কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কুমারখালী শাখার সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আলী সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
শনিবার ১ মার্চ বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কুষ্টিয়া শিল্পকলা একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তিনি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে প্রতিপক্ষের লোকজন বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে। আমার বিরুদ্ধে তারা মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও ষড়যন্ত্রমূলক অভিযোগ তুলেছেন। আমাকে হেয়প্রতিপন্ন করতে ও ফাঁসাতে বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। আমি কোনো অনিয়ম দুর্নীতি ও অপকর্মে লিপ্ত না। আমি জীবনবাজী রেখে আন্দোলন করেছি। এখন আওয়ামী লীগের দোসররা আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। আমি কোনো অপকর্মের সঙ্গে জড়িত না। স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে কুমারখালী থেকে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছি আমি।
সম্প্রতি দেশের চলমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হওয়ার কারণে সরকার ডেবিল হান্ট নামে একটি অভিযান পরিচালনা করছে তারই ধারাবাহিকতায় অপারেশন ডেভিল হান্টের প্রথম দিনে কুমারখালী পৌর ছাত্রলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মেজবাউল হক হৃদয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু এই গ্রেপ্তারকে ঘিরে পতিত স্বৈরাচার সরকারের দোসররা জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্পিডকে নষ্ট করার জন্য আমার বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। যা আমার ভাবমূর্তি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চেতনাকে ভুলণ্ঠিত করা হয়েছে।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত আমি কখনো কোন অনৈতিক অন্যায় কাজের সাথে কখনো জড়িত ছিলাম না বা এখনো নেই। কিন্তু একটি কুচক্রী মহল জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্পিডকে নষ্ট করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। কোটা আন্দোলন থেকে শুরু করে ৯ দফা ও এক দফা আন্দোলনে আমার নেতৃত্ব কুমারখালীবাসী দেখেছে। আন্দোলনের সময় আমার দোকান ভাঙচুর করা হয়েছে, মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। এছাড়া আমাকে পুলিশ ডিবি দিয়ে বিভিন্ন হ্যারেজমেন্ট করেছে। তারপরেও দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করতে প্রস্তুত ছিলাম। আসলে আমরা বাংলাদেশের মানুষ খুব সহজে সময় ভুলে যাই। কার কি অবদান ছিল, আমরা মিথ্যাকে প্রাধান্য বেশি দিয়ে সত্যকে মাটির নিচে দাফন করে দিয়েছে। কুমারখালী ও কুষ্টিয়ার অপরাজনীতির শিকার হয়েছি আমি। বিগত দিন থেকে কুমারখালী উপজেলা থেকে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ মুক্ত করতে যেয়ে বিভিন্ন হামলার শিকার হয়েছি। আমি কুমারখালীর জন্য যত যাই করি না কেন, কুমারখালীর অপরাজনীতির কাছে তা কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। কারণ জীবনবাজি রেখে আন্দোলন করেছি, আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছি, তবুও কেউ মনে রাখেনি, মূল্যায়ন করেনি। কুমারখালী উপজেলা জামায়াতে আমির আফজাল হোসেন, কুমারখালী যুবদলের আহ্বায়ক মিলন প্রমাণিক ও কুমারখালীর সাবেক যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আতিকুল হাসান সবুজ ভাই বিগত দিনে কুমারখালীর স্বৈরাচার মুক্ত আন্দোলনে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করেছে এবং আমাদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠনের জন্য বিভিন্ন সৎ উপদেশ এবং সহযোগিতা প্রদান করেছিল। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে আমার বিন্দুমাত্র কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু কুমারখালীর অপরাজনীতির ধারাবাহিকতায় পতিত সরকারের ছাত্রলীগ যুবলীগের গুণ্ডাবাহিনীর লোকজনকে পুনর্বাসনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যারা এগুলো করছে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে, প্রতিবাদ করতে গিয়ে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি।
আজকে আমার বিরুদ্ধে এক ছাত্রলীগের নেতার মা মিথ্যা অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তার ছেলে কুমারখালী পৌর ছাত্রলীগের উপ-দপ্তার সম্পাদক মেজবাউল হক হৃদয়। তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। অথচ তারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। এ ঘটনায় আমি কোনোভাবেই জড়িত না। তার মিথ্যা অভিযোগ ও অপপ্রচার আমাকে সাংঘাতিকভাবে মানসিক ও সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছে। হৃদয় আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালে বিভিন্ন অপকর্ম করছে। এ কারণে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সে এখন জেলে আছে। এই গ্রেপ্তারের সাথে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। সাংবাদিক ভাইদের অনুরোধ জানাচ্ছি- আপনারা আমার বিষয়ে খোঁজখবর নেন, আমি যদি কোন ভুলভ্রান্তি বা অপরাধ করে থাকি। সেটা তদন্ত করে দেখুন, আমি যদি কোন অপরাধ করে থাকি সেটাও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তদন্ত করে দেখুন। তারা যেই শাস্তি দিবে আমি মাথা পেতে নিবো।
।। প্রকাশক ও সম্পাদক : মো: শিহাব উদ্দিন ।। নির্বাহী সম্পাদক : জি.এস. জয় ।।
দৈনিক জন জাগরণ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত@২০২৫You cannot copy content of this page