জমি–সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে জামালপুর সদর উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোনের এক নেতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের মারধর এবং বাড়ি থেকে তাঁদের তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শুক্রবার রাতে উপজেলার কম্পপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্র আন্দোলনের আহত নেতার নাম রেদোয়ান খন্দকার ওরফে মাহিন। তিনি জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কমিটির সংগঠক হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। মারধরে রেদোয়ানের পাশাপাশি তাঁর বাবা হাফিজুর রহমান, মা মুসলিমা বেগমও আহত হন। তাঁরা জামালপুর জেনারেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে আন্দোলনের নেতা রেদোয়ান হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। আজ শনিবার দুপুরে তাঁকে ছুটি দেওয়া হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, পৈতৃক বাড়ি ও কৃষি মিলে ৬৪ শতাংশ জমি নিয়ে ছাত্র আন্দোলনের নেতা রেদোয়ান খন্দকারের পরিবারের সঙ্গে তাঁর চাচাদের বিরোধ চলে আসছিল। চাচারা রেদোয়ানদের জমিগুলো বুঝিয়ে দিচ্ছিলেন না। এই নিয়ে গতকাল শুক্রবার বিকেলে রেদোয়ানের বাবা হাফিজুর রহমানের সঙ্গে দুই চাচা হেলাল উদ্দিন ও হাবিবুর রহমানের সঙ্গে প্রথমে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে দুই চাচা ও তাঁদের সন্তানরা মিলে হাবিবুর রহমানকে মারধর করেন। এই বিষয়ে নিয়ে রাতেই চাচাদের সঙ্গে কথা বলতে যান রেদোয়ান খন্দকার। এ সময় তাঁকেও মারধর করা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে, জামালপুর জেনানেল হাসপাতালে ভর্তি করেন।
রেদোয়ান খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বাবা একজন সহজ-সরল মানুষ। চাচারা সংখ্যায় অনেক বেশি এবং প্রভাবশালী। ফলে তাঁরা দীর্ঘ সময় ধরে আমাদের জমিজমা বুঝিয়ে দেন না। জমি চাইতে গেলেই আমাদের মারধর করা হয়। মারধর করে আমাদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এখন বাড়িতে যেতে দিচ্ছে না। এ ঘটনায় থানায় আমরা অভিযোগ দেব।’
রেদোয়ানের বাবা হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ভাইদের অত্যাচারে আমি ১৫ বছর অন্য জায়গায় বাসা ভাড়া নিয়ে থেকেছি। সম্প্রতি বাড়িতে গিয়েছি। কিন্তু তাঁরা আমার অংশের জমি দিতে চাই না। সব জমি তাঁরা নিজেরা চাষাবাদ করেন। শুধু পৈতৃক সম্পত্তি নয়। আমার ২০ শতাংশ কৃষি জমিও তাঁরা দখল দিচ্ছে না। কিছু বলতে গেলেই আমাদের মারধর করেন।’
এ বিষয়ে যোগযোগ হয় রেদোয়ানের চাচা হেলাল উদ্দিনের সঙ্গে। মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাঁদের (রেদোয়ানদের) কোনো জমি আমাদের মধ্যে নাই। বাড়িতে তাঁদের কোনো ঘরও নাই। আমার মায়ের ঘরে তাঁরা উঠেছেন। উল্টো তাঁরাই আমার জমি চাষাবাদ করছে।’
এ ঘটনার বিষয়ে অবগত আছেন জানিয়ে জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সাল মো. আতিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযোগ দিতে বলেছি। এখনো অভিযোগ দেননি। শুনেছি, অভিযোগ লিখছে। হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যে অভিযোগ দেবেন। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
।। প্রকাশক ও সম্পাদক : মো: শিহাব উদ্দিন ।। নির্বাহী সম্পাদক : জি.এস. জয় ।।
দৈনিক জন জাগরণ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত@২০২৫You cannot copy content of this page