অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফ (৮৫) মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ শুক্রবার বেলা তিনটার পর রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
ল্যাবএইড হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, হৃদ্রোগে হাসান আরিফের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে নেওয়ার পরই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
গতকাল বিকালে খাওয়ার সময় হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাঁকে ল্যাবএইড হাসপাতালে নিয়ে যান। পরীক্ষানিরীক্ষা শেষে বিকাল ৩টা ৩৫ মিনিটে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। এ এফ হাসান আরিফের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিকালে দুবাই থেকে ঢাকায় অবতরণের পরপরই হাসান আরিফের মৃত্যুর খবর জানতে পারেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রয়াত উপদেষ্টাকে শেষশ্রদ্ধা জানাতে বিমানবন্দর থেকে ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে ছুটে যান ড. ইউনূস। এছাড়া হাসপাতালে ছুটে যান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অনেক উপদেষ্টা ও রাজনৈতিক ব্যক্তি, আইনজীবীসহ অনেকে। প্রধান উপদেষ্টা ছাড়াও উপদেষ্টাগণ, রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন ব্যক্তি ও আইনজীবীরা গভীর শোক জানিয়েছেন। উপদেষ্টার স্বজনরা বলেছেন, হাসান আরিফ ভাত খাচ্ছিলেন, ওই অবস্থায় পড়ে যান। হাসপাতালে নেওয়া হলে পরীক্ষানিরীক্ষার পর ৩টা ৩৫ মিনিটে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। আসলে তাঁকে মৃত অবস্থায়ই পাওয়া যায়। তাঁর কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছিল।
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান জানান, আজ বাদ এশা রাজধানীর ধানমন্ডির সাত নম্বর বায়তুল আমান মসজিদে এ এফ হাসান আরিফের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এ ছাড়া আগামীকাল বেলা ১১টায় হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে জানাজা হবে।
গত ৮ আগস্ট গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে প্রথমে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার দায়িত্ব পেয়েছিলেন হাসান আরিফ। পরে তাঁকে ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
হাসান আরিফ সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী। তিনি ১৯৭০ সাল থেকে আইন পেশার সঙ্গে জড়িত আছেন। তিনি ২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০০৮ থেকে ২০০৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আইন উপদেষ্টা ছিলেন।
হাসান আরিফ তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন ১৯৬৭ সালে ভারতের পশ্চিম বাংলার কলকাতা হাইকোর্ট থেকে। এরপর ১৯৭০ সালে তিনি ঢাকায় চলে আসেন এবং হাইকোর্টে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন।
হাসান আরিফ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এর আগে। এর মধ্যে আছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ, মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ, সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং গ্রামীণফোন বাংলাদেশ। তিনি বর্তমানে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির কমপ্লেক্সের উপদেষ্টা।
উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। এক শোক বার্তায় গভীর শোক প্রকাশ করে তিনি শোক-সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। হাসান আরিফের মৃত্যুতে বাংলাদেশ আইনের জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্রকে হারালো বলে উল্লেখ করেন তিনি।
।। প্রকাশক ও সম্পাদক : মো: শিহাব উদ্দিন ।। নির্বাহী সম্পাদক : জি.এস. জয় ।।
দৈনিক জন জাগরণ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত@২০২৫You cannot copy content of this page