ভ্যানচালক মো. ইসমাঈল হোসেন। তিনি রাজধানীর ডেমরা এলাকায় একটি কম্পানির পণ্য ডেলিভারির কাজ করেন। কখনো হাতিরঝিল থানাধীন এলাকায় বসবাস না করলেও তাকেই ওই এলাকার মো. বাবু হত্যা মামলার বাদী হিসেবে নোটিশ দিয়েছে পুলিশ। মামলা না করেও এখন হয়রানির শিকার হচ্ছেন ইসমাঈল।
প্রতিনিয়ত তার বাড়িতে গিয়ে খোঁজ করছে পুলিশ। এই হয়রানি থেকে রেহাই পেতে তিনি আদালতে এসে হলফনামা দিয়ে উল্লেখ করেছেন, এই মামলা তিনি করেননি। এ ছাড়া মামলার অভিযোগে দেওয়া মোবাইল ফোন নম্বরে যোগাযোগ করলেও তিনি মামলা করেননি বলে দাবি করেন।
এ বিষয়ে ভ্যানচালক ইসমাঈল বলেন, ‘আমি ডেমরায় থাকি।
কোনো মামলা করিনি। কিন্তু আমার গ্রামের বাড়িতে পুলিশ নোটিশ দিয়েছে। পুলিশ আমাকে বাড্ডায় দেখা করতে বলে। আমার বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে।
অথচ আমি এই মামলার কিছুই জানি না।’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার মো. ইসমাঈল হোসেন নিজে মামলা করেননি দাবি করে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে হলফনামা জমা দিয়েছেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, কে বা কারা মিথ্যা তথ্য দিয়ে তার নাম ব্যবহার করে মামলাটি করেছে। পরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরফাতুল রাকিবের আদালত মামলার বাদীসহ সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে আগামী ৩ ডিসেম্বর সশরীরে উপস্থিত থাকতে নির্দেশ দেন।
মামলার নথিতে থাকা তথ্য মতে, গত ২৩ অক্টোবর ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আরফাতুল রাকিবের আদালতে অভিযোগকারী ইসমাঈল হোসেন আদালতে উপস্থিত হয়ে শেখ হাসিনাসহ ৭৪ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন।
অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় মামলাটিতে সাক্ষ্য-প্রমাণ সংগ্রহের জন্য তদন্তের অবকাশ রয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। পরে আদালত হাতিরঝিল থানা পুলিশকে মামলার অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ১৯ জুলাই বিকেল ৩টার দিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন ভুক্তভোগী মো. বাবু। তার পিতার নাম মো. হোসেন। হাতিরঝিল থানার পশ্চিম রামপুরার উলনে তার বাসা। ঘটনার দিন মামলার আসামি স্বপনের ছোড়া বুলেটে তিনি গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার তদন্তভার নিয়ে হাতিরঝিল থানার উপপরিদর্শক রাসেল ইসলাম ভ্যানচালক ইসমাঈল হোসেনের স্থায়ী ঠিকানা চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে নোটিশ পাঠান। সেখানে বলা হয়েছে, ‘আপনি মামলার বাদী। মামলাটি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আপনাকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ সাক্ষীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা একান্ত প্রয়োজন।’ নোটিশ পাওয়ার তিন দিনের মধ্যে সাক্ষীসহ তদন্তকারী অফিসারের কাছে হাজির হওয়ার জন্য ইসমাঈলকে অনুরোধ করা হয়।
ভ্যানচালকের আইনজীবী বেলাল হোসেন বলেন, ‘আমরা যেহেতু মামলা করিনি, তাই মামলা প্রত্যাহার চাচ্ছি না। এখন পুলিশের হয়রানি থেকে মুক্তি চাচ্ছি।’
মামলার অভিযোগকারীর পক্ষের আইনজীবী মো. লুত্ফুর রহমান বলেন, ‘যে ছেলেটি মামলা করেছে তাকে খুজে পাচ্ছি না। হয়তো মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করেছে। এখানে ফেক আইডি ব্যবহার করা হয়েছে। এ ধরনের মামলার ক্ষেত্রে আরো সতর্ক হওয়া উচিত।’
।। প্রকাশক ও সম্পাদক : মো: শিহাব উদ্দিন ।। নির্বাহী সম্পাদক : জি.এস. জয় ।।
দৈনিক জন জাগরণ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত@২০২৫You cannot copy content of this page