কক্সবাজার শহরে ইউনি রিসোর্ট নামে একটি আবাসিক হোটেল থেকে জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১৯ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। কলাতলী ইউনি রিসোর্টের ৫ম তলার হল রুম থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তিরা জেলার ৯টি উপজেলার ইউপি সদস্যদের নিয়ে গঠিত সংগঠন মেম্বারস অ্যাসোসিয়েশনর আলোচনা সভা চলছিল। এসময় পুলিশ ও অর্ধ-শতাধিক সমন্বয়ক তাদের হল রুম ঘেরাও করে। এরপর পুলিশ ও ‘সমন্বয়ক’ পরিচয়ধারীরা এসে তল্লাশি ও যাচাই-বাছাই শুরু করে।
পুলিশ বলছে, আওয়ামীপন্থি ইউপি সদস্যরা গোপনে বৈঠক করছে— এ তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। ওই বৈঠকে ৭০ জন ইউপি সদস্য ছিল। বাকিদের ছেড়ে দেওয়ার কারণও স্পষ্ট করতে পারেনি পুলিশ। হোটেল ঘেরাও করায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয় হোটেলটির আশেপাশের এলাকায়। হোটেল অবস্থান করা পর্যটকদের ভীত হয়ে হোটেল থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা যায়।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুল আজিম নোমান বলেন, আওয়ামী লীগ সমর্থিত ইউপি সদস্যরা ইউনি রিসোর্টে গোপন বৈঠক করছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান পরিচলনা করা হয়েছে। এখানে অনেক ইউপি সদস্য আছেন। যাদের বিরুদ্ধে মামলা আছে, তাদের আটক করা হবে এবং যাদের বিরুদ্ধে মামলা নেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে পুলিশের অভিযানে অর্ধশতাধিক ‘সমন্বয়ক পরিচয়ধারী’ লোকজন কেন- এমন প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি পুলিশের এই কর্মকর্তা।
আটক হওয়া টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য জহির আহমেদ বলেন, আজ জেলার ইউপি সদস্যের নিয়ে গঠিত সংগঠন মেম্বারস অ্যাসোসিয়েশনর আলোচনা সভা ছিল। আমরা প্রায় ৭০ জনের মতো ইউপি সদস্য উপস্থিত ছিলাম। হঠাৎ অতর্কিতভাবে পুলিশ ও সমন্বয়করা ঢুকে আমাদের অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে আটক করে। আমাদের যদি গোপন বৈঠক থাকতো তাহলে সড়কের পাশে হোটেলে এত বড় অনুষ্ঠান করতাম না। বিনা কারণে আমাদের এভাবে গ্রেফতার করে হয়রানি করা হচ্ছে।
এদিকে, অভিযানের নিউজ সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকদের ভিডিও ফুটেজ নিতে বাঁধা দেন সমন্বয়ক পরিচয়ধারী কিছু লোক। এক পর্যায়ে সাংবাদিকদের ওপর হামলাও করে তারা।
দৈনিক বাংলার জেলা প্রতিনিধি আশরাফ বিন ইউছুফ বলেন, হোটেলে পুলিশের অভিযান চলছে এমন খবরে আমরা নিউজ সংগ্রহ করতে আসি। আমরা ছবি তুলতে গেলে আমাদের বাঁধা দেওয়া হয়। ভিডিও ফুটেজ নিতে গেলে আমাকে ‘দালাল’ বলে গালিগালাজ করে এক যুবক। তিনি নিজেকে ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দেন।
ইউনি রিসোর্টের ৫০৫নং কক্ষের পর্যটক মিরাজ বলেন, আমি আমার পরিবারকে নিয়ে এই হোটেলে উঠেছিলাম। হঠাৎ পুলিশ হোটেল ঘেরাও করে। কিছুক্ষণ পর কিছু প্রায় অর্ধশত মানুষ নিজেদেরকে ছাত্র ও ‘সমন্বয়ক’ পরিচয় দিয়ে হোটেলে ঢুকে পড়ে। আমরা এখানে নিজেদের নিরাপদ মনে না করায় হোটেল ছেড়ে চলে যাচ্ছি।
।। প্রকাশক ও সম্পাদক : মো: শিহাব উদ্দিন ।। নির্বাহী সম্পাদক : জি.এস. জয় ।।
দৈনিক জন জাগরণ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত@২০২৫You cannot copy content of this page