মোঃ সুমন হোসেন-ক্রাইম রিপোর্টার :

নিজের সহোদর ছোট ভাইকে মৃত দেখিয়ে মসজিদের মোতাওয়াল্লী হয়েছেন আপন বড়ভাই।এনিয়ে ছোট ভাইসহ স্থানীয় মুসুল্লিরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।এমনই ঘটেছে মুন্সীগঞ্জের পদ্মাসেতু উত্তর থানার উত্তর মেদেনীমন্ডল এলাকায়।পদ্মাসেতু টোলপ্লাজার সামনে একমাত্র এই মসজিদটি থাকায় গাড়ি থামিয়ে ওয়াক্তের নামাজসহ প্রতি জুম্মায় দক্ষিনবঙ্গ শত মত মুসুল্লিরা এই মসজিদে নামাজ আদায় করে থাকেন।এই মসজিদ নিয়ে এমন প্রতারণার বিষয়টি নিয়ে মুসুল্লিদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

ওয়াকফ স্টেট ইসি ১৮৪৫৩ নং সুত্রে জানা যায়,ঢাকা-মাওয়া সার্ভিস লেনে পাশে উত্তর মেদেনী মন্ডল মিনার মসজিদটি স্থাপিত হয় ১৯৩৪ খ্রিস্টাব্দে।পুর্ব পুরুষ মন্তাজ উদ্দিন হাওলাদারগং পরকালের নৈকট্যলাভের প্রত্যাশায় উত্তর মেদেনীমন্ডল মিনার মসজিদ বরাবরে একখানা ওয়াকফনামা প্রদান করেন।ওয়াকফ দলিলের শর্তানুসারে জালাল উদ্দিন ঐ এষ্টেটের মোতাওয়াল্লী হবেন এবং তিনি জীবিতকাল মোতাওয়াল্লীর দায়িত্ব পালন করবেন।তার অভাবে ভ্রাতাগনদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ট এবং স্বীয় পুত্র পৌত্রাদিক্রমে মোতাওয়াল্লী নিযুক্ত হবেন।সে মতে বিগত ১৯৯৭ সালের আগ পর্যন্ত মৃত মন্তাজ উদ্দিন হাওলাদারের নাতি সাইদুর রহমান লাট্টু ওরফে সৈয়দুর রহমান মোতাওয়াল্লী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ১৯৯৭ সালে সাইদুর রহমান লাট্টু ওরফে সৈয়দুর রহমান জীবিত থাকাকালে তাকে মৃত সাজিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে আপন বড় ভাই মশিউর রহমান বাদল নিজেকে বংশের একমাত্র উত্তরাধিকার দেখিয়ে ওয়াকফ স্টেটে প্রত্যায়ন জমা দিয়ে উত্তর মেদেনীমন্ডল মিনার মসজিদের মোতাওয়াল্লী বনে যান।বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে এনিয়ে ছোট ভাই সাইদুর রহমান লাট্টুসহ স্থানীয় মুসুল্লীরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।ছোট ভাই সাইদুর রহমান লাট্টু জীবিত আছেন মর্মে গত ২৬ ফ্রেব্রুয়ারী ২০২৫ সালে মেদেনীমন্ডল স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান প্রত্যায়ন পত্র প্রদান করেন।

স্থানীয়রা আরো জানান, মোতাওয়াল্লী মশিউর রহমান বাদল এলাকায় না থেকে স্ব-পরিবারে নারায়ণগঞ্জে বসবাস করেন।তিনি মসজিদের দানসহ অন্যান্য ফান্ডে চাঁদা উঠিয়ে মসজিদ ফান্ডে জমা প্রদান করেন না এবং মসজিদ কমিটির কারো সাথে হিসাব নিকাশের ব্যপারে কোন আলোচনাই করেন না তিনি। কমিটির লোকজন মসজিদের উন্নয়ন করতে চাইলে তিনি বাধা সৃষ্টি করেন এবং নিজেকে শারীরিকভাবে অসুস্থ্য ও অক্ষম দাবি করে মসজিদের কোন কাজে অংশ গ্রহন থেকে বিরত থাকেন।মসজিদের ব্যাপারে তিনি কারো সাথে কোন রকম সম্বনয় না করে নিজের মত করে মসজিদ কমিটি পরিচালনা করে আসছেন।এব্যাপারে মন্তাজ উদ্দিন হাওলাদারের বংশধর আল আমিন হাওলাদার ওয়াকফ প্রশাসক বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

এব্যাপারে ছোট ভাই সাইদুর রহমান লাট্টু জানান,আমি লোকজন নিয়ে ওয়াকফ স্টেট কার্যালয়ে গিয়ে জানতে পারি যে,আমার বড় ভাই মশিউর রহমান বাদল ওয়াকফ স্টেট কার্যালয়ে আমাকে মৃত দেখিয়ে মসজিদের মোতাওয়াল্লী হয়েছেন।অথচ আমি এখনও জীবিত।আমি আমার বড় ভাই মশিউর রহমান বাদলের এমন প্রতারনা ও মিথ্যাচারের বিরুদ্ধে ওয়াকফ স্টেটের কাছে মৌখিকভাবে বিচার চেয়েছি।

প্রতারণা আশ্রয় নিয়ে মসজিদের মোতাওয়াল্লী হওয়ার ব্যাপারে উত্তর মেদেনী মন্ডল মিনার মসজিদের মোতাওয়াল্লী মশিউর রহমান বাদলের কাছে জানতে তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেনি।