আকতারুজ্জামান-তানোর,রাজশাহী :
রাজশাহীর তানোরে আশা ও ব্র্যাক এনজিও’র ঋণের কিস্তি দিতে বিলম্ব হওয়ায়, এনজিও কর্মীর বলপ্রয়োগ ও হুমকি-ধামকিতে ঋণ গ্রহীতা দিনমজুর এক গ্রাহকের মৃত্যু হয়েছে। গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কলমা ইউপির রামনাথপুর গ্রামে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। নিহতের নাম এমাজ উদ্দিন তিনি রামনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা।এ ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ ও অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়রা জানান,গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে দিনমজুর এমাজ উদ্দীনের বাড়িতে অবস্থান করে এনজিও কর্মীরা। কিস্তির টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দেয়া শুরু করেন।এক পর্যায়ে তারা তাকে পুলিশে দেবার ও ঘরের টিনসহ আসবাবপত্র নিয়ে যাবার হুমকি দেন।, এদিন প্রথমে আশা এনজিও বিল্লি হাট ব্র্যাঞ্চের ম্যানেজার ইব্রাহিম চাপ দেয়া শুরু করেন।
পরবর্তীতে ব্র্যাক এনজিও’র দরগাডাঙা শাখার মাঠ কর্মী সঞ্জয় কুমার কিস্তি পরিশোধের জন্য বিভিন্ন রকমের ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়া শুরু করে। এমতাবস্থায় নিরুপায় হয়ে দিনমজুর এমাজ উদ্দীন বুধবার ধান বিক্রি করে কিস্তির টাকা দিবেন বলে জানান। কিন্তু এনজিও’র ম্যানেজার ও মাঠকর্মী কোন ভাবেই মানতে চায়নি। তারা ওই রাতেই কিস্তির টাকার জন্য বলপ্রয়োগসহ নানা ধরনের হুমকি ধামকি দেয়া শুরু করেন। এক পর্যায়ে তাদের চাপ সইতে না পেরে তাদের সামনেই স্ট্রোক করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এমাজ উদ্দীন। স্ট্রোক করার পরও চাপ দেয় টাকার জন্য। কিন্তু এমাজের মুখ থেকে কথা বের হয় না।
তিনি মারা গেছেন বিষয়টি বুঝতে পেরে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দেবার কথা বলে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় এনজিওর কর্মকর্তা-কর্মচারী। নিহতের এক স্বজন বলেন,তারা থানায় মামলা করতে চেয়েছিল,কিন্ত্তু এনজিও’র জেলা কর্মকর্তারা ভয়ভীতি দেখানোয় তারা মামলা করার সাহস পায়নি।তবে তারা এঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে বিচার দাবি করেন। এবিষয়ে আশা এনজিওর বিল্লি হাট শাখার মানেজার ইব্রাহিমের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমরা চাপ তেমনভাবে দিইনি। চাপ ও ভয়ভীতি দিয়েছিল ব্র্যাক এনজিওর লোকজন। সে মারা যাওয়ার পর তার পরিবারের সঙ্গে বসে সব মিমাংসা করা হয়েছে।তবে কলমা এলাকার আনোয়ার নামের একজন ফোন দিয়ে জানান, আশা এনজিওর প্রচন্ড চাপ ছিল না, প্রচন্ড চাপ ছিল ব্র্যাক এনজিওর।
এবিষয়ে ব্র্যাক এনজিও দরগাডাঙ্গা হাট শাখার ম্যানেজার রায়হান উদ্দিনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনিও অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তার বীমা করা ছিলো মৃত্যুর পর দাফন কাফনের জন্য ২০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। টাকা দেয়ার সময় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গরা উপস্থিত ছিলেন এবং নিয়ম অনুযায়ী তার যাবতীয় ঋণ মাফ করা হয়েছে।তিনি বলেন, এমাজ উদ্দীন অত্যান্ত নম্রভদ্র মানুষ ছিলেন। সে আমাদের ভালো গ্রাহক ছিল। আমরা কখনো তাকে চাপ দিইনি।
এবিষয়ে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফজাল হোসেন জানান, ঘটনা অজানা। তবে মৃতের পরিবার থেকে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
।। প্রকাশক ও সম্পাদক : মো: শিহাব উদ্দিন ।। নির্বাহী সম্পাদক : জি.এস. জয় ।।
দৈনিক জন জাগরণ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত@২০২৫You cannot copy content of this page