টিনের ঘর থাকলেও বর্তমানে সেখানে করেছেন রাজকীয় বাড়ি।
এছাড়া দেলোয়ার হোসেন তার শ্বশুর বাড়িতে স্ত্রী নাজমিন নাহার মিনির নামে ও ফলিয়ার বিলে কমপক্ষে সাত থেকে আট বিঘা আবাদি জমি ক্রয় করেন।
একজন অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক কিভাবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ ক্রয় করেন, তা নিয়ে জনমনে রয়েছে নানান প্রশ্ন।
সুধী মহলের দাবি, এই দেলোয়ার হোসেনের আয় বহির্ভূত সম্পদের উৎস বের করে আইনের আওতায় নেয়া দরকার তাঁকে।
দেলোয়ার হোসেনকে আইনের আওতায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই তার আয় বহির্ভূত সম্পদের প্রকৃত হিসাব সহ এর সাথে জড়িত কে বা কাহারা রয়েছে তা বেরিয়ে আসবে।
এসব বিষয়ে সাবেক সেনা সদস্য দেলোয়ার হোসেনের সাথে কথা হলে তিনি ২৫ লাখ টাকা একটি জমির কাগজ শুধু দেখাতে পেরেছেন। এছাড়া অন্য কোন কাগজ দেখাতে পারেন নি এবং কোটি টাকার সম্পদ কিভাবে ক্রয় করলেন এর সঠিক কোনো জবাব দিতে পারেনি।
।। প্রকাশক ও সম্পাদক : মো: শিহাব উদ্দিন ।। নির্বাহী সম্পাদক : জি.এস. জয় ।।
দৈনিক জন জাগরণ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত@২০২৫You cannot copy content of this page